জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়ার নামে ষড়যন্ত্র প্রতিহত করা হবে: ১৪ দল



১৪ দলীয় জোট



জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়ার নামে মুক্তিযুদ্ধের চেতনার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে বলে জানিয়েছেন ১৪ দলের নেতারা। এসময় তারা ঐক্যবদ্ধভাবে ষড়যন্ত্রকারীদের প্রতিহত করার ঘোষণা দেন।

মঙ্গলবার বিকেলে জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জাসদ-ইনু) কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে বিভিন্ন পেশাজীবী সংগঠনের নেতৃবৃন্দের সঙ্গে ১৪ দলের মতবিনিময় সভায় বক্তারা এ ঘোষণা দেন।
সভাপতির বক্তৃতায় আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও ১৪ দলীয় জোটের মুখপাত্র মোহাম্মদ নাসিম বলেন, ‘দেশের রাজনীতিতে চক্রান্ত শুরু হয়েছে। যেকোনও মূল্যে এই হতাশাগ্রস্ত চিহ্নিত চক্রান্তকারীদের প্রতিহত করা হবে। আমরা ১৪ দল প্রত্যয়ের সঙ্গে ঘোষণা করছি যারা বিএনপি-জামায়াত ও সাম্প্রদায়িক শক্তিকে আশ্রয় দিয়েছে তাদের কোনও ছাড় দেওয়া হবে না।’
আওয়ামী লীগের এই সিনিয়র নেতা বলেন, ‘যতই চক্রান্ত করা হোক আমরা এক চুল পরিমাণ সংবিধানের বাইরে যাবো না। জনগণকে সঙ্গে নিয়ে মাঠে-ময়দানে চক্রান্তকারীদের প্রতিহত করা হবে। আগামী ২৯ সেপ্টেম্বর রাজধানীতে সম্মেলন করবে ১৪ দল। ঢাকাসহ প্রতিটি বিভাগীয় শহর ও জেলা-উপজেলায় সমাবেশ করে চক্রান্তকারীদের মুখোশ উন্মোচন করবো।’
এ মতবিনিময় সভায় নৌমন্ত্রী শাজাহান খান বলেন, ‘জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়া এবং বিএনপি মিলে বৃহত্তর ঐক্যের নামে যে রাজনৈতিক সমীকরণ শুরু করেছে তা জাতির জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। আদর্শবিহীন কোনও ঐক্য হতে পারে বলে আমি মনে করি না।’
তাদের ঐক্য কিসের ভিত্তিতে প্রশ্ন রেখে শাজাহান বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধের চেতনা, গণতান্ত্রিক আন্দোলন, দুর্নীতির দায়ে কারাগারে থাকা বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি, তারেক রহমানকে দেশে ফিরিয়ে আনা... আসলে তাদের ঐক্যের ভিত্তি কী— এটা এখনও দেশের জনগণের কাছে পরিষ্কার নয়।’
ঐক্যের নামে চক্রান্ত হচ্ছে মন্তব্য করে নৌপরিবহনমন্ত্রী বলেন, ‘আমি মনে করি এটা একটা চক্রান্ত। এই চক্রান্ত নস্যাৎ করার জন্য ১৪ দল, আওয়ামী লীগ এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে দায়িত্ব নিতে হবে।’
শাজাহান খান বলেন, ‘১৪ দলকে ধন্যবাদ জানাবো সময় উপযোগী এই আয়োজন করার জন্য। ২০১৩ সালে বিএনপি যখন জ্বালাও-পোড়াও রাজনীতি শুরু করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমাকে ডেকে দায়িত্ব দিয়েছিলেন। আমি সেদিন গার্মেন্টস শ্রমিক থেকে শুরু করে সব শ্রমিক সংগঠনকে একসঙ্গে ডেকে রুখে দাঁড়িয়েছিলাম। এখানে শিরিন আক্তার আছেন, সবাইকে সঙ্গে নিয়ে একসঙ্গে পদক্ষেপ নিয়েছিলাম। ঐক্যবদ্ধভাবে সমাবেশ করেছিলাম। এরপরেই কিন্তু বিএনপির জ্বালাও-পোড়াও বন্ধ হয়েছিল। সেদিন দল-মত নির্বিশেষে জাসদ, বাসদ, জাতীয় পার্টি থেকে শুরু করে সবাই ঐক্যবদ্ধ হয়েছিলাম।’
যেকোনও পরিস্থিতি ও ষড়যন্ত্র মোকাবিলায় ১৪ দল শ্রমিক সংগঠনগুলোকে পাশে পাবে জানিয়ে শাজাহান খান বলেন, ‘বিএনপি-জামায়াত ষড়যন্ত্র করছে। এর বিরুদ্ধে আমরা সোচ্চার আছি। আপনারা বলবেন কী করতে হবে, আমরা সেই নির্দেশনা মতো কাজ করবো।’
তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু বলেন, ‘এ দেশে যারা জাতির পিতাকে মানে না, বঙ্গবন্ধুকে মানে না, সংবিধানের চার মূলনীতি মানে না, তাদের রাজনীতির বাইরে যেতে হবে। ড. কামাল হোসেনদের বলবো বিএনপি- জামায়াত যত ভালো কথাই বলুক না কেন, তারা জাতির পিতাকে মানে না। সংবিধান মানে না। ড. কামাল হোসেন সেই তাদের সাথে হাত ধরে উল্লাস করলেন, এটা বাংলাদেশের বিরুদ্ধে উল্লাসের অট্টহাসি।’
জাসদ সভাপতি বলেন, ‘ড. কামাল হোসেন, বিএনপি-জামায়াত ঐক্যের নামে চক্রান্ত করছে৷ চক্রান্ত করে তারা অপরাধীদের রাজনীতিতে হালাল করার চেষ্টা করছে। নির্বাচনকে বানচালের ফাঁদ পেতেছে। বিভিন্ন দাবির আড়ালে তারা চক্রান্তের জাল বিছিয়েছে। চক্রান্তকারীদের ব্যাপারে আমাদের সতর্ক থাকতে হবে।’
মতবিনিময় সভায় আরও বক্তৃতা রাখেন সমাজকল্যাণমন্ত্রী রাশেদ খান মেনন, সাম্যবাদী দলের সাধারণ সম্পাদক দিলীপ বড়ুয়া প্রমুখ।