‘ক্লোজড ডোর’ বৈঠকের তথ্য বের হওয়ায় মির্জা ফখরুলের ক্ষোভ

 

বিএনপির স্থায়ী কমিটির বৈঠকবিএনপির স্থায়ী কমিটির বৈঠকের তথ্য বের হয়ে যাওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। শনিবার (২২ জুন) বিকাল সাড়ে ৫টা থেকে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত গুলশানে দলটির স্থায়ী কমিটির বৈঠকে মির্জা ফখরুল এ ক্ষোভ প্রকাশ করেন। বৈঠক সূত্রে এই তথ্য জানা গেছে।

বৈঠক সূত্রে জানা যায়, গত ১৫ জুন স্থায়ী কমিটির বৈঠকে কার সিদ্ধান্তে দলীয় সংসদ সদস্যরা শপথ নিয়েছেন, এ বিষয়ে নিয়ে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সঙ্গে ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদের বাকবিতণ্ডা হয়। পরে ১৭ তারিখ বিভিন্ন দৈনিকে তাদের কথোপকথন হুবহু ছাপা হয়। শনিবার স্থায়ী কমিটির মুলতবি বৈঠক শুরু হলে একপর্যায়ে এ বিষয়ে কথা তোলেন মির্জা ফখরুল। তিনি প্রশ্ন করেন, আমাদের ‘ক্লোজড ডোর’ বৈঠকের তথ্য কীভাবে প্রচার হলো?

বৈঠকে উপস্থিত স্থায়ী কমিটির দুই জন সদস্য জানান, বৈঠকের একপর্যায়ে মির্জা ফখরুল বলেন−আমাদের ক্লোজড ডোর বৈঠকে অনেক কথা, অনেক সিদ্ধান্ত হয়। এগুলো বাইরে কীভাবে প্রকাশ পায়। যদি বৈঠকের তথ্য বাইরে চলে যায়, তাহলে আর ক্লোজড ডোর বৈঠক করে লাভ কী। এ সময় স্থায়ী কমিটির এক সিনিয়র নেতা বলেন, কেউ হয়তো ব্যক্তিক্ষোভ মেটাতে এসব কথা মিডিয়ায় প্রচার করেছেন। তখন অন্য নেতারাও এ নিয়ে কথা বলতে শুরু করেন। এ সময় তারেক রহমানও স্কাইপে ছিলেন। তবে তিনি কোনও কথা বলেননি। এরপর বৈঠক মুলতবি ঘোষণা করেন মির্জা ফখরুল।

আগামী শনিবার আবারও বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে বলে তিনি জানান।

বৈঠকের বিষয়ে জানতে চাইলে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার জমির উদ্দিন সরকার বলেন, বৈঠকে খালেদা জিয়ার মামলাসহ বিভিন্ন বিষয়ে কথা হয়েছে।

বৈঠকে শেষে সংবাদ সম্মেলনে মির্জা ফখরুল বলেন, আগামী শনিবার আবারও স্থায়ী কমিটির বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। খালেদা জিয়ার মুক্তির আন্দোলন বেগবান করতে দেশের বিভাগীয় শহরগুলোতে আগামী ৪ সপ্তাহ কর্মসূচি পালন করা হবে।

বৈঠক সূত্রে জানা যায়, বৈঠকের শুরুতে স্থায়ী কমিটির নতুন দুই সদস্য সেলিমা রহমান ও ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকুকে অভিনন্দন জানানো হয়। তারাও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের কাছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন এবং সবার সহযোগিতা কামনা করেন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থায়ী কমিটির এক নেতা জানান, বৈঠকে খালেদা জিয়ার মামলার বিষয়ে কথা তোলেন ব্যারিস্টার জমির উদ্দিন সরকার। তিনি বলেন, আইনি প্রক্রিয়ায় খালেদা জিয়ার জামিন হবে আশা করা যায়। আইনজীবীরা সেভাবেই এগোচ্ছেন। আমাদের তাড়াহুড়ো না করে বুঝে-শুনে এগোতে হবে। তাহলে খুব শিগগিরই জামিন পাবেন তিনি (খালেদা জিয়া)। এ কথায় তারেক রহমানসহ অন্য নেতারাও একমত প্রকাশ করেন।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে জমির উদ্দিন সরকার বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, সরকার বাধা না দিলে অনেক আগেই ম্যাডাম খালেদা জিয়ার জামিন হয়ে যেতো। আমরা আশা করি সরকার বাধা না দিলে তিনি খুব তাড়াতাড়ি জামিন পাবেন।

বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, ব্যারিস্টার জমির উদ্দিন সরকার, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ড. আবদুল মঈন খান, লে. জে. (অব) মাহবুবুর রহমান, নজরুল ইসলাম খান, আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী, সেলিমা রহমান, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু।