রাষ্ট্রপতির সঙ্গে আলোচনার গোপনীয়তা ভঙ্গ করেছেন কাদের: বিএনপি

বিএনপি

আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের রাষ্ট্রপতি মো.আবদুল হামিদের সঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলোর আলোচনার গোপনীয়তা ভঙ্গ করেছেন- বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তার ভাষ্য, ‘সার্চ কমিটিতে বিচারপতি কেএম হাসানকে রাখতে রাষ্ট্রপতিকে আমাদের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, এমন অভিযোগ সর্বৈব মিথ্যা। এর কোনও ভিত্তিও নেই।’ বিএনপির মহাসচিবের অভিযোগ,‘ওবায়দুল কাদের রাষ্ট্রপতির সুনাম নষ্ট করতে ও তাকে বিতর্কিত করতেই এ প্রচারণা চালানো হচ্ছে।’’ 
রবিবার সন্ধ্যায় বাংলা ট্রিবিউনকে এক প্রতিক্রিয়ায় ফখরুল এসব কথা বলেন। এর আগে ২১ জানুয়ারি শনিবার রাতে বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া বলেছেন, ‘রাষ্ট্রপতির কাছে আশা করবো, তিনি সবার কথা শুনে একটি সার্চ কমিটি গঠন করবেন। আওয়ামী লীগ অনেক কথা বলেছে। সব কথা প্রকাশিত হয়নি। আমরাও অনেক কথা বলেছি। তিনি (রাষ্ট্রপতি) কোনও দলের নন, তিনি দেশের। তার উচিত সবার কথা শোনা। তিনি সরকারি দলের ইচ্ছা পূরণে নির্বাচন কমিশন গঠন করলে দেশের মানুষ মানবে না।’
রবিবার দুপুরে রাজধানীর গুলিস্তানের মহানগর নাট্যমঞ্চে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের অন্তর্গত ২০ নম্বর ওয়ার্ডের ত্রিবার্ষিক সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের দাবি করেছেন, ‘বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদকে সাবেক প্রধান বিচারপতি কে এম হাসানকে সার্চ কমিটিতে রাখতে নাম প্রস্তাব করেছেন। সেই হাসান সাহেব কি বিএনপির আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক ছিলেন না? তাহলে কোনটা পক্ষ, কোনটা নিরপেক্ষ?’
এর প্রতিক্রিয়ায় মির্জা ফখরুল বলেন, ‘কেএম হাসান কখনোই বিএনপির দায়িত্বে ছিলেন না।’
তিনি জানান, ‘খালেদা জিয়া সার্চ কমিটির নাম প্রস্তাব করেছেন কি না, এটিই তো রাষ্ট্রপতি ছাড়া আরও কেউ বলতে পারবে না। স্বয়ং রাষ্ট্রপতিই বলতে পারবেন। তার ভাষ্য, কাদেরের বক্তব্যের উদ্দেশ্য নিয়ে সন্দেহ থেকে যায়।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার জমির উদ্দিন সরকার বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘ম্যাডাম না দিয়েছেন কি না, সেটি তো আমরা জানি না। নাম দিলেও বলতে পারবো না। তো কাদের কীভাবে জানলেন কেএম হাসানের নাম দেওয়া হয়েছে কি না? এটি সম্পূর্ণভাবে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।’ 
ওবায়দুল কাদেরের বক্তব্যকে শিষ্ঠাচার বহির্ভূত বলে মনে করেন ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু। তিনি বলেন, ‘এটা তো স্বাভাবিক লক্ষ্মণ নয়। রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছে ৩১ টি দল। কেউ-ই এ নিয়ে কোনও কথা বলেনি, উনি নাম জানলেন কীভাবে? এটার ভিন্ন উদ্দেশ্য আছে।’’
গত ১৮ নভেম্বর নির্বাচন কমিশন গঠনে রাষ্ট্রপতিকে উদ্যোগ নিতে আহ্বান জানান খালেদা জিয়া। ১২ ডিসেম্বর থেকে রাজনৈতিক দলগুলোকে বঙ্গভবনে সংলাপের আমন্ত্রণ জানানো হয়। একমাস পর ১৮ ডিসেম্বর আলোচনা হয় বিএনপির সঙ্গে। ওই আলোচনাশেষে এ প্রতিবেদক একাধিক সিনিয়র নেতার কাছে জানতে চাইলে তারা প্রস্তাবিত নাম বলতে পারেননি। বরং স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছিলেন, রাষ্ট্রপতি চাইলে তারা নাম দেবেন। 
/এসটিএস/টিএন/

আরও পড়ুন: কাদেরের কাছে ফখরুলের প্রশ্ন: রাষ্ট্রপতির সঙ্গে আ. লীগের কী গোপন যোগাযোগ আছে?