বাংলাদেশের প্রসিদ্ধ মসজিদ

হিন্দুরাও সহযোগিতা করেছিল এ মসজিদ বানাতে

বাংলাদেশের যে স্থাপনাশৈলী এখনও বিমোহিত করে চলেছে অগণিত মানুষকে, তার মধ্যে আছে দেশজুড়ে থাকা অগণিত নয়নাভিরাম মসজিদ। এ নিয়েই বাংলা ট্রিবিউন-এর ধারাবাহিক আয়োজন ‘বাংলাদেশের প্রসিদ্ধ মসজিদ’। আজ থাকছে লক্ষ্মীপুরের তিতা খাঁ মসজিদ।

লক্ষ্মীপুরের সবচেয়ে পুরোনো ও ঐতিহাসিক মসজিদ তিতা খাঁ মসজিদ। বৃহত্তর নোয়াখালীর প্রাচীন মসজিদগুলোর মধ্যে এটি অন্যতম। প্রায় ৪০০ বছর আগে নির্মিত মসজিদটি লক্ষ্মীপুরের সদর উপজেলার উত্তর স্টেশনে অবস্থিত।

শৈল্পিক কারুকায ও গৌরবময় ইতিহাসের কারণে দেশজুড়ে খ্যাতি অর্জন করে মসজিদটি। অনেক পর্যটক আসে এটাকে একনজর দেখতে। ধর্মীয় বিভিন্ন অনুষ্ঠানে (শবে বরাত, শবে কদর) হাজারো মানুষের ভিড় হয় এখানে।

তিতা খাঁ মসজিদের সঠিক ইতিহাস সম্পর্কে স্থানীয় কোনও প্রবীণ বা কর্তব্যরত ইমাম অবগত নন। তবে মসজিদের পূর্ব পাশের উত্তর কর্নারে সিরামিকে খোদাই করা লিপি অনুসারে জানা যায়, আসলাম বক্স রাজ নামে এক ব্যক্তি মসজিদটি নির্মাণ করেন।

মসজিদের ইমাম বলেন, আমাদের পূর্বপুরুষরা এ বিষয়ে সঠিক তথ্য দিতে পারেননি। তবে ধারণা করা হয়, এটি প্রায় ৪০০ বছর আগে বানানো। বৃহত্তর নোয়াখালী তথা লক্ষ্মীপুরের সবচেয়ে প্রাচীন ও ঐতিহাসিক মসজিদ হিসেবে এটি সর্বজনস্বীকৃত ও সমাদৃত।

জনশ্রুতি আছে, হযরত আজিম শাহ (র.) একটি বাগানের মধ্যে মসজিদটি আবিষ্কার করেন। এর এতটাই খ্যাতি ছড়ায় যে অন্য ধর্মের লোকেরাও এ মসজিদে মনের বাসনা পূরণের আশায় দান করতেন। তিতা খাঁ মসজিদের আরেক বিশেষত্ব হলো, এটি হিন্দু-মুসলমান দুই ধর্মাবলম্বীদের সহযোগিতাতেই বানানো হয়।

কয়েক বছর আগে মসজিদটি বাংলাদেশ প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের অর্ন্তভুক্ত হয়। লক্ষ্মীপুর দায়রা বাড়ির পীর বংশ ঐতিহাসিক এই মসজিদটির দেখভালের দায়িত্বে করে আসছেন। শতবর্ষীয় মসজিদটিতে নকশাগত সংস্কার করতে হয়নি। আর গম্বুজ দেখলেই বোঝা যায় মুঘল আমলের নকশা অনুকরণে বানানো এটি।