পত্রিকার সংবাদ দেখে ঐক্যফ্রন্ট বুঝতে পেরেছে প্রস্তাবিত বাজেট ‘দেউলিয়া’

জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট

প্রস্তাবিত ২০২০-২১ অর্থবছরের বাজেট নিয়ে যা ভেবেছিল, তা-ই- এখন স্পষ্ট হয়েছে বলে মনে করে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট।  শুক্রবার (১৯ জুন) বিকালে গণমাধ্যমে পাঠানো বাজেটের প্রতিক্রিয়ামূলক বিবৃতিতে বলা হয়, ‘প্রথমে ভাবছিলাম, পুরো বাজেটে এক-তৃতীয়াংশই হলো ঘাটতি, যা জিডিপির ৬ শতাংশ। কিন্তু এখন পত্রিকান্তরে প্রকাশিত অর্থ মন্ত্রণালয়ের অভ্যন্তরীণ রিপোর্ট দেখার পরে আমরা স্পষ্ট বুঝতে পেরেছি যে, এই বাজেট সম্পর্কে আমরা যে কথা ইতোমধ্যে বলেছিলাম, সেটাই সঠিক। অর্থাৎ এটা সরকারের পুরো দেউলিয়া বাজেট।’

ঐক্যফ্রন্টের বিবৃতিতে বলা হয়, সরকারকে আগামী বছর ঋণ নিতে হবে সাকুল্যে পাঁচ লাখ ৭১ হাজার কোটি টাকা, যেখানে আগামী অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট হলো পাঁচ লাখ ৬৮ হাজার কোটি টাকার, অর্থাৎ ঋণ হলো বছরের সর্বমোট বাজেট বরাদ্দের চেয়েও বেশি।’

জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের দফতরের দায়িত্বপ্রাপ্ত জাহাঙ্গীর আলম মিন্টু স্বাক্ষরিত বাজেট-বিবৃতিতে ড. কামাল হোসেন, আ স ম আবদুর রব, ড. আবদুল মঈন খান, মাহমুদুর রহমান মান্না,  ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী, ড. রেজা কিবরিয়া ও অধ্যাপক ড. নূরুল আমিন বেপারীর নাম উল্লেখ করা হয়। 

বিবৃতিতে বলা হয়, বাংলাদেশের অর্থনীতির এই মারাত্মক পরিস্থিতি গত ৫০ বছরের ইতিহাসে কখনও হয়েছে বলে ঐকফ্রন্ট নেতাদের জানা নেই।

এতে দাবি করা হয়, বাংলাদেশের প্রতিটি শিশু জন্মের সময়ই এখন প্রায় ৬০ হাজার টাকার ঋণ নিয়ে জন্মায়। সেক্ষেত্রে এই অবস্থা চলমান থাকলে আগামী বছর শেষে নবজাত শিশুর ওপর ঋণের বোঝা চাপবে অন্তত একলাখ টাকা।

ঐকফ্রন্টের বিবৃতিতে প্রশ্ন তোলা হয়, আগামী প্রজন্মকে আপাদমস্তক ঋণবন্দি করার অধিকার আজকের সরকারকে কে দিয়েছে? তবে বাজেট প্রস্তাবের জন্য অর্থমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানানো হয় বিবৃতিতে।

বিবৃতিতে বাজেটের মূল লক্ষ্য কী হবে, এ নিয়ে কয়েকটি প্রস্তাব উল্লেখ করা হয়। বলা হয়, ‘আগামী বছরের যে বাজেটটি আসছে, সেটা এক ধরনের আপৎকালীন বাজেট এবং আমরা যদি সেটাকে আপৎকালীন বাজেট বলেই চিহ্নিত করতাম, আমাদের মনে হয় মানুষের আস্থা ফিরিয়ে আনার জন্য সেটা ভালো হতো। কিন্তু তা করা হয়নি। দ্বিতীয়ত, করোনা পরিস্থিতির কারণে আরও  প্রায় ২০ শতাংশ মানুষ দারিদ্রসীমার নিচে চলে এসেছে, তা বাজেটের মূল লক্ষ্যে অনুপস্থিত।’

বিবৃতিতে বলা হয়, ‘আগামী বাজেটের মূল লক্ষ্য হওয়া উচিত কর্মজীবী/শ্রমজীবী স্বল্প আয়ের মানুষ, প্রান্তিক কৃষক, নারী ও সুবিধাবঞ্চিত জনগোষ্ঠী এবং দারিদ্রসীমার নিচে বসবাসকারী মানুষ।’

এতে আরও বলা হয়, ‘আমাদের বর্তমান বাজেটের জন্যে এই পরিস্থিতিতে সরকার যে প্রণোদনা দিয়েছে, প্রথমে ৭২ হাজার ৭৫০ কোটি, পরে ৯২ হাজার ৫০০ কোটি এবং সর্বশেষ আমরা শুনতে পাচ্ছি প্রায় এক লাখ কোটি টাকা। প্রশ্ন হচ্ছে, এই যে অতিরিক্ত প্রণোদনা, এই রিসোর্স কোথা থেকে আসবে।’