শুক্রবার (১৭ জানুয়ারি) জাতীয় প্রেসক্লাবের মিলনায়তনে বাংলাদেশ সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদ আয়োজিত ‘নির্বাচনে আস্থাহীনতা, ইভিএম’র ব্যবহার: বর্তমান প্রেক্ষাপট’ শীর্ষক এক গোলটেবিল বৈঠকে তিনি এসব কথা বলেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমরা প্রতি মুহূর্তেই আন্দোলনের মধ্যে আছি। আমরা যখন ভোটে যাই, সেটাও আন্দোলনের অংশ। আমরা যখন এখানে আলোচনা করি সেটাও আন্দোলনের অংশ। সবকিছু নিয়ে আমরা একটা গণতান্ত্রিক আন্দোলনের দিকে যাওয়ার চেষ্টা করছি। ভুল-ত্রুটি আছে, থাকতেই পারে। তাও প্রতি মুহূর্তে আমরা চেষ্টা করে যাচ্ছি সফলতার জন্য।’
তিনি বলেন, ‘নির্বাচনের সংকটই সংকট নয়। সংকট সামগ্রিকভাবে সারাদেশের। বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকেই একে একে গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলো অত্যন্ত সুকৌশলে, সুপরিকল্পিতভাবে, সুচিন্তিতভাবে ধ্বংস করে দিয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘বিএনপি শুরু থেকে একটা লিবারেল ডেমোক্রেটিক পলিটিক্যাল পার্টি। এ পার্টির যে নিজস্ব চরিত্র আছে, সে চরিত্র নিয়ে সামনের দিকে আগাচ্ছে। বিশ্ব রাজনীতির যে পরিবর্তন হয়েছে সেগুলোকে সামনে রেখে আমাদের এগিয়ে যেতে হবে। হটকারী সিদ্ধান্ত নিয়ে সামনে আগানো যাবে না। জনগণকে সঙ্গে নিয়ে এই দানবকে পরাজিত করতে হবে। এই কথাটি আমরা সব জায়গায় বলেছি। সুখে থাকার, আরামে থাকার মানুষগুলো রাস্তায় নামে না। রাস্তায় নামে কর্মীরা।’
‘৩০ তারিখের ভোট কোনও ভোট নয়’
গোলটেবিল বৈঠকে নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, ‘আগামী ৩০ তারিখের ভোট কোনও ভোট নয়। ওই তারিখে ধানের শীষ জিততে পারবে না। ওরা জিততে দেবে না। যদি ভোট হতো তাহলে নৌকারই খবর থাকতো না। সেই জন্যই সমস্ত বুদ্ধি-শুদ্ধি করেছেন তারা।’
তিনি আরও বলেন, ‘ফখরুল ভাইয়ের সঙ্গে কর্মী হিসেবে কাজ করতে রাজি আছি। কিন্তু পুতুপুতু করে কোনও রাজনীতি হবে না। ২০১৮ সালের ভোট চুরি করেছে, ডাকাতি করেছে, ছেড়ে দিয়েছি। এবার কিন্তু ছাড়বো না।’
ইভিএম প্রসঙ্গে মান্না বলেন, ‘ইভিএম যে একটা গজব এটা আমরা সবাই বুঝি। মানুষ যা তৈরি করে তার নিজের জন্য তৈরি করে। নির্বাচন কমিশনকে পেছন থেকে কেউ ইভিএম আমদানি করিয়েছে। ওদের নিজেদের জন্য। ২০১৮ সালের ভোটের নামে যে ডাকাতি হয়েছে আর এখন যে ভোট হচ্ছে একই কায়দায় করার সুযোগ নাই। অতএব তারা ভিন্ন একটা পথ নিয়েছে। ওই ভাবে যদি তারা ভোট করতে যেত তাহলে পুলিশকে ম্যানেজ করতে হয়, বিজিবি-আর্মি যা যা আছে সবাইকে টাকা-পয়সা দিতে হয়, রাতের বেলা বিরিয়ানি খাওয়াতে হয়, পার্টি দিতে হয়, এটা লজ্জার ব্যাপার। তাই তারা একটি মেশিন বের করেছে। এইটা দিয়ে তারা সমস্ত দায় মেশিনের ওপরে দেবে। আপনি বলতে পারবেন না ওরা কেড়ে নিয়ে গেছে।’
গোলটেবিল বৈঠকে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপক ড. মো. আখতার হোসেন। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক শওকত মাহমুদ প্রমুখ।