খালেদা জিয়ার চিকিৎসার প্রয়োজনীয় পরীক্ষা-নিরীক্ষা হচ্ছে না: রিজভী

রুহুল কবির রিজভী (ফাইল ফটো)বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার প্রয়োজনীয় পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হচ্ছে না বলে অভিযোগ করেছেন দলটির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেন, ‘তাকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) ভর্তি করা হলেও সরকার নিয়ন্ত্রিত ওই হাসপাতালে প্রয়োজনমতো চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে না। তার প্রয়োজনীয় পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হচ্ছে না। ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে নেই, আর্থারাইটিস এর ব্যথা এখন প্রচণ্ড আকার ধারণ করেছে।’
শনিবার (১৩ এপ্রিল) নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। বিএসএমএমইউতে পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য কোনও আধুনিক যন্ত্রপাতিও নেই বলে দাবি করে রিজভী বলেন, ‘আমরা শুরু থেকেই খালেদা জিয়ার পছন্দ অনুযায়ী বিশেষায়িত হাতপাতালে চিকিৎসার দাবি জানিয়ে আসছি। কিন্তু সরকার তা আমলে নেয়নি বরং তাকে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে বলে মিথ্যাচার করছে যা পীড়াদায়ক।’
খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা গুরুতর হওয়া সত্ত্বেও চিকিৎসা নিয়ে দেশবাসীর কাছে সঠিক তথ্য তুলে ধরা হয়নি মন্তব্য করে বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘সরকারের মন্ত্রী ও নেতারা খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্য নিয়ে প্রতিনিয়ত বিভ্রান্তিকর কথাবার্তা বলছেন। তার প্রতি এহেন আচরণ সরকারের প্রতিহিংসামূলক মনোবৃত্তিরই পরিচায়ক।’
খালেদা জিয়াকে মুক্তি ও চিকিৎসায় বাধা দিচ্ছে সরকার দাবি করে রিজভী আরও বলেন, ‘মূল কারণ একটাই বিএনপি চেয়ারপারসনকে কৌশলে দুনিয়া থেকে সরিয়ে আবারও পুরোপুরি বাকশালের নামে একনায়কতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করা। আমি আবারও সরকারের উদ্দেশ্যে বলতে চাই- তাকে নিঃশর্ত মুক্তি দিতে হবে।’
মাদ্রাসাছাত্রী নুসরাত জাহান রাফির খুনীদের বাঁচাতে নানাভাবে তৎপরতা চলছে উল্লেখ করে রিজভী বলেন, ‘যে খবরগুলো ইতোমধ্যে প্রকাশিত হচ্ছে, বিভিন্ন দিক থেকে হত্যা মামলার আসামি ও তাদের দোসরদের পক্ষে একটি গ্রুপ মাঠে নেমেছে। সোনাগাজীর সেই মাদ্রাসা শাখা ছাত্রলীগ সভাপতি শাহাদাৎ হোসেন শামীম, যুবলীগ নেতা নুর উদ্দিন, জাবেদ হোসেন, জোবায়ের আহমেদ, আব্দুল কাদের ওই মাদ্রাসার অধ্যক্ষ সিরাজ উদ্দৌলা, সোনাগাজী পৌর কাউন্সিলর ও পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মকসুদুল হক ও প্রভাষক আবছার উদ্দিনের পক্ষে সাফাই গাইতে শুরু করেছে গ্রুপটি। তারা রাজনৈতিক নেতাদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে ধরণাও দিচ্ছে বলে গণমাধ্যমে খবর বেরিয়েছে। ঘটনায় জড়িত সবাই ক্ষমতাসীন দলের নেতাকর্মী।’
নারী ও শিশু শিক্ষার্থীদের ওপর নির্যাতন থামছেই না দাবি করে রিজভী বলেন, ‘গতকাল শুক্রবারও বিভিন্ন স্থানে তিন স্কুলছাত্রীসহ পাঁচজনকে ধর্ষণ ও গণর্ধষনের খবর পাওয়া গেছে। গোপালগঞ্জে ধর্ষণের আলামত নষ্ট করতে হাসপাতাল থেকে এক শিক্ষার্থীকে অপহরণ করা হয়েছে। পাবনার চাটমোহরে এক শিক্ষার্থীকে হত্যার চেষ্টা করা হয়েছে। আতঙ্কিত হয়ে পড়েছে জনগণ। ইতিহাসে এই ধরনের সময়কালকেই বলা হয়েছে মাৎস্যন্যায়।’