গুজব সৃষ্টিকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা: ড. আব্দুর রাজ্জাক

দলের বিশেষ বর্ধিত সভায় বক্তব্য রাখছেন কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাকঅসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশে গুজব ছড়িয়ে সাম্প্রদায়িক রাষ্ট্র বানানোর অপচেষ্টা চলছে বলে অভিযোগ করেছেন কৃষিমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ড. আব্দুর রাজ্জাক। তিনি বলেন, ‘যারা এ ধরনের গুজব সৃষ্টি এবং প্রচারের সঙ্গে জড়িত, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

বুধবার (২৪ জুলাই) বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউতে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের বিশেষ বর্ধিত সভায় তিনি এসব কথা বলেন।    

কৃষিমন্ত্রী বলেন, ‘যারা নানা রকম গুজব ছড়িয়ে দেশকে অস্থিতিশীল করতে চাইছেন, তারা সফল হবেন না। আমরা মানবতায় বিশ্বাস করি, ধর্মান্ধতায় নয়। এখানে ধর্মান্ধতার কোনও স্থান নেই। যারা ধর্মকে পুঁজি করে জঙ্গিদের মতো গুজব সৃষ্টি ও দেশকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করছেন, তাদের আমরা কঠোরভাবে দমন করবো। গুজব সৃষ্টিকারীরা সফল হবেন না।’        

সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের কাছে প্রিয়া সাহা নামে এক বাংলাদেশি নারী সংখ্যালঘু নিয়ে অভিযোগ করেন। তাকে উদ্দেশ করে ড. রাজ্জাক বলেন,  ‘প্রিয়া সাহা ডিসঅ্যাপিয়ার্স শব্দের অর্থ জানেন? নিশ্চয়ই জানেন না। তিনি ট্রাম্পের কাছে যে সংখ্যার কথা বলেছেন, সেটা প্রমাণ করতে পারবেন? আওয়ামী লীগ কোনোদিন সাম্প্রদায়িকতাকে প্রশ্রয় দেয় নাই। সবাই মিলে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে যুদ্ধ করে দেশ স্বাধীন করেছি। দেশ গঠনেও নানা দফতরে নানা ধর্মের মানুষ মিলেমিশে কাজ করছি। এখানে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় রেখে চলেছি।’       

আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর অন্যতম এই সদস্য বলেন, ‘সারাদেশে বন্যা, বানভাসি ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের পাশে রয়েছে আওয়ামী লীগ। আমরা টিম-ভিত্তিক কাজ করছি।  মানুষের পাশে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছি। বিএনপি নেতা রুহুল কবির রিজভীর এ সংক্রান্ত এক অভিযোগের জবাবে ড. রাজ্জাক চ্যালেঞ্জ দিয়ে বলেন, ‘আওয়ামী লীগের সময় কোথাও কেউ না খেয়ে মরেনি। সিডর, আইলাসহ নানা সংকটে দুর্গত মানুষের পাশে ছিল আওয়ামী লীগ। কিন্তু বিএনপিকে তো পাওয়া যায়নি।’

বিভিন্ন নির্বাচনে দলের বিদ্রোহী প্রার্থীদের নিয়ে তৃণমূলে ভুল বুঝাবুঝির সৃষ্টি হয়েছে উল্লেখ করে আওয়ামী লীগের সংসদীয় বোর্ডের এই সদস্য বলেন, ‘ছোটোখাটো কোন্দল ও দ্বন্দ্ব তৈরি হয়েছে। বিদ্রোহীদের সতর্ক করাসহ তৃণমূলের নানা সমস্যার সমাধান করে দলকে সুসংগঠিত করতে নেত্রী (শেখ হাসিনা) টিম করে দিয়েছেন। আমরা কাজ করছি। আজকের এই সভাও তারই অংশ হিসেবে আয়োজন করা হয়েছে। এটি আমাদের প্রথম সভা।’

‘সামনে ঢাকা সিটির নির্বাচন, উল্লেখ করে দলের অন্যতম এই নীতি-নির্ধারক বলেন, ‘এ নির্বাচনেই প্রমাণ হবে মূলত মহানগর আওয়ামী লীগ কতটা সুসংগঠিত ও শক্তিশালী। মহানগরে ওয়ার্ড ও থানার কমিটি নিয়ে অনেকের ক্ষোভ আছে। ভুল বুঝাবুঝি সৃষ্টি হয়েছে। এগুলোও আলোচনায় আসতে পারে। আপনারা বলবেন। তবে কাউকে আঘাত করা যাবে না। ভুলত্রুটি থাকতেই পারে।’     

ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সভাপতি আবুল হাসনাতের সভাপতিত্বে বর্ধিত সভায় আরও বক্তব্য রাখেন— আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, সাবেক খাদ্যমন্ত্রী অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র সাঈদ খোকন, দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহে আলম মুরাদ প্রমুখ।