সহনীয় মাত্রায় দুর্নীতির পাঠ নিতে বলেছেন শিক্ষামন্ত্রী: রিজভী

26060974_1841335326157486_1704963096_oকর্মকর্তাদের সহনীয় মাত্রায় ঘুষ নেওয়ার পরামর্শ দিয়ে শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ শিক্ষার্থীদেরও দুর্নীতির পাঠ নিতে বলেছেন বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেন, ‘শিক্ষামন্ত্রী শিক্ষার্থীদের নীতি, নৈতিকতা, আদর্শ এবং ন্যায়বোধের বিবেকশাসিত উন্নত মানুষ হওয়ার বদলে সহনীয় মাত্রায় দুর্নীতির পাঠ নিতে বলেছেন। তাহলেই নাকি শিক্ষার্থীদের জীবনে সাফল্য আসবে। এটা শিক্ষার্থীদের জন্য এক ভয়ঙ্কর বার্তা।’

সোমবার দুপুরে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।

প্রসঙ্গত, রবিবার (২৪ ডিসেম্বর) শিক্ষাভবনে পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদফতরের (ডিআইএ) সম্মেলনকক্ষে অধিদফতেরের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মধ্যে ল্যাপটপ ও প্রশিক্ষণ সনদ বিতরণ উপলক্ষে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদফতরের (ডিআইএ) কর্মকর্তারা ঘুষ নিয়ে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে নিয়ে ভালো প্রতিবেদন জমা দেন। আপনারা ঘুষ খান, কিন্তু সহনীয় মাত্রায় খান।’ শিক্ষামন্ত্রীর এ ধরনের মন্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় রিজভী এসব কথা বলেন।

সংবাদ সম্মেলনে রিজভী বলেন, ‘শিক্ষামন্ত্রীর বক্তব্যে প্রমাণিত হয় বর্তমান সরকার আত্মস্বীকৃত চোর ও দুর্নীতিবাজ। দেশে যে জঙ্গলের রাজত্ব চলছে শিক্ষামন্ত্রীর বক্তব্যে তার বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘দেশের শিক্ষামন্ত্রীর বক্তব্য যদি এটা হয়, তাহলে কোমলমতি শিক্ষার্থীরা সততা, নৈতিকতার পাঠ কোথা থেকে নেবে? শিক্ষামন্ত্রীর কথায় মনে হয়, তিনি সৃজনশীল, সুশিক্ষিত মানুষ হওয়ার বদলে শিক্ষার্থীদের বখাটে দেখতে চান। তিনি চাচ্ছেন, শিক্ষার্থীরা জ্ঞানদীপ্ত প্রকৃত শিক্ষার আলোয় আদর্শ জীবন গঠনে উদ্বুদ্ধ না হয়ে বরং দুর্নীতি, চাঁদাবাজী, সন্ত্রাস, ইভটিজিং, মাদকসহ লুটপাট করার অর্থবিত্তের কাছে নতি স্বীকার করতে শিখুক।’

বিএনপির এ নেতা বলেন, ‘বুদ্ধিজীবীদের যে উদ্দেশে হানাদার বাহিনী হত্যা করেছিল, সেই একই উদ্দেশ নিয়ে জাতিকে মেধাহীন করতে কাজ করছেন শিক্ষামন্ত্রী। এ জন্য তিনি প্রশ্নপত্র ফাঁসসহ দেশের শিক্ষাব্যবস্থা ধ্বংস করতে অবিরাম কাজ করছেন।’

অর্থমন্ত্রী অনেক সময় সত্য কথা বলে ফেলেন উল্লেখ করে রিজভী বলেন, ‘অর্থমন্ত্রী বলেছেন, সরকারই চেয়েছে চালের দাম কিছুটা বাড়ুক। কিন্তু প্রতি কেজি চালের দাম ৫০ টাকার বেশি হওয়াটা মানুষের জন্য বড় ধরনের সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। এটা অসহনীয় হয়ে গেছে। জনগণের সঙ্গে বর্তমান সরকার যে তামাশা করে সেটি প্রমাণ করলেন অর্থমন্ত্রী।’

টাকা লুটপাটে উৎসাহিত হয়ে সরকার নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম বৃদ্ধি করতে দ্বিধা করছে না বলেও অভিযোগ করে বিএনপির এ নেতা বলেন, ‘প্রশ্নপত্র  ফাঁস,  ব্যাংক লুট, শেয়ারবাজার লুটের সঙ্গে সরকারের এমপি-মন্ত্রী ও দলীয় লোকজন জড়িত।’

আরও পড়ুন:
‘ঘুষ খান, কিন্তু সহনীয় মাত্রায় খান’