প্রধানমন্ত্রীকে উদ্যোগ নিতে আহ্বান এরশাদের

সুপ্রিম কোর্টে জাতীয় আইনজীবী ফেডারেশনের সম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ

সাবেক রাষ্ট্রপতি ও জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ বলেছেন, শ্রমিকরা সবাইকে জিম্মি করে রাখবে এটা হতে পারে না। বাস না চললে না চলুক। প্রয়োজনে বাসে চড়া বন্ধ করতে হবে, বিকল্প বের করতে হবে। কিন্তু শ্রমিকদের হাতে আর জিম্মি হওয়া চলবে না। এজন্য প্রধানমন্ত্রীকে উদ্যোগ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।

শনিবার (৪ আগস্ট) সকালে সুপ্রিম কোর্ট বার অ্যাসোসিয়েশনের শহীদ শফিউর রহমান মিলনায়তনে জাতীয় আইনজীবী ফেডারেশনের সম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তৃতা করছিলেন হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ।

প্রধান অতিথির বক্তৃতায় হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ আরও বলেন, এদেশে গাড়ি চালাতে হলে অবশ্যই শ্রমিকদের আইন মানতে হবে। এজন্য সরকারকে আরও দায়িত্বশীল হতে আহ্বান জানান তিনি। এরশাদ আরও বলেন, ছাত্রদের চলমান আন্দোলন কোনও রাজনৈতিক ইস্যু নয়, নিরাপদ সড়কের দাবিতে এই আন্দোলন। এটা তাদের বাঁচতে চাওয়ার আন্দোলন।

ছাত্রদের চলমান আন্দোলনে সমর্থন জানিয়ে তিনি বলেন, ছাত্রলীগের কর্মীরা আন্দোলনরত শিশুদের ওপর যে হামলা করেছে তা খুবই দুঃখজনক। প্রতিদিন মৃত্যুর মিছিল বড় হচ্ছে, এমন দেশের জন্য মুক্তিযুদ্ধ হয়নি। তিনি প্রশ্ন রেখে বলেন, বাঁচার দাবিতে রাজপথে ছাত্ররা আন্দোলন করবে, এমন দেশের জন্য কি মুক্তিযোদ্ধারা জীবন দিয়েছিলেন? বড়ই আফসোস, মানুষের জীবনের যেন কোনও মূল্য নেই!

হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ বলেন, দেশে খুন, গুম, সন্ত্রাস, নৈরাজ্য চলছে। এভাবে দেশ চলতে পারে না। ছাত্ররা জেগে উঠেছে, সাধারণ মানুষ জেগে উঠেছে। এবার আমাদেরও জেগে উঠতে হবে। দেশের মানুষকে বাঁচাতে হবে। দেশে সুশাসন ফিরিয়ে দিতে আমাদের দায়িত্ব নিতে হবে। তিনি বলেন, ‘মানুষ জাতীয় পার্টির ৯ বছরের শাসনামলকে স্বর্ণযুগ মনে করে। সাধারণ মানুষ জাতীয় পার্টির শাসনামলে ফিরে যেতে চায়। আমরা উন্নয়ন আর ভালোবাসা দিয়ে মানুষকে জয় করেছি।

বক্তৃতায় এরশাদ বলেন, একটি দিনও মানুষকে শান্তিতে কাজ করতে দেয়নি আওয়ামী লীগ ও বিএনপি। ৯ বছরে ৩৭০ দিন হরতাল দিয়েছিল, কিন্তু আমাদের উন্নয়ন কর্মকাণ্ড থামিয়ে দিতে পারেনি। বিএনপি ক্ষমতায় গিয়ে জিয়া হত্যার বিচার চেয়ে মামলা করেনি। ১৪ বছর ৯ মাস পরে মঞ্জুর হত্যা মামলায় আমাকে আসামি করে। অথচ এজাহারে আমার নাম ছিল না। আবার আমাদের সমর্থন পেয়ে ২১ বছর পর আওয়ামী লীগ ক্ষমতার স্বাদ পেয়েছে। তারা ক্ষমতায় গিয়ে আমার দলকে ভেঙেছে, আমাদের বঞ্চিত করেছে।

তিনি বলেন, কোটি কোটি বেকারের কাজ নেই, মানুষ রাস্তার পাশে ঘুমায়। কিন্তু দেশ নাকি উন্নয়নের মহাসড়কে।

জাতীয় আইনজীবী ফেডারেশনের আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট শেখ মোহাম্মদ সিরাজুল ইসলামের সভাপতিত্বে সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন জাতীয় পার্টির কো-চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদের, পার্টিও মহাসচিব বীর মুক্তিযোদ্ধা এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদার এমপি, বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট বার অ্যাসোসিয়েশন সহ-সভাপতি অ্যাডভোকেট বাসেত মজুমদার, অ্যাডভোকেট ইয়াহিয়া, অ্যাডভোকেট পরিমল কুমার বিশ্বাস, জাতীয় পার্টির ভাইস চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট গিয়াসউদ্দিন, যুগ্ম-মহাসচিব অ্যাডভোকেট তোফাজ্জল হোসেন, সাংগঠনিক অ্যাডভোকেট মো. বখতিয়ার উদ্দিন খান ইকবাল, অ্যাডভোকেট আব্দুল হামিদ ভাসানী, অ্যাডভোকেট হাবিবুর রহমান বাচ্চু, অ্যাডভোকেট ড. ফরিদ উদ্দিন, অ্যাডভোকেট আব্দুর রশীদ, অ্যাডভোকেট সোহরাব হোসেন, অ্যাডভোকেট কাইয়ুম, অ্যাডভোকেট আব্দুল লতিফ শেখ।

সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য মীর আবদুস সবুর আসুদ, উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য সৈয়দ দিদার বখত, অ্যাডভোকেট রেজাউল ইসলাম ভুইয়া, ভাইস চেয়ারম্যান অধ্যাপক ইকবাল হোসেন রাজু, জহিরুল ইসলাম জহির, নুরুল ইসলাম নুরু, আলমগীর সিকদার লোটন, যুগ্ম-মহাসচিব আশরাফ সিদ্দিকী, সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য মো. জসিম উদ্দিন, ফকরুল আহসান শাহজাদা, হেলাল উদ্দিন, মো. বেলাল হোসেন, এম এ রাজ্জাক খান, শারমিন পারভীন লিজা, সৈয়দা পারভীন তারেক, মনোয়ার তাহের মানু, অ্যাডভোকেট নজরুল ইসলাম সোনা, অ্যাডভোকেট লাকী বেগম, মাহমুদ আলম, অ্যাডভোকেট আবু তৈয়ব, অ্যাডভোকেট মাহবুব আলম বাচ্চু, অ্যাডভোকেট মাহতাব উদ্দিন, অ্যাডভোকেট এসএম মাসুদুর রহমান, অ্যাডভোকেট এএইচ এম গোলাম শহীদ রঞ্জু, অ্যাডভোকেট মাহিলা আফরোজ, অ্যাডভোকেট সালমা জেছমিন, ব্যারিস্টার কামরুজ্জমান, মো. সোলায়মান সামি, অ্যাডভোকেট মাহবুবুল আলম, অ্যাডভোকেট নিরঞ্জন, অ্যাডভোকেট ফয়জুর রহমান শাহিন, অ্যাডভোকেট মাহবুব আলম শামীম।