স্বাধীনতাবিরোধী-ব্যাংক লুটেরাদের নির্বাচনে অযোগ্য ঘোষণার দাবি গণফোরামের

ড. কামাল হোসেনস্বাধীনতাবিরোধী এবং ব্যাংক লুটেরাদের আগামী নির্বাচনে অযোগ্য ঘোষণার দাবিসহ সাত দফা কর্মসূচির ভিত্তিতে জাতীয় ঐক্যের ডাক দিয়েছে গণফোরাম। শনিবার (২১ এপ্রিল) বিকালে জাতীয় প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে সাত দফা দাবি তুলে ধরেন গণফোরামের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক  আ ও ম শফিকউল্লাহ।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, বাংলাদেশে এখন আইনের শাসন নয় বরং ক্ষমতাসীন শাসকগোষ্ঠীর স্বেচ্ছাচারী আইন চলছে। এ পরিস্থিতি থেকে জাতিকে মুক্ত করতে হলে প্রয়োজন জনপ্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন ও স্থানীয় সরকারসহ শাসন ব্যবস্থায় মৌলিক সংস্কারের মাধ্যমে সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন, কার্যকর গণতন্ত্র ও আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করা। সে লক্ষ্যে গণফোরাম সাত দফা কর্মসূচির ভিত্তিতে জাতীয় ঐক্যের ডাক দিয়েছে।

দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে—রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ আইন হিসেবে সংবিধানকে সমুন্নত রেখে রাষ্ট্র পরিচালনা করতে হবে। সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন নিশ্চিত করার লক্ষ্যে নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ে কর্মকর্তা-কর্মচারী নিয়োগ ও নিয়োগের ক্ষমতা। সেনাবাহিনী ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে নিয়ন্ত্রণের ক্ষমতা কমিশনকে দেওয়া ছাড়াও নির্বাহী বিভাগের প্রভাবমুক্ত একটি স্বাধীন নির্বাচন কমিশন গঠন করতে হবে। স্বাধীনতাবিরোধী, ঋণখেলাপি ও ঋণখেলাপিদের জামিনদার এবং ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর অর্থ লুটকারী, পাচারকারী ও তাদের পরিবারের সদস্যদের নির্বাচনের অযোগ্য ঘোষণা করতে হবে। বর্তমান সংবিধানে সময়োপযোগী সংশোধনের জন্য একটি কমিশন গঠন করতে হবে এবং কমিশনের সুপারিশ অনুযায়ী বর্তমান সংবিধান সংশোধন করতে হবে। এক ব্যক্তি দুই মেয়াদের বেশি প্রধানমন্ত্রী পদে থাকতে পারবেন না। শুধু নির্বাচনকালীন ছাড়াও সব সময়ের জন্য জনগণের পক্ষপাতহীন অধিকারগুলো নিশ্চিত করতে জনপ্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন, ভূমি প্রশাসন, স্থানীয় সরকার, শিক্ষা ও স্বাস্থ্য খাতসহ রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠানে স্বচ্ছ নিয়োগ দিতে হবে। রাষ্ট্রের আর্থসামাজিক উন্নয়ন, জনগণের সচ্ছলতা ও সামাজিক নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করার জন্য কৃষিকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিতে হবে। গ্রাম ও শহরের দরিদ্র মানুষের জন্য সেনা সদস্যদের মতো রেশনিং ব্যবস্থা চালু করতে হবে। এছাড়া খনিজ সম্পদ ও প্রাকৃতিক সম্পদ আহরণে জাতীয় সক্ষমতা অর্জন ও খনিজ ও জাতীয় সম্পদ লুণ্ঠনে দেশি–বিদেশি চক্রান্ত রোধ করতে হবে। প্রতিবেশী দেশের সঙ্গে পারস্পরিক সহযোগিতার ভিত্তিতে পণ্যের আদান-প্রদান এবং বিনিয়োগ ও অর্থনৈতিক উন্নয়নের স্বার্থে উপ-আঞ্চলিক জোট গঠন এবং মিয়ানমারের রোহিঙ্গা শরণার্থীদের নিজ দেশে প্রত্যাবর্তন ও পুনর্বাসনের লক্ষ্যে জোর কূটনৈতিক তৎপরতা অব্যাহত রাখতে হবে। সংবাদ সম্মেলনে আরও বক্তব্য রাখেন গণফোরাম সভাপতি ড. কামাল হোসেন, সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা মোহসীন মন্টু, কেন্দ্রীয় নেতা আলতাফ হোসেন, জগলুল হায়দার, নৃপেন ঘোষ ও মোস্তাক আহমেদ প্রমুখ।