১৪৫ টাকার রক্তের মূল্য রাজনীতিতে নেই: তৈমূর আলম খন্দকার

তৈমূর আলম খন্দকাররাজনীতির মূল্য অন্যখানে চলে গেছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা তৈমূর আলম খন্দকার। তিনি বলেন, ‘রাজনীতিতে ত্যাগ কথাটা বাদ দিয়ে দিতে হবে। এই ত্যাগের কোনও মূল্য নাই। যারা বলে রক্ত দিয়ে আমরা রাজনীতি করি। তাদেরকে মনে রাখতে হবে, এক প্যাকেট রক্তের দাম ১৪৫ টাকা! অতএব ১৪৫ টাকার রক্তের মূল্য রাজনীতিতে নেই। রাজনীতির মূল্য অন্যখানে চলে গেছে। এটা সামাজিক প্রেক্ষাপটে। এটা শুধু বিএনপির না। অল সিচুয়েশন। আগে যুক্তফ্রন্টের সময় চার ভাগ এমপি ছিল পার্লামেন্টে, পরে দেশ স্বাধীনের পর ১৩ ভাগ, এখন ৬৪ ভাগের ওপর ব্যবসায়ীরা ডমিনেট করছে।’
বৃহস্পতিবার (২৩ মে) বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল একাত্তরের একটি অনুষ্ঠানে সাংবাদিক মঞ্জুরুল ইসলাম বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের মধ্যে সিদ্ধান্তহীনতার সংকট রয়েছে কিনা জানতে চাইলে তিনি এসব কথা বলেন।
‘একাত্তর জার্নাল’ অনুষ্ঠানের উপস্থাপক বগুড়া-৬ আসনের উপনির্বাচনে বিএনপির প্রস্তুতির বিষয়ে জানতে চাইলে তৈমূর আলম খন্দকার বলেন, ‘টোটাল বগুড়া জেলাটিই বিএনপির। এই আসনে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া, পরে লালু সাহেব ও জমিরউদ্দিন সরকার এমপি ছিলেন। শত প্রতিকূলতার পরও এবারও পাস করেছেন মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। সে হিসেবে এখানে দল থেকে যাকেই দেওয়া হোক, সেই পাস করবে; যদি সরকার প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি না করে।’

খালেদা জিয়ার নির্বাচনে অংশগ্রহণ পিছিয়ে গেলো কেন প্রশ্নে তৈমূর আলম খন্দকার বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াকে বের হতে দিচ্ছেন না। আমরা জানতাম, সর্বোচ্চ আদালতে রায় না হওয়া পর‌্যন্ত একজন বিচার প্রার্থীর এটা অধিকার, নিজেকে নির্দোষ দাবি করা। কিন্তু, এখন দেখা যায়, বিচার শেষ না হতেই, সর্বোচ্চ আদালত থেকে রায় না হওয়ার পূর্বেই তাকে নির্বাচন থেকে বিমুখ রাখা হচ্ছে। নির্বাচন করতে দেওয়া হচ্ছে না। এটা তার সাংবিধানিক অধিকার, আইনগত অধিকার থেকে বিএনপি চেয়ারপারসনকে বঞ্চিত করা হচ্ছে।’

তার মানে খালেদা জিয়া এই নির্বাচনে অংশগ্রহণ করার ব্যাপারে আগ্রহী ছিলেন বা আছেন উপস্থাপকের এই প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘বিষয়টি হচ্ছে, যেহেতু এই সিটটা তো তার। রাজনৈতিক নেত্রী হিসেবে এবং যার গায়ে পুরোটাই রাজনীতি আছে, তিনি তো চাইবেনই।’

একাধিক প্রার্থীর বিষয়ে তিনি বলেন, ‘ছোট-খাটো ব্যাপারে তো বিএনপির প্রার্থীদের নমিনেশন বাতিল হয়ে যায়। তাই সাবধানতার সঙ্গে বিএনপি এগুচ্ছে। বিএনপির এমন কোনও নেতা নেই যার বিরুদ্ধে মামলা নেই। এজন্য সাবধানতার সঙ্গে এগুতে হচ্ছে।’

প্রার্থী বাছাই পক্রিয়া নিয়ে তার পর্যবেক্ষণ জানতে চাইলে তৈমূর আলম খন্দকার বলেন, ‘দল নেতা হাওলাত (ধার) করবে না। দল নেতৃত্ব সৃষ্টি করবে। রাজনৈতিক কর্মীরা যাতে রাজনীতি করত পারে, সেটা আমি চাই। যার যে কাজ, সে সেটা করবে। তৃণমূলের নেতা নমিনেশন পেলে আমি খুশি। দল গিয়ারআপ হোক। এতে নেতাকর্মীরা উৎসাহী হয়।’

উল্লেখ্য, বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর শপথ না নেওয়ায় শূন্য ঘোষিত বগুড়া-৬ আসনের উপনির্বাচন আগামী ২৪ জুন অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচন কমিশন ৮ মে এই নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করে। এর আগে মির্জা ফখরুল শপথ না নেওয়ায় ৩০ এপ্রিল আসনটি শূন্য ঘোষণা করেন স্পিকার। সংবিধান অনুযায়ী শূন্য ঘোষণার ৯০ দিনের মধ্যে নির্বাচনের বাধ্যবাধকতা রয়েছে।