ইসলামি শরিয়াহ অনুযায়ী শরীরে ট্যাটু বা উল্কি আঁকা যাবে?

বিশ্বব্যাপী শরীরে উল্কি আঁকার যে প্রবণতা শুরু হয়েছে তা মূলত এসেছে বিজাতীয় সংস্কৃতি থেকে।

উল্কি সাধারণত চামড়ায় সুচ বা এ জাতীয় সুচালো কোনও বস্তুর মাধ্যমে ক্ষত সৃষ্টি করে নকশা তৈরি করা হয়, আর বেশিরভাগ ক্ষেত্রে তা স্থায়ী হয় এবং সহজে ওঠানো যায় না।

ইসলামি শরিয়তে দেহের কোথাও এমন উল্কি আঁকার অবকাশ নেই। কেননা, তা মহান আল্লাহর স্বাভাবিক সৃষ্টি সৌন্দর্যের বিকৃতি। জুমহুর তথা অধিকাংশ ফিকাহবিদ ও আইনজ্ঞরা এটিকে হারাম ও গর্হিত কাজ আখ্যায়িত করেছেন।

পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘শয়তান বলল, আমি অবশ্যই আপনার বান্দাদের মধ্য থেকে নির্দিষ্ট কিছু মানুষকে অবলম্বন করবো।…তাদেরকে আল্লাহর সৃষ্ট আকৃতি পরিবর্তন করতে আদেশ দেব। যে কেউ আল্লাহকে ছেড়ে শয়তানকে বন্ধুরূপে গ্রহণ করে, সে প্রকাশ্য ক্ষতিতে পতিত হয়।’ (সুরা নিসা, আয়াত : ১১৮-১১৯)

হাদিস শরিফেও এ ব্যাপারে সতর্ক করা হয়েছে, রাসুল (সা.) বলেন, ‘যেসব নারী সৌন্দর্যের জন্য উল্কি আঁকে এবং যাদের জন্য আঁকে এবং যেসব নারী ভ্রু উৎপাটন করে ও দাঁত ফাঁকা করে, আল্লাহ তাআলা তাদের অভিসম্পাত করেছেন।’ (সহিহ বুখারি, হাদিস: ৫৬০৪)।

অন্য হাদিসে এসেছে, ‘যেসব নারী নকল চুল ব্যবহার করে, যারা অন্য নারীকে নকল চুল এনে দেয় এবং যেসব নারী উল্কি আঁকে ও যাদের জন্য আঁকে, রাসুল (সা.) তাদের অভিশাপ দিয়েছেন।’ (সহিহ মুসলিম, হাদিস: ৫৬৯৩)

রাসুলের সময় নারীদের মধ্যে এ প্রবণতা বেশি থাকায় হাদিসে তাদের কথা স্পষ্টভাবে উল্লেখ করা হয়েছে। কিন্তু নিষেধাজ্ঞা নারী-পুরুষ সবার জন্যই সমানভাবে প্রযোজ্য।

অন্যদিকে বিজাতীদের অনুকরণের ব্যাপারে আল্লাহর রাসুল কঠোর হুঁশিয়ারি দিয়েছেন; তিনি বলেন, ‘যে ব্যক্তি যার সাদৃশ্য অবলম্বন করে, সে তাদেরই দলভুক্ত হয়।’ (সুনানে আবু দাউদ, হাদিস: ৪০৩১)

 

লেখক: শিক্ষক-মারকাযুদ দিরাসাহ আল ইসলামিয়্যাহ ঢাকা।