সত্যিকার অর্থে বাংলাদেশ ফ্যাসিস্ট রাষ্ট্রে পরিণত: মির্জা ফখরুল

received_660413357676025

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘বাংলাদেশ আজকে সত্যিকার অর্থে একটি ফ্যাসিস্ট রাষ্ট্রে পরিণত হয়েছে। আজ জনগণের কোনও স্বাধীনতা নেই, সমস্ত মৌলিক অধিকারকে হরণ করা হয়েছে, বেঁচে থাকার কোনও নিরাপত্তা নেই, প্রতিবাদ করা যাবে না। আর তারাই (সরকার) নির্ধারণ করবে কে বেঁচে থাকবে,কে বেঁচে থাকবে না। সুতরাং মানুষের নিরাপত্তা তো দূরে থাক তাদের স্বাভাবিক মৃত্যুর গ্যারান্টিও নেই এখন।’


সোমবার (২০ আগস্ট) রাতে বিএনপি চেয়ারপারসনের গুলশান রাজনৈতিক কার্যালয়ে দলের নির্যাতিত-নিপীড়িত নেতাকর্মী ও তাদের স্বজনদের সঙ্গে ঈদপূর্ব শুভেচ্ছা বিনিময় অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘ক্রসফায়ার, বিচারবহির্ভূত হত্যা ও নির্যাতন বাংলাদেশে নিয়মিত ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে। একমাত্র আল্লাহ এর বিচার করবেন, এ বিশ্বাস আমরা করি।’
তিনি বলেন, ‘দেশে নির্যাতনের মাত্রা এমন পর্যায়ে গিয়ে পৌঁছেছে, এখন সম্ভবত এদেরকে কারো কাছে জবাবদিহিতাও করতে হয় না! ক্রসফায়ার, বিচারবহির্ভূত হত্যা, নিখোঁজ করে দেওয়া, পুলিশ কাস্টডিতে নির্যাতন, প্রকাশ্যে গুলি করা এবং হাঁটুতে গুলি করে পঙ্গু করে দেওয়া! আর আমরা এমন এক দেশে বাস করছি, যেখানে শিশুর আর্তনাদ ও কান্নাও কারো কানে গিয়ে পৌঁছায় না! ভয়াবহ একটা পৈশাচিক কারাগারে বাস করছি আমরা।’
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমাদের সন্তানদের তুলে নিয়ে গেছে, নিখোঁজ হয়ে গেছে। যে রাষ্ট্রের দায়িত্ব নাগরিকদের রক্ষা করা, সেই রাষ্ট্রের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তাদের তুলে নিয়ে গেছে। আর এখন তারা কেউ কোনও কথা বলে না।’
দলের নির্যাতিত নেতাকর্মীদের স্বজনদের উদ্দেশ্যে আবেগী কণ্ঠে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘আপনারা নিজেদের অসহায় ভাববেন না। এ দেশের মানুষ আপনাদের সাথে আছে। আপনাদের কষ্ট, আপনাদের শোককে শক্তিতে পরিণত করতে হবে। এ যে ভয়াবহ দানব আমাদের বুকের ওপরে চেপে বসে আছে! আমাদের শিশু ও মাদের কাঁদাচ্ছে, এই দানবকে অপসারণ করতে হবে।’
বিএনপি মহাসচিব আরও বলেন, ‘আপনাদের ছেলেরা হারিয়ে গেছে তেমনি অনেকের ছেলেরা নিহত হয়েছে, কারাগারে যাচ্ছে। আমরাও কারাগারে যাচ্ছি। ম্যাডাম কারাগারে আছে। এই ত্যাগ বৃথা যাবে না। মাতার অশ্রুধারা কখনও বৃথা যায় না। আজকে মায়েরা ও শিশুরা কাঁদছে। এটা বৃথা যাবে না। নিঃসন্দেহে এ দেশের মানুষ জেগে উঠবে। সত্যিকার অর্থেই তারা একটি শান্তিময় দেশ তৈরি করবে।’
বক্তৃতা শেষের বিএনপির নির্যাতিত-নিপীড়িত ১৭ নেতাকর্মী ও তাদের স্বজনদের হাতে আর্থিক অনুদান তুলে দেন মির্জা ফখরুল।
এসময় বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক ফজলুল হক মিলন, চেয়ারপারসনের একান্ত সচিব এবিএম আব্দুস সাত্তার প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।