‘খালেদা জিয়ার বক্তব্য শেখ হাসিনার প্রতি অন্ধ আক্রোশের নগ্ন বহিঃপ্রকাশ’

 

ওবায়দুল কাদের (ফাইল ছবি)শেখ হাসিনাকে ক্ষমা করে দিয়েছি বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার এমন বক্তব্য শেখ হাসিনার প্রতি অন্ধ আক্রোশের নগ্ন বহিঃপ্রকাশ বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, ‘খালেদা জিয়ার ক্ষমার নমুনা ২১ আগস্ট শেখ হাসিনাকে হত্যার পরিকল্পনা। একটাই নমুনা দিলাম। তিনি (খালেদা জিয়া) জানেন তার বিরুদ্ধে যে মামলাগুলো চলছে, তার হয়তো দণ্ড হয়ে যাবে। সে কারণে তিনি এখন ক্ষমার নাটক সাজাচ্ছেন।’

রবিবার (১২ নভেম্বর) সন্ধ্যায় আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার ধানমন্ডির রাজনৈতিক কার্যালয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন। সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে অনুষ্ঠিত জনসভায় বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া আওয়ামী লীগকে ইতিবাচক রাজনীতি করার যে আহ্বান জানিয়েছেন তার জবাবে তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগ সবসময় ইতিবাচক রাজনীতির ধারায় রয়েছে। বিএনপি যদি ইতিবাচক রাজনীতির ধারায় ফিরে আসে তাহলে আমরা তাদের স্বাগত জানাবো।’

সেতুমন্ত্রী বলেন, ‘জুলুমতো করেছে বেগম জিয়া ও বিএনপি। তারা ক্ষমতায় থাকতে আমাদের নেতা শাহ এমএইচ কিবরিয়া, আহসান উল্লাহ মাস্টার, মঞ্জুরুল ইমামকে খুন করেছে। তাদের হাতে আওয়ামী লীগের ২১ হাজার নেতাকর্মীর রক্তের দাগ এখনও আছে। আওয়ামী লীগ কেন ক্ষমা চাইবে। যিনি জুলুম করেছেন তিনিতো আজও জাতির কাছে ক্ষমা চাননি। তার কৃত কর্মের জন্য জাতির কাছে ক্ষমা চাওয়া উচিত। শেখ হাসিনাতো কোনও অন্যায় করেন নাই, তিনি কেন ক্ষমা চাইবেন?’

আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘নির্বাচন হবে নির্বাচন কমিশনের অধীনে। কোনও দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন হবে না। সে সময় যে সরকার থাকবে সেই সরকার পৃথিবীর অন্যান্য দেশের মতো নির্বাচন কমিশনকে একটি নিরপেক্ষ, স্বাধীন  অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য কর্তৃত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে সহায়তা করবে।’

খালেদা জিয়া অভিযোগ করেছেন সরকার বিদেশে এজেন্ট পাঠিয়ে প্রধান বিচারপতিকে পদত্যাগে বাধ্য করেছেন এমন বক্তব্যের জবাবে তিনি বলেন, ‘তাকে আমি পরামর্শ দেবো— আপিল বিভাগের যে পাঁচ জন বিচারপতি এখন আছে, তাদেরই জিজ্ঞাসা করুন। সরকারই পদত্যাগে বাধ্য করেছে, না তারা প্রধান বিচারপতির সঙ্গে কাজ করবেন না এমন বক্তব্য দিয়েছেন। সেটা তিনি (সুরেন্দ্র কুমার সিনহা) ভালো করেই জানেন, এজন্য তিনি পদত্যাগ করেছেন। বিদেশে বাংলাদেশের লোক গিয়ে প্রধান বিচারপতির মতো একজন ব্যক্তিকে পদত্যাগে বাধ্য করাবে এমন অভিযোগ হাস্যকর।’

বিএনপি আগামী নির্বাচনে সেনাবাহিনীকে নির্বাহী ক্ষমতা প্রধানের দাবি ও নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহারের বিরোধিতা করেছে বিষয়টি কিভাবে দেখছেন এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘ইভিএম সর্বাধুনিক প্রযুক্তি। এ সর্বাধুনিক প্রযুক্তি তিনি চান না, তিনি চান ২০০১ সালের মতো ম্যাকানিজমের নির্বাচন। সেই জন্য তিনি ইভিএম চান না। আমরা ইভিএম চাই। তবে বিএনপির এমন দাবিকে আমি অযৌক্তিক দেখি না, রাজনৈতিক দল হিসাবে এটা তার অধিকার আছে।  তবে এটা নির্বাচন কমিশনের ব্যাপার, তারাই ঠিক করবে। আওয়ামী লীগ সেনা মোতায়েন চায় না, কথাটা ঠিক নয়। আমরা চাই নির্বাচন কমিশন সময়ের প্রয়োজনে যেখানে দায়িত্ব দিতে পারে।’

এসময় তিনি বিএনপি চেয়ারপারসনের প্রতি প্রশ্ন রেখে বলেন, ‘আপনিতো  দুই দফায় দশ বছর ক্ষমতায় ছিলেন। কোন নির্বাচনে সেনাবাহিনীকে নির্বাহী ক্ষমতা দিয়েছেন?’

এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির নানক, সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, এনামুল হক শামীম, দফতর সম্পাদক আবদুস সোবহান গোলাপ, তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক আফজাল হোসেন, উপ-দফতর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া ও কার্যনির্বাহী সদস্য এসএম কামাল হোসেন প্রমুখ।