বাজেট বাস্তবায়ন নিয়ে ‘সংশয়’ জামায়াতের

মিয়া গোলাম পরওয়ারচলতি অর্থবছরের বাজেট পরিপূর্ভভাবে বাস্তবায়ন না করায় প্রস্তাবিত ২০২০-২১ অর্থবছরের বাজেটও সরকার কীভাবে বাস্তবায়ন করবে, তা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছে জামায়াতে ইসলামী। বৃহস্পতিবার (১১ জুন) সন্ধ্যায় গণমাধ্যমে পাঠানো বিবৃতিতে দলটির সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার দলের এ অবস্থান ব্যক্ত করেন।

বিবৃতিতে জামায়াত নেতা গোলাম পরওয়ার জানান, অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল যে বাজেট প্রস্তাব করেছেন, তা উচ্চাকাঙ্ক্ষী ও ঋণনির্ভর।

গোলাম পরওয়ার বলেন, ‘বাজেটে প্রবৃদ্ধির হার ধরা হয়েছে ৮ দশমিক ২ শতাংশ, আর বাজেট ঘাটতি হচ্ছে জিডিপির প্রায় ৬ শতাংশ। মূল্যস্ফীতি ধরা হয়েছে ৫ দশমিক ৪ শতাংশ। প্রস্তাবিত বাজেট এবং প্রবৃদ্ধির হার বাস্তবতা বিবর্জিত ও কল্পনানির্ভর। বাজেটে আয় ও ব্যয়ের মধ্যে বড় ব্যবধান রয়েছে।’

সাবেক এই এমপি মনে করেন, প্রস্তাবিত বাজেটের মাধ্যমে সরকারের ব্যাংকনির্ভরতা আরও বৃদ্ধি পাবে।

মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, ‘চলতি অর্থবছরের ১১ মাসে সরকার ব্যাংক থেকে প্রায় একলাখ কোটি টাকা ঋণ নিয়েছে। করোনাভাইরাসের কারণে সরকার ১৯টি প্যকেজে একলাখ ৩ হাজার ১১৭ কোটি টাকার আর্থিক প্রণোদনা ঘোষণা করেছে, যা সরবরাহের দায়িত্ব মূলত ব্যাংকগুলোর। ব্যাংকগুলোতে এমনিতেই তারল্য সংকট রয়েছে। বাজেটে ব্যাংক থেকে  ৮৪ লাখ ৯ হাজার ৮০ কোটি টাকা ঋণ নেওয়ার প্রস্তাব করা হয়েছে। এ প্রস্তাবের মাধ্যমে ব্যাংকিং খাতকে আরও সংকটের দিকে ঠেলে দেওয়া হবে। সরকারের প্রস্তাবিত এ বাজেটে দেশের আর্থিক শৃঙ্খলা আরও ভেঙে পড়বে।’

তিনি অভিযোগ করেন, বিশ্বব্যাংক এবারের প্রবৃদ্ধি ১.৬ শতাংশ এবং আগামী অর্থবছরে তা কমে ১ শতাংশে আসতে পারে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে। অর্থমন্ত্রী তা গোপন রেখে প্রবৃদ্ধি ৮.২ শতাংশের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে তা কাগুজে সক্ষমতায় পরিণত করেছেন ও জাতিকে মিথ্যা আশারবাণী শুনিয়েছেন। বাস্তবে ৮.২ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অসম্ভব।

বিবৃতিতে গোলাম পরওয়ার বলেন, ‘প্রবাসীদের মধ্যে যারা কর্মহারা হয়ে দেশে প্রত্যাবর্তন করছেন, তাদের পুনর্বাসনে বাজেটে কোনও দিক নির্দেশনা নেই।’

তিনি দাবি করেন, করোনাভাইরাস পরিস্হিতি ও বাস্তবতার নীরিখে করমুক্ত আয়ের সীমা অন্তত ৪ লাখ টাকা হওয়া উচিত। নারীদের জন্য আয়মুক্ত করসীমা সাড়ে ৪ লাখ টাকা করা দরকার বলে আমরা মনে করি।

পরওয়ার জানান, সরকার গত বছর রাজস্ব আয়ের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে পারেনি। রাজস্ব আয়ের প্রবৃদ্ধি ধরা হয়েছে ৫০ শতাংশ। করোনাকালে এটা ৫০ শতাংশ প্রবৃদ্ধির প্রস্তাব অবাস্তব এবং এবারও তা অর্জন করতে পারবে না বলে মনে করেন তিনি।

জাকাতের টাকা করমুক্ত করা প্রয়োজন বলে দাবি করেন মিয়া গোলাম পরওয়ার। তিনি বলেন, ‘সরকারের প্রস্তাবিত বাজেট জনবান্ধব নয়। প্রস্তাবিত বাজেটে দেশের সীমিত আয়ের বৃহৎ দরিদ্র জনগোষ্ঠীর স্বার্থককে উপেক্ষা করা হয়েছে।’