গর্জে ওঠার অপেক্ষায় আছি: বি চৌধুরী

 







আলোচনাসভায় বি চৌধুরী‘আমরা কিছু ছেড়ে দেবো না, গর্জে ওঠার অপেক্ষায় আছি। মান্না, রবরা অপেক্ষায় আছেন।’ এ মন্তব্য করেছেন সাবেক রাষ্ট্রপতি অধ্যাপক এ কিউ এম বদরুদ্দোজা চৌধুরী। শুক্রবার সন্ধ্যায় রাজধানীর ফটো জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশন মিলনায়তনে এক আলোচনা সভায় তিনি এ মন্তব্য করেন।

‘প্রয়াত জাতীয় নেতৃবৃন্দ, মুক্তিযুদ্ধে ৩০ লাখ শহীদ ও গণতন্ত্রের সকল শহীদ’ স্মরণে এ সভার আয়োজন করে বিকল্প ধারা ও যুবধারা।

বি চৌধুরী বলেন, ‘সংবাদপত্রে প্রকাশিত হয়েছে দেশ থেকে ২ লাখ কোটি টাকা চুরি হয়ে গেছে। এই টাকা চুরি করেছে কারা? এই টাকা সাধারণ মানুষের টাকা, কষ্টের টাকা, শ্রমের টাকা। সাধারণ চাষীদের শ্রমের টাকা। এই টাকা সরকারের পৃষ্ঠপোষক, সরকারের লোকজন চুরি করেছে।’

নিজেকে শান্ত উল্লেখ করে বদরুদ্দোজা চৌধুরী বলেন, ‘আমরা শান্ত, কিন্তু আমরা যদি গর্জে ওঠি, তাহলে ঠিকই গর্জে উঠতে পারবো। সেই আশায় আছি আমরা। মাহমুদুর রহমান মান্না সেই আশায় আছেন, আসম রব সেই আশায় আছেন। আমরাও সেই আশায় আছি, আমরা কিন্তু ছেড়ে দেবো না।’

বিকল্প ধারা বাংলাদেশের সভাপতি সরকারের বিরুদ্ধে নানা সমালোচনা করেন। এসময় তিনি ব্যাংক লুটপাট, নিখোঁজ, খুনসহ নানা বিষয়ে কথা বলেন।

১৫৩ টি আসন লুট হয়ে গেলো— এমন মন্তব্য করে বি চৌধুরী বলেন, ‘গণতন্ত্র নির্বাচনে পাঠিয়ে দিয়েছেন।’

তিনি বলেন, ‘দেশে এমন শাসন চাই, যে শাসনে গণতন্ত্র সুপ্রতিষ্ঠিত থাকবে।’ আলোচনায় সাবেক এই রাষ্ট্রপতি মালয়েশিয়ার নতুন নির্বাচিত মাহাথির মোহাম্মদকে অভিনন্দন জানান।

রাজনৈতিক ঐক্যের বিষয়ে বি. চৌধুরী বলেন, ‘যারা আমাদের সঙ্গে আসতে চায়, আমরা প্রস্তুত, গণতন্ত্রের জন্য কাজ করবো।’

এসময় তিনি জানান, ড. কামাল হোসেন ওয়াদা দিয়েছেন গণতন্ত্রের জন্য একসঙ্গে কাজ করবেন। তিনি বলেন, ‘তিনি আমার সঙ্গে কাজ করবেন জাতীয় বৃহত্তর স্বার্থে। এটা শুভ লক্ষণ।’

জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জেএসডি) উপদেষ্টা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, ‘আওয়ামী লীগ সারাদেশের মানুষকে বিভক্ত করেছে। তারা সাচ্চা আওয়ামী লীগ বানাতে চায়।’

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, ‘যদি সাচ্চা আওয়ামী লীগ বানাতে চান, তাহলে আত্মীয়স্বজনকে দল থেকে বাদ দিতে হবে। সাচ্চা আওয়ামী লীগ পাওয়া যাবে না।’

‘জনগণ ক্ষিপ্ত’ উল্লেখ করে জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, ‘এদের বিচার করার আগে বিচারপতিদের বিচার করবে জনগণ। বিচার বিভাগকে হত্যা করেছেন মাহমুদ হোসেন গং।’

আলোচনার শেষ দিকে জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, ‘ভারত থেকে সাবধান হতে হবে। ভারত থেকে সাবধান না হলে বাংলাদেশ সিকিম হয়ে যাবে।’ তার ভাষ্য, ‘কাশ্মীরে গণহত্যা চলছে, ওখানে তাদের সমর্থন দেওয়া আমাদের নৈতিক দায়িত্ব।’

জাসদ সভাপতি আ স ম রব বলেন, ‘ সারাদেশের ৯০ ভাগ মানুষ আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে, ১০ ভাগ তাদের পক্ষে।’

আলোচনা সভায় নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, ‘দেশে সুষ্ঠু নির্বাচন দরকার। আমরা সেই আন্দোলন করার চেষ্টা করবো, যেই আন্দোলন করার ফলে সরকার নির্বাচন দিতে বাধ্য হবে।’

মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, ‘আমরা সবাই মিলে একসঙ্গে এই সরকারের বিরুদ্ধে লড়াই করবো। যেখানেই ভোট দিই, ওইখানে ভোট দেবো না।’

মান্না তার সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে দেশের ব্যাংকব্যবস্থা নিয়ে কথা বলেন। এসময় তিনি সরকারকে ‘চোরের সর্দার’ বলে মন্তব্য করেন। তিনি যখন সুযোগ পাবেন, এই সব অন্যায়ের বিচার করা হবে বলেও জানান সাবেক এই আওয়ামী লীগ নেতা।

আলোচনা সভায় বিকল্প ধারা, যুবধারা, নাগরিক ঐক্য, জেএসডিসহ কয়েকটি দলের নেতারা উপস্থিত ছিলেন। আলোচনাসভা শেষে সংক্ষিপ্ত দোয়া করা হয় শহীদদের স্মরণে। এর আগে আলোচনায় অংশ নিয়ে আ স ম রব এক মিনিট দাঁড়িয়ে নীরবতা পালন করে শহীদদের স্মরণ করতে সবাইকে আহ্বান জানান।