মানুষ পরিষ্কার ভাষায় জানিয়ে দিচ্ছে শেষ রক্ষা হবে না: সরকারকে মির্জা ফখরুল

কাজী জাফর আহমেদের স্মরণসভায় বক্তব্য রাখছেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর প্রশাসনের সবকিছুকে আওয়ামী লীগ দলীয় নিয়ন্ত্রণে করে রেখেছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। সরকারের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘এ দেশের মানুষ পরিষ্কার ভাষায় জানিয়ে দিচ্ছে, শেষ রক্ষা হবে না।’ শনিবার (৮ আগস্ট) বিকেলে জাতীয় প্রেস ক্লাবের কনফারেন্স লাউঞ্জে জাতীয় পার্টি আয়োজিত কাজী জাফর আহমেদের স্মরণসভায় তিনি এসব কথা বলেন।

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘এই সরকার সবচেয়ে বড় যে ক্ষতিটি করেছে, তা হচ্ছে বাংলাদেশের রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলোকে নষ্ট করে দিয়েছে। আজকে নির্বাচন কমিশনকে একটা ঠুটো জগন্নাথ বানিয়ে রেখেছে। এটি তাদের আজ্ঞাবহ একটি নির্বাচন কমিশন। আজকে বিচার বিভাগকে তারা নিয়ন্ত্রণ করছে। প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহাকে বন্দুকের মুখে দেশ থেকে বের করে দিয়েছে।’

বিএনপির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর জনসভায় মানুষ স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশ নিয়েছে দাবি করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘এসব কারণেই তারা এতটা মরিয়া হয়ে উঠেছে। আজকে বাংলাদেশ একটা ভয়ঙ্কর কারাগারে পরিণত হয়েছে। এটাকে বলা যেতে পারে রীতিমত একটা নরক হয়ে গেছে। প্রতিটি গ্রামে, ইউনিয়নে এখন আগাম মামলা দেওয়া হচ্ছে। ঢাকা শহরের প্রত্যেকটি ওয়ার্ডে আগাম মামলা দেওয়া হয়েছে। যখনই নির্বাচন শুরু হবে, এই মামলাগুলো দিয়ে নেতাকর্মীদের আটক করবে। কী কাপুরুষ! এই সরকার কতটা কাওয়ার্ড হলে এই ব্যবস্থাগুলো নিতে পারে!’ 

আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের বিভিন্ন বক্তব্যের সমালোচনা করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আওয়ামী লীগের নেতারা আমাদের সবক দিতেন। আমরাও তো বলছি নির্বাচনে আসুন। সত্যিকার অর্থে একটা নির্বাচন দিন, এত ভয় কেন? সব পথ বন্ধ করে দিচ্ছেন একের পর এক। সব রাস্তা বন্ধ করে দিচ্ছেন, একটা ডেমোক্রেটিক স্পেস রাখছেন না। সহজে কোথাও মিটিং করতে দেবেন না, কোথাও জনসভা করতে দেবেন না, র‍্যালি করতে দেবেন না, কাগজে লিখতে দেবেন না, কাগজে লিখলে মামলা হবে আর ফেসবুকে লিখলে ৫৭ ধারা তো আছেই। নিরাপদ সড়কের জন্য বাচ্চারা রাস্তায় নামলো আন্দোলন করতে। মায়েরা গেছে সেখানে বাচ্চাদের খাবার-পানি দিতে। সে মায়েদের বিরুদ্ধে মামলা, রিমান্ড। বিশ্বখ্যাত আলোকচিত্রশিল্পী শহিদুল আলম এই আন্দোলনকে সমর্থন করে বাইরের গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বললেন, তার জন্য এখন পর্যন্ত তাকে অত্যাচার করে কারাগারে আটকে রাখা হয়েছে। কতজন যে এর মধ্যে গুম হয়ে গেছে, তার কোনও ঠিক নেই, আর এরা গণতন্ত্রের কথা বলে?’

স্মরণসভায় আরও উপস্থিত ছিলেন জাতীয় পার্টির মহাসচিব মোস্তফা জামাল হায়দার, প্রেসিডিয়াম সদস্য এস এম এম আলম প্রমুখ।