শহীদ ময়েজউদ্দিনের ৩৩তম মৃত্যুবার্ষিকী কাল

শহীদ ময়েজউদ্দিনস্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে নিহত বিশিষ্ট রাজনীতিবিদ ও মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক শহীদ ময়েজউদ্দিনের ৩৩তম শাহাদাতবার্ষিকী আগামীকাল বুধববার (২৭ সেপ্টেম্বর)। ১৯৮৪ সালের এই দিনে তৎকালীন ক্ষমতাসীন স্বৈরশাসক হুসাইন মো. এরশাদের পতন ও গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য সারাদেশে ২২ দলের ডাকা হরতালের মিছিলে নেতৃত্ব দেওয়ার সময় সন্ত্রাসীদের হামলায় ঘটনাস্থলেই তিনি মৃত্যুবরণ করেন। তার শাহাদত বার্ষিকী উপলক্ষে বুধবার বিভিন্ন কর্মসূচি আয়োজন করা হয়েছে।
শহীদ ময়েজউদ্দিনের জন্ম হয়েছিল গাজীপুর জেলার কালীগঞ্জ উপজেলার বড়হরা গ্রামে, ১৯৩০ সালের ১৭ মার্চ। তার পিতার নাম ছুরত আলী, মাতার নাম শহরবানু। তিনি মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী মেহের আফরোজ চুমকির বাবা।
মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা মোহাম্মদ আবুল খায়েরের সই করা এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, শহীদ ময়েজউদ্দিনের মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে বুধবার সকাল ৯টায় রাজধানীর বনানী কবরস্থানে তার সমাধিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করা। সকাল ১১টায় গাজীপুর জেলার কালীগঞ্জের তুমুলিয়া ইউনিয়নে আয়োজন করা হবে দোয়া ও মিলাদ মাহফিল। সকাল সাড়ে ১১টায় কালীগঞ্জ পৌরসভায় উপজেলা ও পৌর আওয়ামী লীগের আয়োজনে অনুষ্ঠিত হবে আরেকটি দোয়া ও মিলাদ মাহফিল। পরে দুপুর ১২টায় কালীগঞ্জ উপজেলা পরিষদ চত্বরে শহীদ ময়েজউদ্দিনের স্মৃতিস্তম্ভে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানানো হবে।
এছাড়া, দুপুর দেড়টায় মোক্তারপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ দোয়া ও মিলাদ মাহফিল আয়োজন করেছে। আর বিকাল ৪টায় কালীগঞ্জ পৌরসভার (দেওপাড়া) ফায়ার সার্ভিস স্টেশন মাঠে দোয়া ও মিলাদ মাহফিল এবং কালীগঞ্জ উপজেলার বাহাদুরশাদী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ প্রতিটি ওয়ার্ডে দোয়া মাহফিল ও গণভোজ করবে।
শহীদ ময়েজউদ্দিন ঐতিহাসিক আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা পরিচালনা করার জন্য গঠিত ‘মুজিব তহবিলে’র আহ্বায়ক ছিলেন। একজন বিচক্ষণ আইনজীবী ও রাজনীতিবিদ হিসেবে সাহসিকতার সঙ্গে তিনি এ ঐতিহাসিক দায়িত্ব পালন করেন।
শহীদ মোহাম্মদ ময়েজউদ্দিন উল্লেখযোগ্য সময় ধরে বৃহত্তর ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও পরে সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৭০ ও ১৯৭৩ সালে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে কালিগঞ্জ নির্বাচনি এলাকা থেকে যথাক্রমে প্রাদেশিক পরিষদ সদস্য এবং জাতীয় সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন তিনি।
১৯৭৭ সাল থেকে মৃত্যুর আগ পর্যন্ত বাংলাদেশ রেডক্রস (বর্তমানে বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট) সোসাইটির নির্বাচিত ভাইস চেয়ারম্যান ছিলেন ময়েজউদ্দিন। এছাড়া, একাধারে বাংলাদেশ পরিবার পরিকল্পনা সমিতির (এফপিএবি) মহাসচিব হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন তিনি।
মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক হিসেবে গৌরবময় ভূমিকা পালন করায় বাংলাদেশ সরকার তাকে সর্বোচ্চ রাষ্ট্রীয় সম্মান ‘স্বাধীনতা পদক’-এ ভূষিত করেন।