শনিবার (২১ ডিসেম্বর) রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে আওয়ামী লীগের ২১তম জাতীয় সম্মেলনের কাউন্সিল অধিবেশনে বক্তব্যকালে জেলার নেতারা এসব কথা বলেন। দলীয় সভাপতি শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে এই কাউন্সিল অধিবেশন অনুষ্ঠিত হয়।
এতে রংপুর, রাজশাহী, খুলনা, বরিশাল ও সিলেট বিভাগের একজন করে এবং চট্টগ্রাম বিভাগের দুজন বক্তব্য রাখেন। ঢাকা ও ময়মনসিংহ বিভাগের কেউ বক্তব্য দেননি। মূলত জেলা সংগঠনগুলোর মধ্যে থেকে যেসব জেলায় সম্প্রতি সম্মেলন হয়েছে, তাদের মধ্য থেকে বাছাই করে বক্তব্য দেওয়ার সুযোগ দেওয়া হয়।
সম্মেলনে ঠাকুরগাঁও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সাদেক কোরাইশি বলেন, শেখ হাসিনার মিশন ও ভিশন বাস্তবায়নে সংগঠনকে আরও শক্তিশালী করতে হবে। তিনি ঠাকুরগাঁওয়ে একটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার দাবি জানান।
রাজশাহী জেলার সভাপতি মেরাজ মোল্লা বলেন, শেখ হাসিনার ডাকে সাড়া দিয়ে আমরা সংসদ সদস্য থেকে শুরু করে সবাই সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করলে বাংলাদেশ এতদিনে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা হয়ে যেতো। আর এটা না হওয়ার জন্য রাজনৈতিক নেতাকর্মীরা ছাড়াও সরকারের কর্মচারীরা দায়ী বলে মন্তব্য করেন তিনি।
তিনি বলেন, যারা ২০০৮ সালের পর আওয়ামী লীগে এসেছে সেই হাইব্রিডদের কমিটি থেকে বাদ দিতে হবে।
খুলনা মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট সুজিত অধিকারী বলেন, এই সম্মেলন থেকে নেত্রীর (শেখ হাসিনা) কাছে প্রতিশ্রুতি দিতে চাই, জীবনের শেষ রক্তবিন্দু দিয়ে হলেও সংগঠনকে শক্তিশালী করতে যা যা প্রয়োজন তা করে যাবো।
দলীয় প্রধানকে উদ্দেশ করে তিনি বলেন, দল ও দলের পদকে যেন কেউ উপার্জন বা ব্যক্তিগত স্বার্থে ব্যবহার করতে না পারে, সেই ব্যবস্থা করতে হবে।
সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি মাসুক উদ্দিন আহমেদ বলেন, রাজনৈতিক জীবনে নেত্রীর নির্দেশের বাইরে একচুল পরিমাণও পা বাড়াইনি। আমরা উনার কাছে কিছু চাই না। আমরা চাই আল্লাহ যেন উনাকে বাঁচিয়ে রাখেন। উনি বেঁচে থাকলে কাউকে কিছু চাইতে হবে না।
তিনি বলেন, অনুপ্রবেশকারীরা সুকৌশলে আমাদের মধ্যে ঢুকে পড়েছে। তারা আমাদের নীতি ও আদর্শ থেকে বিচ্যুত করার পাঁয়তারা করছে। দলে অনুপ্রবেশকারীদের স্থান দিয়ে আমাদের মধ্যে যারা সহযোগিতা করছে, যারা রাজাকার-আলবদরদের সহযোগিতা করছে, তাদের চিহ্নিত করতে হবে। তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নিতে হবে।
তিনি আশা প্রকাশ করে বলেন, সঠিকভাবে কাজ করতে পারলে এবং কাজের পরিবেশ পেলে যেকোনও জেলার চেয়ে সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগকে শক্তিশালী ও দুর্নীতিমুক্ত করতে পারবো।
তিনি দলীয় সভাপতির প্রতি অনুরোধ জানিয়ে বলেন, রাজাকাররা যেন মুক্তিযোদ্ধা এবং মুক্তিযোদ্ধারা যেন রাজাকারদের তালিকায় না যায়, সেটা দেখতে হবে।
কুমিল্লা উত্তর জেলার সভাপতি রুহুল আমিন বলেন, আমরা কুমিল্লা উত্তর জেলা অনেক কষ্টে আছি, ঝামেলার মধ্যে আছি। অপ্রিয় হলেও সত্য, ১৯৯২ সালে প্রতিষ্ঠার পর থেকে এখন পর্যন্ত আমরা এই জেলার সংগঠনকে সাজাতে পারিনি।
জেলার সংগঠনকে ঢেলে সাজানোর প্রতিশ্রুতি দিয়ে তিনি বলেন, আলবদর-রাজাকার যারা সংগঠনের মধ্যে ঢুকে পড়েছে, তাদের আর রাখবো না।
অন্যদের মধ্যে পটুয়াখালী জেলার সভাপতি কাজী আলমগীর হোসেন ও বান্দরবান জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি কশৈহ্লা বক্তব্য রাখেন।