সরকার ভয় পেয়ে স্কাইপ বন্ধ করেছে: মির্জা ফখরুল

আলোচনা সভায় বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ অন্যরাএকাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে বিএনপির সামগ্রিক তৎপরতায় সরকার প্রচণ্ড ভয় পেয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, ‘সরকার ভয় পেয়ে তারেক রহমানকে দলীয় কার্যক্রমে অংশগ্রহণ থেকে বিরত রাখতে স্কাইপ বন্ধ করেছে।’ মঙ্গলবার (২০ নভেম্বর) সন্ধ্যায় সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি মিলনায়তনে তারেক রহমানের ৫৪তম জন্মদিন উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘তফসিল ঘোষণার পরও চারদিকে বিএনপির নেতাকর্মীদের গ্রেফতার, নির্যাতন চালানো হচ্ছে। এ থেকে আমাদের মুক্তি চাইলে সব অস্ত্র ব্যবহার করতে হবে। আর সে অস্ত্র হলো ভোটের অস্ত্র। সবাই মিলে ভোট দিয়ে এই দানব সরকারকে হঠাতে হবে।’

এবারের নির্বাচনকে বিএনপির অস্তিত্বের লড়াই উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘জনগণকে শক্তি হিসেবে নিয়ে সুষ্ঠু নির্বাচন দিতে সরকারকে বাধ্য করতে হবে। এর বিকল্প নেই।’ মামলার ভয়ে পালিয়ে না বেড়িয়ে মানুষের বাড়ি বাড়ি গিয়ে ভোট চাওয়ারও আহ্বান জানান তিনি।

বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘আমাদের এই ভোট-আন্দোলনকে চূড়ান্ত জয়ের দিকে নিয়ে যেতে হবে। আমরা সবাইকে নিয়ে এ নির্বাচনে জয়যুক্ত হবো। ৩০ ডিসেম্বরের পর এদেশে স্বাধীন মানুষের পতাকা উড়বে।’

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক এমাজউদ্দীন আহমদ বলেন, ‘এই নির্বাচনকে আন্দোলন হিসেবে নিয়েছি। তারেক রহমান আজ দেশের বাইরে। খালেদা জিয়া কারাগারে। এই অমানবিক অবস্থায় আর থাকতে হবে না। সবাই মিলে ভোটকেন্দ্রে গিয়ে ভোট দিতে হবে।’

নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, ‘বর্তমান সরকারের দুঃশাসনে ভেতরে ভেতের সাগরের মতো ফুঁসছে সারা দেশের মানুষ। পরিবর্তনের জন্য তারা কেবল একটি সুযোগের অপেক্ষায়। আগামী নির্বাচনের মাধ্যমে সেই পরিবর্তনের সুযোগ এসেছে। যেহেতু নির্বাচনের হুইসেল (তফসিল) বেজেছে, তাই আগামী ৩০ ডিসেম্বর আমরা জনগণকে সঙ্গে নিয়ে নির্বাচনের রায় ঘোষণা করবো। এই নির্বাচনে এই জালিম সরকারের পতন ঘটানো হবে। নির্বাচনের আগে ২১ দিন প্রচারণার সুযোগ পাবো, তখন সারাদেশ চষে বেড়াবো।’ তিনি বলেন, লন্ডন থেকে একটা মানুষ (তারেক রহমান) স্কাইপে কথা বলেন আর এখানে ঢাকায় বসে ক্ষমতাসীনরা কাঁপে। আমাদের প্রত্যেকের মনে রাখতে হবে, আমরা যখন অন্য নেতাকর্মী, সাধারণ মানুষের কাছে যাবো, তখন তারা যেন ভাবে, আমাদের জন্য সুন্দর বাংলাদেশ ওরাই গড়ে দেবে।’

বর্তমান ব্যবস্থায় আসন্ন নির্বাচনে অংশ নিলে তাতে প্রহসন হবে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ও সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি খন্দকার মাহবুব হোসেন বলেন, ‘সরকারের কাছে সবচেয়ে আতঙ্কিত যে ব্যক্তি, তিনি হলেন তারেক রহমান। সেই কারণেই আদালতের কাঁধে বন্দুক রেখে নিয়ন্ত্রিত বিচার ব্যবস্থা দিয়ে একের পর এক তার বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা করা হয়েছে। আমাদের দুঃখ হয়, বিচার বিভাগ স্বাধীন থাকলে তারেক রহমানের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা হতো না আর খালেদা জিয়াকেও কারাগারে থাকতে হতো না। তাই আমাদের ঐক্যবদ্ধভাবে নির্বাচনকে একটি আন্দোলনের অংশ হিসেবে নিয়ে পরিবর্তনের আগে আরেকটি পরিবর্তন এনে এই দানব সরকারের হাত থেকে মুক্তি পেতে হবে।’

বিএনপির প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানীর সঞ্চালনায় ও বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট খন্দকার মাহবুব হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন ঐক্যফ্রন্ট নেতা ড. জাফরুল্লাহ চৌধুরী, সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, অ্যাডভোকেট সেলিনা হোসেন, অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীন, ব্যারিস্টার এ এম মাহবুব উদ্দিন খোকন প্রমুখ।