করোনা নয়, ভোটারদের ভয় তিন কারণে: শেখ রবি

বিএনপি প্রার্থী শেখ রবিউল আলমঢাকা-১০ আসনের উপনির্বাচনে ভোটারদের স্বতঃস্ফূর্তভাবে ভোট দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপির প্রার্থী শেখ রবিউল আলম। তিনি বলেন, ‘ভোটাররা করোনা ভাইরাস নিয়ে ভয় বা আতঙ্কে নেই। তারা সরকার, প্রশাসন ও নির্বাচন কমিশন, এ তিন নিয়ে ভয়ে আছে। এরা ভোট থেকে বঞ্চিত করবে কিনা, এ নিয়েই ভোটারদের সংশয়।’ সোমবার সন্ধ্যায় (১৬ মার্চ) রাজধানীর বাংলামোটরে নিজ নির্বাচনি কার্যালয়ে এসব কথা বলেন তিনি।

বিএনপির এই প্রার্থী বলেন, ‘আমি ভোটারদের কাছে গিয়েছি। তাদের ভয় সরকার, প্রশাসন ও নির্বাচন কমিশন তাদের ভোট থেকে বঞ্চিত করবে কিনা, তা নিয়ে। কারণ ভোটারদের অভিজ্ঞতা হচ্ছে, তারা পছন্দের যে প্রার্থীকে ভোট দিতে চান, তাদের সামনে সেই ভোট ইভিএমের মাধ্যমে অন্য কাউকে দিয়ে দেওয়া হচ্ছে। আবার কখনও দেখা যায়, ভোটারদের ভোট অন্য কেউ দিয়ে দিচ্ছে। এমন হতে পারে নৌকা মার্কার প্রার্থীর জয় আগে থেকেই নির্ধারণ করে রাখা আছে, এই ধরনের একটি নির্বাচনি ব্যবস্থা বর্তমানে দেশে বিরাজ করছে।’

বাংলাদেশে করোনা ভাইরাস নিয়ন্ত্রিত অবস্থায় রয়েছে উল্লেখ করে রবিউল বলেন, দল হিসেবে আমরাও মানুষকে করোনা নিয়ে সচেতন করছি। ইতোমধ্যে মানুষ নিজ উদ্যোগেও সচেতন হয়েছে। যে মাত্রায় দেশে করোনা আক্রান্ত রোগী আছে তাতে নির্বাচন পিছিয়ে দিতে হবে, এমন কোনও যুক্তি নেই। করোনার মহামারি আকারে ছড়িয়ে না পড়লে যথাসময়ে নির্বাচন হওয়া প্রয়োজন। কারণ নির্বাচন যথাসময়ে হওয়ার জন্য সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতা আছে। এখনও ভোট দেওয়ার পরিবেশ রয়েছে। ইতোমধ্যে প্রার্থীরা প্রচার-প্রচারণাও করছেন। ফলে এই নির্বাচন পেছানো বা স্থগিতের কোনও প্রয়োজন আছে বলে মনে করি না।

বিএনপি ভোটকেন্দ্রে পোলিং এজেন্ট দিতে পারে না, এমন কথা ঠিক নয় দাবি করে রবিউল আলম অভিযোগ করেন, ‘আমাদের এজেন্টদেরকে কেন্দ্র থেকে বের করে দেওয়া হয়। এটি সরকারি দল, নির্বাচন কমিশন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী যৌথভাবে করছে। আমাদের কর্মীকে গ্রেফতারের ভয় দেখানো হয়। প্রশাসন ও নির্বাচন কমিশনের দায়িত্ব হচ্ছে কেন্দ্রে এজেন্ট রাখা, কিন্তু তারাই বলে আপনারা কেন কেন্দ্রে আছেন বেরিয়ে যান, না হলে গ্রেফতার হবেন। আসলে আওয়ামী লীগ যে নির্বাচনের ফলাফল ম্যানুপুলেট করে, তার থেকে দৃষ্টি অন্যদিকে নিতে এই ধরনের অপপ্রচার চালানো হয়।’

নির্বাচনি কার্যালয়ে বিএনপি প্রার্থী শেখ রবিউল ইসলামধানের শীষের প্রার্থী আরও বলেন, আওয়ামী লীগের লোকজন শতাধিক লোক নিয়ে গিয়ে আমাদের এজেন্টদের বের করে দেন, এখন আমি যদি পাঁচশ’ লোক নিয়ে তা প্রতিহত করতে চাই, তাহলেতো দাঙ্গা হবে। সেটা তো রাষ্ট্রের জন্য ভালো হবে না। নির্বাচনি ব্যবস্থা হচ্ছে মানুষ নির্ভয়ে উৎসবমুখর পরিবেশে ভোট দিতে যাবে। সব দলের প্রার্থীর এজেন্ট থাকবে।

ঢাকা-১০ আসনের এলাকার জনগণের সমস্যা চিহ্নিত করা হয়েছে উল্লেখ করে রবিউল আলম আরও বলেন, নির্বাচিত হলে সিটি করপোরেশনসহ যেসব সংস্থা এর সঙ্গে জড়িত তাদেরকে বাধ্য করবো সমস্যা সমাধান করতে। এই আসনের জনগণের যে অধিকার আছে তা প্রতিষ্ঠা করার জন্য ও দেশে সুশাসন প্রতিষ্ঠার জন্য সংসদে কাজ করবো।

দেশে গণতন্ত্র, সুশাসন ও মানুষের রাজনৈতিক অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে বিএনপি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে বলে মন্তব্য করেন রবিউল। তিনি বলেন, আমরা যদি নির্বাচন বর্জন করি একদিন সরকার এই নির্বাচনি ব্যবস্থাকে বিলুপ্ত করে দেবে। এখন তো নির্বাচন ব্যবস্থা অকার্যকর, কিন্তু বিএনপি অংশ না নিলে এক সময় সরকার বলবে কিসের নির্বাচন?

মানুষ ভোট দিতে পারলে নিজের জয়ের বিষয়ে আশাবাদ জানান শেখ রবিউল।