বিএনপি-জামায়াত বাংলাদেশকে ব্যর্থ করতে চায়: হানিফ





মাহবুব উল আলম হানিফআওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ বলেছেন, ‘বিএনপি-জামায়াত একই জায়গার দুটি দল। এদের জন্ম একই জায়গায়; এরা পাকিস্তানের প্রেতাত্মা। এরা চায় যেকোনও মূল্যে বাংলাদেশকে ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করতে।’



সোমবার (৫ মার্চ) রাজধানীর ঢাকা ক্লাবে স্যামসন এইচ চৌধুরী মিলনায়তনে সাপ্তাহিক ক্রাইম জগতের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এ মন্তব্য করেন।
মাহবুব-উল আলম হানিফ বলেন, ‘বিএনপি নেত্রী কেন কারাগারে আছেন? এতিমের টাকা মেরে খাওয়ায় দুর্নীতির মামলায় তিনি কারাগারে আছেন। আদালত তথ্য-প্রমাণের ভিত্তিতে এ মামলার রায় দিয়েছেন। কিন্তু এটা নিয়ে আজ বিএনপি-জামায়াত রাজনৈতিক স্থিতিশীলতাকে নষ্ট করে দেশকে ধ্বংসস্তূপে পরিণত করতে চায়।’
তিনি বলেন, ‘বিএনপি-জামায়াত পাকিস্তানের প্রেতাত্মা। এরা চায় যেকোনও মূল্যে বাংলাদেশকে ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করতে। বাংলাদেশকে ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করতে পারলে দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বের ওপর আঘাত আসবে, তাহলে পাকিস্তান লাভবান হবে। এরা সব সময় পাকিস্তানের মদদে এই দেশে সব ধরনের অপতৎপরতা চালিয়ে আসছে।’
আওয়ামী লীগের এই নেতা বলেন, ‘আজকে বেগম খালেদা জিয়া এতিমের টাকা আত্মাসাতের মামলায় কারাগারে। মামলা হয়েছে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময়। দশ বছর ধরে এই মামলা চলেছে। এখানে আমাদের কী দোষ আছে?’
মাহবুব-উল আলম হানিফ বলেন, ‘তারা (বিএনপি) তাদের অপরাধকে সরকারের ওপর চাপানোর জন্য চেষ্টা করে যাচ্ছে। খালেদা জিয়ার পরিবার দুর্নীতি করেছে, এটা দেশের মানুষ সবাই জানেন।’
দুর্নীতির মামলায় খালেদা জিয়ার কারাগারে থাকার ঘটনায় দলের জনপ্রিয়তা ও ভোট বাড়ছে, বিএনপি নেতাদের এমন মন্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে তিনি বলেন, ‘চুরি করে কারো জনপ্রিয়তা বৃদ্ধি পায়, এমন ঘটনা কেউ শুনেছেন? তা-ও আবার এতিমের টাকা? আর এতে নাকি তার (খালেদা জিয়া) জনপ্রিয়তা বাড়ছে! আসলে তাদের বলার উদ্দেশ্য হলো অন্য।’
এ বিষয়ে মাহবুব-উল আলম হানিফ বলেন, ‘এগুলো বলার উদ্দেশ্য হচ্ছে খালেদা জিয়া কারাগারেই থাক। কারাগারে থাকলে বিএনপির জনপ্রিয়তা বাড়বে। এটা বুঝেই আসলে তারা খালেদা জিয়াকে কারাগারে রাখতে চায়।’
তিনি বলেন, ‘আপনারা আপনাদের নেত্রীকে কারাগারে রাখতে চান রাখুন। আপনাদের নেত্রীকে আপনারা কারাগারে রাখবেন না অন্য কোথাও রাখবেন, সেটা আপনাদের ব্যাপার। এটা নিয়ে আমরা কিছু বলতে চাই না।’
আওয়ামী লীগের শীর্ষস্থানীয় এই নেতা বলেন, ‘দুর্নীতিবাজ নেতা-নেত্রীকে যে বিএনপি নেতারাও চাইছেন না, সেটা তাদের কথাবার্তায় প্রমাণিত হয়েছে। দেশের জনগণ তো দূরের কথা, এটা তারাও (বিএনপি) চায় না।’
স্বাধীনতার মাসে জাতির প্রতি আহ্বান জানিয়ে মাহবুব-উল আলম হানিফ বলেন, ‘সময় এসেছে। এই বাংলাদেশ থেকে দুর্নীতি, সন্ত্রাস, উগ্র মৌলবাদ—এগুলোর এখনও যে ছোটখাটো তৎপরতা আছে, তা নির্মূল করতে হলে বর্তমানে দেশের একমাত্র অপ্রতিরোধ্য নেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কোনও বিকল্প নেই। আজ শুধু বাংলাদেশে নয়, গোটা বিশ্বের কাছে আস্থার জায়গা হচ্ছে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা।’
এ বিষয়ে সংবাদমাধ্যম গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে জানিয়ে হানিফ বলেন, ‘এ জন্য সংবাদমাধ্যমকে সচেতন ও দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করতে হবে।’
বিশিষ্ট অধ্যাপক মুহম্মদ জাফর ইকবালের ওপর হামলার ঘটনায় সাম্প্রদায়িক উগ্রবাদীদের সমালোচনা করেন মাহবুব-উল আলম হানিফ। তিনি বলেন,  ‘এই হত্যাকাণ্ড কিন্তু আজ থেকে শুরু হয়নি। এটা জাতি দেখেছে ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধের সময়। সেই সময়ও কিন্তু আমরা দেখেছি ধর্মের দোহাই দিয়ে নির্বিচারে মানুষ হত্যা করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকার প্রধান হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর আমরা অনেকটাই এদের প্রতিরোধ করতে সক্ষম হয়েছি। এখনও যারা আছে, তারা বিএনপি-জামায়াতের মদদেই সক্রিয় আছে।’
এ জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে কঠোরভাবে প্রতিরোধ করে বাংলাদেশকে এগিয়ে নিতে দেশবাসীর প্রতি আহ্বান তিনি।

সাপ্তাহিক পত্রিকা ক্রাইম জগতের প্রকাশক ও সম্পাদক রিয়াজ উদ্দিনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে উদ্বোধক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন রেলমন্ত্রী মুজিবুল হক। বিশেষ অতিথি হিসেবে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ডা. দীপু মনি, সাংগঠনিক সম্পাদক খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক সোহেল হায়দার চৌধুরী, মুন্সিগঞ্জের সিরাজদিখান উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মহিউদ্দিন আহম্মেদ, ক্রীড়া সংগঠক আলী আসগর খান, দুদুকের সাবেক ডিজি ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এম এইচ সালাহউদ্দিন, সাপ্তাহিক ক্রাইম জগতের উপদেষ্টা বনশ্রী বিশ্বাস স্মৃতিকণা, ইলিয়াস কাঞ্চন প্রমুখ।