সরকারের সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনার অভাবে হজযাত্রীদের হয়রানি: রিজভী

রুহুল কবির রিজভীবিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী আহমদ বলেছেন, ‘ভোটারবিহীন সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকে প্রতি বছরই হজযাত্রীদের নিয়ে বিশৃঙ্খলা দেখা যাচ্ছে। সরকার কোনও নীতিমালা ও সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা তৈরি না করায় হয়রানিতে পড়তে হচ্ছে তাদের।’ শনিবার (৫ আগস্ট) রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।
জানা গেছে, ভিসা জটিলতায় ৪০ হাজার মানুষের হজে যাওয়া অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। হজযাত্রী পরিবহন কার্যক্রম শুরুর ১২ দিনে বাতিল হয়েছে ১৯টি ফ্লাইট। এ কারণে দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে ঢাকায় এসে দুর্ভোগে পড়ছেন হজযাত্রীরা। রাজধানীর হজক্যাম্প, বিভিন্ন আবাসিক হোটেল ও আত্মীয়-স্বজনদের বাসায় ভোগান্তিতে দিন কাটছে কয়েক হাজার হজযাত্রীর। থাকা-খাওয়ার অসুবিধার পাশাপাশি গচ্চা যাচ্ছে তাদের বাড়তি টাকা।
ধর্ম মন্ত্রণালয় ও বিমান মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রীরা দায়িত্ব এড়িয়ে চলায় হজযাত্রীরা দুর্ভোগে পড়েছেন বলে অভিযোগ করেন রিজভী। তার ভাষ্য, ‘সরকারের ভ্রান্তনীতির কারণে হজ ব্যবস্থাপনায় চলছে চরম অব্যবস্থা। ধর্ম মন্ত্রণালয়ের অনিয়ম ও অব্যবস্থাপনায় নির্ধারিত হজ ফ্লাইট বাতিল হচ্ছে একের পর এক। বিমানমন্ত্রী প্রতিদিনই জাতিকে আশার বাণী শোনাচ্ছেন, অথচ নিজের মন্ত্রণালয় যে ব্যর্থতার হ্যাটট্রিক করেছে তা বেমালুম ভুলে যান তিনি।’

এদিকে গতকাল সিলেটে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত বলেছেন, ‘ষোড়শ সংশোধনী যতবার আদালত বাতিল করবে ততবার সংসদে তা পাশ করা হবে।’ এই বক্তব্য বার্ধক্যজনিত বা ক্ষমতা হারানোর হতাশার বিকার বলে মন্তব্য করেন রিজভী। তার কথায়, ‘অর্থমন্ত্রী সরকারের গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রী, সুতরাং তার বক্তব্য সরকারেরই বক্তব্য। আদালতের রায় নিয়ে এ ধরনের বক্তব্য সুস্পষ্টভাবে আদালত অবমাননার শামিল এবং আইনের শাসনের প্রতি চরম ধৃষ্টতা। ষোড়শ সংশোধনী অবৈধ ঘোষণার পর সরকারের গদির নিচে ভূমিকম্প শুরু হয়ে গেছে। এই রায়ের পর ভোটারবিহীন সরকারের সব কর্মকাণ্ড এখন সম্পূর্ণভাবে বেআইনি।’

শুক্রবার (৪ আগস্ট) আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ‘বিএনপির টপ টু বটম নেতাদের পদত্যাগ করা উচিত।’ এ প্রসঙ্গ টেনে এনে রিজভীর মন্তব্য— ষোড়শ সংশোধনী বাতিলের কারণে ভোগ-দখলের স্বার্থে আঘাত আসায় মন্ত্রী-এমপিরা এখন প্রলাপ বকছেন। তার ভাষ্য, ‘ভয়াবহ দুঃশাসন, দুর্নীতি, গুম, খুন, অপহরণ, বিচারবহির্ভূত হত্যা, নারী ও শিশু নির্যাতন, পাশবিক নির্যাতনের পর বগুড়ায় মা ও মেয়ের মুন্ডিত মস্তকসহ দেশব্যাপী বিরাজমান বিভৎস অনাচার দেখা যাচ্ছে। এ কারণে জনগণ এখন আওয়ামী সরকারকে রক্তপায়ী দৈত্যের মতো মনে করে। তাই আওয়ামী বন্দিশালায় জনগণ প্রতি মুহূর্তে মৃত্যুর প্রহর গুনছে।’

নেত্রকোনা জেলাধীন দুর্গাপুর উপজেলা বিএনপি কার্যালয়ে বিএনপি’র সদস্যপদ নবায়ন ও নতুন সদস্য সংগ্রহ অনুষ্ঠানে পুলিশ ও আওয়ামী সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের যৌথ হামলা চালানোর অভিযোগও তুলে ধরেন রিজভী। ওই ঘটনায় নিজেদের দলের নেতাকর্মীদের মারধর, অফিসের আসবাবপত্র তছনছ এবং ঘটনাস্থল থেকে উপজেলা বিএনপি’র সভাপতি জহিরুল হক ভূঁইয়াসহ ৯ জন নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করা হয় বলেও অভিযোগ করেন এই নেতা।

/এসটিএস/জেএইচ/