নিয়মিত কোর্টে মামলা নিতে খালেদা জিয়াকে পরামর্শ

খালেদা জিয়া (ফাইল ছবি)

বিশেষ আদালতে নয়, বরং মামলাগুলো নিয়মিত আদালতে নিয়ে যাওয়ার জন্য খালেদা জিয়াকে পরামর্শ দিয়েছেন বিএনপিপন্থী কয়েকজন বুদ্ধিজীবী। রবিবার (১৪ জানুয়ারি) রাতে গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত এক পরামর্শসভায় বিএনপির চেয়ারপারসনকে এ পরামর্শ দেওয়া হয়। খালেদা জিয়ার আহ্বানেই এ সভা হয়। এতে অংশ নেন অন্তত ২৫ জন বিশিষ্ট নাগরিক। যাদের মধ্যে কেউ কেউ বিএনপির রাজনীতিতে সরাসরি যুক্ত, আবার অনেকেই দলটির মতাদর্শে বিশ্বাসী।

বিএনপির চেয়ারপারসনের কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, রবিবার রাত ৯টার দিকে বৈঠকটি শুরু হয়। এতে আমন্ত্রিত হিসেবে উপস্থিত ছিলেন অধ্যাপক এমাজউদ্দীন আহমদ, ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী, সাংবাদিক মাহফুজ উল্লাহ, অধ্যাপক মুস্তাফিজুর রহমান, অধ্যাপক সদরুল আমীন, ইব্রাহিম খলীল, অধ্যাপক আনোয়ারুল্লাহ খন্দকার চৌধুরী, কবি আবদুল হাই শিকদার; বিএনপি নেতাদের মধ্যে আবদুল্লাহ আল নোমান, অ্যাডভোকেট মাহবুব হোসেন, সাংবাদিক শওকত মাহমুদ, রুহুল কবির রিজভী আহমেদ, ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন, হাবিব-উন-নবী খান সোহেল, শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি ও সানাউল্লাহ মিয়াসহ অনেকে।

বৈঠকসূত্রে জানা গেছে, প্রায় দুই ঘণ্টার আলোচনায় চলমান মামলা নিয়ে খালেদা জিয়ার করণীয় ও বিএনপির অবস্থান–এসব বিষয়ে আলোচনা হয়।

বুদ্ধিজীবীরা যে পরামর্শ দেন তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য ছিল খালেদা জিয়ার মামলাগুলো নিয়মিত কোর্টে নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা করা। ইতোমধ্যে প্রজ্ঞাপন দিয়ে সরকারের পক্ষ থেকে অন্যান্য মামলাও বিশেষ আদালতে নেওয়া হয়। এতে সরকারের কৌশল রয়েছে বলে মত দেন বুদ্ধিজীবীরা। তাদের ধারণা, এই বিশেষ আদালতে নেওয়ার কারণ হচ্ছে খালেদা জিয়াকে প্রতিদিন ব্যস্ত রাখা। রাজনৈতিক কোনও কার্যক্রমে অংশ নিতে না দেওয়া।

বৈঠকের বিষয়ে ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘আমি বিএনপির চেয়ারপারসনকে পরামর্শ দিয়েছি, তিনি যেন তার মামলাগুলো নিয়মিত কোর্টে শুনানির ব্যবস্থা করেন। বিশেষ আদালতে নেওয়া সরকারের একটি কৌশল। রোজ তাকে আটকে রাখার একটি ব্যবস্থা।’  

বৈঠকসূত্রে জানা গেছে, খালেদা জিয়াকে বুদ্ধিজীবীরা আবারও বেলা ১১টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত কর্মীদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করার পরামর্শ দেন। জবাবে বিএনপি চেয়ারপারসনও তাদের জানান, তিনি যোগাযোগ রাখছেন। বুদ্ধিজীবীদের কেউ কেউ তাকে এ বিষয়ে আরও মনোযোগী হওয়ার আহ্বান জানান। এসময় খালেদা জিয়া বিরক্ত হলে একজন তাকে প্রশ্ন করেন, তাহলে আন্দোলন হয় না কেন?

বৈঠকে খালেদা জিয়ার ঢাকার বাইরে সফরে যাওয়ার বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়। ডা. জাফরুল্লাহ তাকে মাঘ মাসের পর ঢাকার বাইরে যাওয়ার পরামর্শ দেন। এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘বৈঠকের বিষয়ে তো আলোচনার কিছু নেই।’

আমন্ত্রিত অতিথিরা জানান, তাদের সবাইকে খালেদা জিয়ার তরফে চা খাওয়ার আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল।