বৈশ্বিক র‌্যাংকিংয়ে ঢাবি নেই কেন: বিএনপি

সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখছেন ড. মঈন খানলন্ডনভিত্তিক টাইমস হায়ার এডুকেশন পরিচালিত র‌্যাংকিংয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) স্থান না থাকার কয়েকটি কারণ তুলে ধরেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আব্দুল মঈন খান। রবিবার (১৯ মে) নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এসব কারণ তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় বৈশ্বিক র‌্যাংকিংয়ে নেই কেন জাতির কাছে এটা বড় প্রশ্ন।’

ড. মঈন খান বলেন, ‘র‌্যাংকিংয়ের জরিপ করার সময় বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর পাঠদান, গবেষণা, জ্ঞান আদান-প্রদান এবং আন্তর্জাতিক দৃষ্টিভঙ্গি—এই চারটি বিষয়কে প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে। কিন্তু ঢাবিতে শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে ফার্স্ট ক্লাস নয়, রাজনৈতিক দলের সদস্যকে প্রাধান্য দেওয়া হয়। পাঠদানে উন্নত বিশ্বের নামি প্রকাশনীর পাঠ্যবইয়ের বদলে অখ্যাত ভারতীয় পাঠ্যবইগুলোকে বেছে নেওয়া হচ্ছে।’

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে গবেষণা কার্যক্রম অপ্রতুল বলে দাবি করে মঈন খান বলেন, “রাজনৈতিক বিবেচনায় নিয়োগপ্রাপ্ত শিক্ষকদের দিয়ে মানসম্মত গবেষণা সম্ভব নয়। আন্তর্জাতিক স্বীকৃত অ্যাকাডেমিক জার্নালগুলোতে ক’টি গবেষণা প্রকাশিত হয়েছে জাতি জানতে চায়।”

তিনি আরও  বলেন, ‘বিশ্বজুড়ে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে তাদের গবেষণা সংস্থাগুলোর মধ্যে এক্সচেঞ্জ প্রোগ্রামের মাধ্যমে জ্ঞান আদান-প্রদান সর্বজনস্বীকৃত। কিন্তু ঢাবির যে ২৮৩টি বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে গবেষণা আদান-প্রদান হয়, তারাও এই র‌্যাংকিংয়ে নেই। তার মানে হচ্ছে, নিম্নমানের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান আরেক নিম্নমানের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সঙ্গে কাজ করছে। কিন্তু শিক্ষা ও গবেষণা কার্যক্রমের মানের ক্ষেত্রে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং যুক্তরাজ্যের নামি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো সুপরিচিত। বিশ্বব্যাপী  র‌্যাংকিংয়েও তারাই দীর্ঘদিন যাবৎ আধিপত্য বিস্তার করে আছে।’

মঈন খান বলেন, ‘দুঃখজনক হলেও আজকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক দৃষ্টিভঙ্গি বিনষ্ট হয়ে গেছে। একসময় অনেক বিদেশি ছাত্রছাত্রী পড়তে এলেও আমার জানামতে এই মুহূর্তে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে একজনও বিদেশি শিক্ষার্থী নেই। ভাষা ইনস্টিটিউটে পূর্ণকালীন ও খণ্ডকালীন মিলিয়ে হাতেগোনা কয়েকজন শিক্ষক রয়েছেন। অন্য কোথাও কোনও বিভাগে বিদেশি শিক্ষক বা গবেষকের দেখা বলতে গেলে মেলেই না।’

তিনি আরও বলেন, ‘একটি জাতিকে ধ্বংস করে দেওয়ার জন্য সে জাতির শিক্ষা ব্যবস্থাকে ধ্বংস করে দেওয়াই যথেষ্ট। আজ যদি কেউ বলেন—অশিক্ষা, কুশিক্ষা ও নকল দিয়ে সরকার এই কাজটিই এ দেশে করছে অত্যন্ত পরিকল্পিতভাবে, তাহলে অবাক হওয়ার কিছু থাকবে কি?’