সৎ ছিলাম, সৎ আছি: মেনন

 রাশেদ খান মেনন

নিজের সততার পরীক্ষার কোনও প্রয়োজন আছে বলে মনে করেন না ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন। তিনি বলেন, ‘আমি সৎ ছিলাম, সৎ আছি। আমি অনেক লড়াই ও কালের সাক্ষী। হয়তো সেই চলার পথে আমাদের অনেক ভুল-ভ্রান্তি আছে। কিন্তু, একটি কথা বলতে চাই, আমরা সাহস হারাইনি। আমার কমরেডরা এখনও মাঠে লড়ছেন।’

শনিবার (২ নভেম্বর) রাজধানীর রমনা ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনে ওয়ার্কার্স পার্টির কংগ্রেসের অধিবেশনে তিনি এসব কথা বলেন।

সাবেক এই মন্ত্রীর অভিযোগ, আজ  যখন বাংলাদেশে দুর্নীতির বিরুদ্ধে শুদ্ধি অভিযান চলছে, আমি ঢাকা-৮ আসনের এমপি, এই আসন ঘিরেই ক্যাসিনো কাণ্ড তোলপাড়, অথচ পত্রিকায় মিথ্যা সূত্র উদ্ধৃতি দিয়ে ক্যাসিনো কাণ্ডের সঙ্গে আমাকেও জড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে।

মেনন বলেন, ‘কথাও বলতে পারছি না। ঋণখেলাপির বিরুদ্ধে কথা বলবো, বললে পার্লামেন্টে নোটিশ গ্রহণ করা হয় না। গ্যাসের দাম বৃদ্ধি করার কথা বললে আলোচনা হয় না, হতে পারে না। এটাই হচ্ছে বাস্তব। সব মতকে এগিয়ে আসতে দিন। মতপ্রকাশের অধিকার দিয়ে দৃঢ়ভাবে প্রস্তুত করুন ডিজিটাল বাংলাদেশ।’

থাইল্যান্ডের জঙ্গলে বাংলাদেশের মানুষের গণকবর আবিষ্কৃত হয় জানিয়ে মেনন আরও বলেন, ‘মালয়েশিয়ার রাবার বাগানে আমার দেশের তরুণরা মরেন। অথচ তাদের রেমিট্যান্স নিয়ে বলি আমরা দারুণ রেকর্ড করেছি।’

আমাদের ৩৩ বিলিয়ন ডলার রিজার্ভের মূল অংশ গরিব মানুষের কাছ থেকে আসে বলে উল্লেখ করে সাবেক এই মন্ত্রী বলেন, ‘তরুণরা বিদেশে গিয়ে টাকা উপার্জন করে দেশে পাঠান। কোনও প্রফেশনাল কিংবা বড়লোকের দল তো টাকা পাঠায় না। আগে ২২ পরিবার এ দেশ থেকে টাকা পাকিস্তানে নিতো। এখনও বাংলাদেশের টাকা দেশে থাকে না, বিদেশে চলে যায়। খোঁজ নিন, তালিকা তৈরি করুন কারা কানাডায় বাড়ি বানিয়েছেন, কারা সেকেন্ডহোম বানিয়েছেন।’

মেননের বিরুদ্ধে আদর্শচ্যুতির অভিযোগ তুলে দল ত্যাগ করা সাত নেতার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আমাদের নৌকায় তুলে দিয়ে এখন তারা বলছেন, তারা নৌকা মানেন না। নতুন ঐক্যের কথা বলছেন। আমি তাদের বলতে চাই, ওয়ার্কার্স পার্টিই একমাত্র প্রাসঙ্গিক বামপন্থী দল। আমাদের কিছু বন্ধু, আমার মতাদর্শ বিচ্যুতির কথা বলেছেন। কমিউনিস্ট আন্দোলনের শতবর্ষে কমিউনিস্ট ঐক্যের কথা বলছেন। আমি বলছি, চক্রান্ত করে, ষড়যন্ত্র করে আর যাই হোক, ঐক্য হয় না। কমিউনিস্ট ঐক্য দূরে থাক, কোনও গণতান্ত্রিক ঐক্যও হয় না, ঐক্য হয় রাজপথের লড়াইয়ে।’

জাতীয় সঙ্গীত ও দলীয় সঙ্গীতের মধ্য দিয়ে কংগ্রেস উদ্বোধন করেন রাশেদ খান মেনন ও সাধারণ সম্পাদক ফজলে হোসেন বাদশা। এবারের কংগ্রেসে ৫৮টি জেলা থেকে ৭৫০ জন প্রতিনিধি অংশ নিয়েছেন।