আয়-ব্যয় দুটোই বেড়েছে আ.লীগের

নির্বাচন কমিশনে আওয়ামী লীগের প্রতিনিধি দলগত বছর (২০১৭) আওয়ামী লীগের আয় ও ব্যয় দুটোই বেড়েছে বলে দলটির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে। মঙ্গলবার (১৪ আগস্ট) দুপুরে আওয়ামী লীগের দফতর সম্পাদক আব্দুস সোবহান গোলাপ এ তথ্য জানিয়েছেন। তিনি জানান, ২০১৭ সালে দলটির আয় হয়েছে ২০ কোটি ২৪ লাখ ৯৬ হাজার ৪৩৬ টাকা এবং ব্যয় হয়েছে ১৩ কোটি ৬৩ লাখ ৪৮ হাজার ৩১৯ টাকা। ফলে বর্তমানে ক্ষমতাসীন এ দলটির তহবিলে উদ্বৃত্ত রয়েছে ৬ কোটি ৬১ লাখ ৪৮ হাজার ১১৭ টাকা।

আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে নির্বাচন কমিশন সচিব হেলালুদ্দীন আহমদের কাছে মঙ্গলবার দুপুরে দলের বার্ষিক হিসাব জমা দিতে যান দফতর সম্পাদক আব্দুস সোবহান গোলাপ, তথ্য ও গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট আফজাল হোসেন ও বিজ্ঞান-প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার আবদুর সবুর। এরপর দলের আয় ও ব্যয়ের খাতের ব্যাপারে আব্দুস সোবহান গোলাপ সাংবাদিকদের বলেন, ‘আয়ের প্রধান উৎসের মধ্যে রয়েছে—দলের নতুন ভবন নির্মাণের অনুদান, দলের সদস্যদের কাছ থেকে পাওয়া বার্ষিক চাঁদা, ব্যাংকের টাকা থেকে লাভ ইত্যাদি। আর ব্যয়ের প্রধান খাতগুলোর মধ্যে রয়েছে— দলের ভবন নির্মাণ, কর্মচারীদের বেতন-বোনাস, আপ্যায়ন, সভা-সেমিনার, ইউটিলিটি বিল ইত্যাদি।’

আওয়ামী লীগের দফতর সম্পাদক আব্দুস সোবহান গোলাপ জানান, নতুন ভবন নির্মাণে প্রায় ১০ কোটি টাকার মতো অনুদান পাওয়া গেছে এবং সমপরিমাণ অর্থ সেখানে তারা ব্যয় করেছে।

ইসি’র তথ্য অনুযায়ী, ২০১৬ সালে আওয়ামী লীগের আয় হয়েছিল ৪ কোটি ৮৪ লাখ ৩৪ হাজার ৯৭ টাকা এবং ব্যয় হয়েছে ৩ কোটি ১ লাখ ৮৪ হাজার ৭৯৯ টাকা। উদ্বৃত্ত রয়েছে ১ কোটি ৮২ লাখ ৪৯ হাজার ২৯৯ টাকা। ২০১৫ সালে দলটির আয় হয়েছিল ৭ কোটি ১১ লাখ ৬১ হাজার ৩৭৫ টাকা। ব্যয় হয়েছিল ৩ কোটি ৭২ লাখ ৮১ হাজার ৪৬৯ টাকা। অর্থাৎ সে সময় দলটি প্রায় সাড়ে ৩ কোটি টাকা উদ্বৃত্ত দেখিয়েছিল।

ইসিতে জমা দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, ২০১৭ সালে বিএনপির মোট আয় হয়েছে ৯ কোটি ৪৬ লাখ ২৪ হাজার ৯০২ টাকা। মোট ব্যয় হয়েছে ৪ কোটি ১৯ লাখ ৪১ হাজার ৯৫৪ টাকা। উদ্বৃত্ত হিসেবে ৫ কোটি ২৬ লাখ ৫২ হাজার ৯৪৮ টাকা হাতে বা ব্যাংকে রয়েছে।

এদিকে, এবার জাতীয় পার্টির (জাপা) আয় বেড়েছে। ২০১৭ সালে দলটি আয় করেছে ১ কোটি ৮ লাখ ৫৫ হাজার ২৪০ টাকা। এ সময় দলটি ব্যয় করেছে ১ কোটি ৭ লাখ ১৭ হাজার ৩৬১ টাকা। এক লাখ টাকারও বেশি উদ্বৃত্ত রয়েছে জাতীয় পার্টির।

২০০৮ সালে নিবন্ধন প্রথা চালুর পর গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ মেনে প্রতিবছর আর্থিক লেনদেনের হিসাব দেওয়ার বাধ্যবাধকতা রয়েছে নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলগুলোর। প্রতি বছরের ৩১ জুলাইয়ের মধ্যে পূর্ববর্তী বছরের হিসাব দেওয়ার বিধান রয়েছে। আওয়ামী লীগসহ সাতটি দল সময় মতো হিসাব দিতে না পারায় ইসিতে আবেদন করে ১৫ দিন সময় বাড়িয়ে নেয়।

প্রসঙ্গত, কোনও দল পরপর তিন বছর আয়-ব্যয়ের হিসাব জমা না দিলে ইসি চাইলে তাদের নিবন্ধন বাতিল করতে পারে।