প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ উপেক্ষা করেই সৌদি আরবে দলীয় ব্যানারে ‘আওয়ামী লীগের’ কার্যক্রম!

সৌদি আরবে সম্প্রতি আরব-আমেরিকান ইসলামিক সামিট-এ অংশ নেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরই এক ফাঁকে তার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন রিয়াদ ও দাম্মামের প্রতিশ্ঠিত আওয়ামী লীগের ভ্রাতৃপ্রতীম সংগঠনের কয়েকজন নেতা। তবে যারা দেশটিতে নিজেদের আওয়ামী লীগের নেতা দাবি করছেন, তারা প্রধানমন্ত্রীর সাক্ষাৎ পাননি। ‘রাজতন্ত্রের দেশে আওয়ামী লীগ নামে সংগঠন করা যাবে না’ আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এই নির্দেশ অমান্য করে কিছু ব্যক্তি সৌদি আরবে ‘আওয়ামী লীগ’ নামে সংগঠন করছেন। এতে করে দেশটিতে আওয়ামী লীগের সুনাম নষ্ট হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। সৌদি আরব প্রবাসী আওয়ামী লীগের ভাতৃপ্রতীম বিভিন্ন সংগঠনের নেতাকর্মীরা এ অভিযোগ করেছেন।

রিয়াদের একটি কমিউনিটি সেন্টারে সম্প্রতি ঈদ পুনর্মিলনী ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ৬৮তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় এই অভিযোগ করেন বক্তারা।

সৌদি আরবে আওয়ামী পরিষদ, বঙ্গবন্ধু পরিষদ, রিয়াদ কেন্দ্রীয় যুবলীগ, মুক্তিযুদ্ধ প্রজন্ম লীগ ও জাতীয় শ্রমিক লীগ এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।

এ সময় সৌদি আরবের কেন্দ্রীয় বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশন এবং আওয়ামী লীগের বিভিন্ন আঞ্চলিক শাখার নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

সভায় বক্তারা দাবি করেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা  সৌদি আরবে আরব-আমেরিকান ইসলামিক সামিট-এ অংশ নিতে সম্প্রতি সফরে আসলে আওয়ামী লীগের কয়েকটি সহযোগী সংগঠনের নেতারা তার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। তখন প্রধানমন্ত্রী ‘রাজতন্ত্রের দেশে আওয়ামী লীগ নামে সংগঠন করা যাবে না’ বলে নির্দেশ দেন। কিন্তু এই নির্দেশ অমান্য করে কিছু ব্যক্তি সৌদি আরবে আওয়ামী লীগ নামে সংগঠন করে দলীয় সভাপতির নির্দেশ অমান্য করছেন। এতে করে  বিদেশে আওয়ামী লীগের সুনাম নষ্ট হচ্ছে।

তারা বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নির্দিষ্ট চারটি সংগঠনের নাম উল্লেখ করে আওয়ামী লীগের জনসমর্থন বাড়ানোর নির্দেশ দিলেও তা অমান্য করে সৌদি আরবে বহাল তবিয়তে আওয়ামী লীগের নামে কার্যক্রম  চালানো হচ্ছে।

বঙ্গবন্ধু পরিষদের সভাপতি ডা. শাহ আলম বলেন, ‘এরা আওয়ামী সমর্থক হিসেবে সৌদি আরবে পরিচিত। বন্ধু হিসেবে তাদের সঙ্গে আমাদের কোনও শত্রুতা নাই। কিন্তু জননেত্রীর নির্দেশ অমান্য করে যারা আওয়ামী লীগ নামে রাজনীতি করবেন, তাদের বিরুদ্ধে সব সময়ে আমাদের প্রতিবাদ অব্যাহত থাকবে।’

সৌদি আরবে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত গোলাম মসিহ’র উপস্থিতিতে প্রধানমন্ত্রীর ওই নির্দেশের কথা দাবি করে আওয়ামী পরিষদের সাধারণ সম্পাদক এমআর মাহবুব বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশন, আওয়ামী পরিষদ, বঙ্গবন্ধু পরিষদ ও বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশন-এই চারটি সংগঠনের নাম উল্লেখ করে এদেরকে দলের জনসমর্থন বাড়ানোর নির্দেশ দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী। এছাড়া যুবলীগ ও স্বেচ্ছাসেবক লীগ তো আছেই।’

মাহবুব অভিযোগ করেন, ‘জননেত্রীর এই নির্দেশ অমান্যকারীরা প্রকৃতপক্ষে আওয়ামী লীগের কর্মী হতে পারেন না।’

এ ব্যাপারে ঢাকায় যোগাযোগ করা হলে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির প্রচার ও প্রকাশনা বিষয়ক সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বাংলা ট্রিবিউনকে জানান, ‘বিশ্বের অধিকাংশ দেশেই আওয়ামী লীগের শাখা থাকলেও রাজতন্ত্রের দেশ সৌদি আরবে যেহেতু রাজনীতির বিষয়ে কড়াকড়ি আরোপ আছে তাই সেখানে কোনও ধরনের দলীয় কার্যক্রম না চালানোর নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। এ কারণে অফিসিয়ালি সৌদি আরবে আওয়ামী লীগের কোনও সংগঠন নেই। কখনও হবেও না। তাই যারা সেখানে সংগঠনের নাম ব্যবহার করছেন তাদের সরে আসার অনুরোধ জানাচ্ছি।’

/টিএন/আপ-এফএস/ 

আরও পড়ুন- অতি উৎসাহীতে বেকায়দায় ক্ষমতাসীনরা