‘কিসের সম্মেলন চাস, সোহাগ ভাই-জাকির ভাইয়ের বিরোধিতা করিস, এত বড় সাহস’, এই বলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মল চত্বর সংলগ্ন এলাকায় তিন ছাত্রলীগকর্মীর ওপর হামলা চালিয়েছে ১৫-২০ জন তরুণ। আহতরা ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
আহতরা জানান, শুক্রবার দুপুরে সূর্যসেন হলে খাবার খেয়ে তিনজন বের হন। হল থেকে বের হওয়ার পরপরই ১৫-২০ জন তাদের পিছু নেন। প্রথমে পিছন থেকে কোনও ধরনের মন্তব্য করা না হলেও বিবিএ অনুষদের কাছে আসার পর পিছন থেকে তিনজনকে ডাক দিয়ে থামানো হয়। এরপরই পিছু নেওয়া শিক্ষার্থীরা তাদের উদ্দেশে বলে, ‘কিসের সম্মেলন চাস, সোহাগ ভাই-জাকির ভাইয়ের বিরোধিতা করিস, এত বড় সাহস’। এই বলে তাদের লক্ষ্য করে ইট পাটকেল ছুঁড়ে মারা হয়। এতে তিনজনই আহত হন।
এ বিষয়ে ছাত্রলীগের সভাপতি সাইফুর রহমান সোহাগ বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘যাদের ওপর হামলা হয়েছে তারা ছাত্রলীগের কেউ নয়। অনেক আগেই তাদের সংগঠন থেকে বহিস্কার করা হয়েছে। উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে এ ঘটনা ঘটানো হয়েছে।’
বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সাবেক সদস্য ও আসন্ন সম্মেলনে সভাপতি প্রার্থী মাহবুব খান বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘আমরা নেত্রীর (শেখ হাসিনা) সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়ে আসছি সব সময়। একটা গ্রুপ চাচ্ছে যথাসময়ে ছাত্রলীগের সম্মেলন না হোক। তাই আজ এই সম্মেলনপ্রত্যাশীদের ওপর হামলা করা হয়েছে। এটা অত্যন্ত দুঃখজনক। আক্রমণকারীরা বাইরের কেউ নন। তাদের চিহ্নিত করে শাস্তির ব্যবস্থা করার দাবি জানাচ্ছি।’
আহত শিক্ষার্থী ও হাসপাতালে উপস্থিত ছাত্রলীগ কর্মীরা দাবি করেন, হামলাকারীরা মাস্টারদা সূর্যসেন হলের সভাপতি গোলাম সরোয়ার সমর্থক। তার ইন্ধনেই এ হামলার ঘটনা ঘটেছে।
উল্লেখ্য, সম্মেলনের তারিখ ঘোষণার আগেই সম্মেলনের দাবিতে ছাত্রলীগের বড় একটি অংশ আন্দোলন শুরু করে। এ কারণে সংগঠনের ভেতরে বিভক্তি দেখা দেয়। একটি অংশ চায় দ্রুত সম্মেলন হোক। আরেকটি অংশ চায় এখনই সম্মেলন হওয়ার প্রয়োজন নেই। তবে দ্বিতীয় অংশ এও বলছে দলীয় সভাপতি যখন চাইবেন তখনই সম্মেলন হবে। এই বিভক্তির মধ্য দিয়েই ছাত্রলীগের বতর্মান সভাপতি সাইফুর রহমান সোহাগ ও সাধারণ সম্পাদক জাকির হোসেন এ বছরের জানুয়ারি মাসে সম্মেলনের তারিখ ঘোষণা করেন। ৩১ মার্চ ছাত্রলীগের কাউন্সিল করার নির্দেশনাও দিয়েছিলেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ৭ মার্চ সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের জনসভায় প্রধানমন্ত্রী ছাত্রলীগ নেতাদের সম্মেলন করার পুনর্নির্দেশনাও দিয়েছিলেন। তবে সেই নির্দেশনার একদিন পরই বাংলাদেশ ছাত্রলীগের ২৯তম সম্মেলন স্থগিত করা হয়। সংগঠনটির কেন্দ্রীয় সভাপতি সাইফুর রহমান সোহাগ ও সাধারণ সম্পাদক এস এম জাকির হোসাইন এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের একটি সূত্র জানায়, বৃহস্পতিবার (৮ মার্চ) বিকালে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি সাইফুর রহমান সোহাগ ও সাধারণ সম্পাদক এস এম জাকির হোসাইন প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করলে তিনি সম্মেলন স্থগিত করার এ নির্দেশনা দেন। তবে পূর্ব নির্ধারিত তারিখ স্থগিত করতে বলা হলেও সম্মেলনের প্রস্তুতি রাখতে তাদের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।