‘৭৫-পরবর্তী বাংলাদেশকে পাকিস্তান বানাতে চেয়েছিলেন জিয়া’

আওয়ামী লীগের ওয়েবিনারআওয়ামী লীগ আয়োজিত ওয়েবিনারে বক্তারা বলেছেন, বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর পুরো জাতিকে পাকিস্তানি ভাবধারায় নেওয়ার চেষ্টায় লিপ্ত ছিলেন জিয়াউর রহমান। তিনি হত্যাকাণ্ডের বিচারকাজ বন্ধ করে দেন। তিনি বেতার বাংলাকে পাকিস্তানের আদলে রেডিও বাংলাদেশ করেন। মুক্তিযুদ্ধের স্লোগান ‘জয় বাংলা’কে সরিয়ে ‘বাংলাদেশ জিন্দাবাদ’ স্লোগানের প্রচলন করেন। সর্বোপরি ৭৫ পরবর্তী বাংলাদেশ ছিল অন্ধকার, যার পুরোটা পাকিস্তানের আদলে সাজাতে চেয়েছিলেন জিয়া।

সিনিয়র সাংবাদিক অজয় দাসগুপ্তের সঞ্চালনায় এতে অংশ নেন আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য তোফায়েল আহমদ, সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মতিয়া চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, সভাপতিমণ্ডলীর সাবেক সদস্য ড. নূহ-উল-আলম লেনিন, সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গির কবির নানক, আব্দুর রহমান এবং যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ডা. দীপু মনি।  ‘৭৫-পরবর্তী বাংলাদেশ ও কিছু অজানা কথা’ শীর্ষক শিরোনামে অনুষ্ঠিত হয় এ ওয়েবিনার।

ওয়েবিনারের শুরুতে তোফায়েল আহমেদ বলেন, ‘যার জন্ম না হলে বাংলাদেশের জন্ম হতো না তাকে শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করছি। জাতির পিতা ১২টি বছর কারাগারের অন্ধকার প্রকোষ্ঠে কাটিয়েছেন। তাঁর ত্যাগের বিনিময়ে আমরা পেয়েছি স্বাধীন বাংলাদেশ।‘ তিনি বলেন, ‘জাতির পিতার কন্যা শেখ হাসিনার হাতে ঐক্যের প্রতীক হিসেবে আওয়ামী লীগের পতাকা তুলে দিয়েছিলাম। দীর্ঘ ২১ বছর পরে সেই পতাকা ক্ষমতায় আসলো। এরপরে ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ বাতিল করে জাতির পিতা হত্যাকাণ্ডের বিচার করেন তিনি।’

মতিয়া চৌধুরী বলেন, ‘ছয় দফাকে আমরা সমর্থন দিয়েছিলাম। এরপরে বঙ্গবন্ধু যখন স্বাধীনতার ডাক দিলেন তখন আমরা মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পরলাম। দেশ স্বাধীন হলো, কিন্তু বঙ্গবন্ধুকে দেশ গঠনে বেশি দিন কাজ করতে দেওয়া হলো না। তাকে হত্যা করে প্রতিক্রিয়াশীল শক্তি ক্ষমতা দখল করে। আর তাদের নেতা জিয়াউর রহমান এদেশ থেকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ধ্বংস করে পাকিস্তানি ভাবধারায় ফিরিয়ে নিতে উঠে পড়ে লেগেছিলেন।‘

ভিডিও বার্তায় আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘কোনও ব্যক্তি ও গোষ্ঠীর স্বার্থ সিদ্ধির জন্য যেন জাতীয় শোক দিবসের পরিবেশ বিনষ্ট না হয় এবং আওয়ামী লীগের চিরায়ত ঐতিহ্য ও মূল্যবোধ যাতে ক্ষুণ্ন না হয়।’ বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকীর পটভূমিতে দাঁড়িয়ে জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে আওয়ামী লীগ ঘোষিত কর্মসূচি স্বাস্থ্যবিধি মেনে এবং ভাবগাম্ভীর্যের সঙ্গে পালনের জন্য দেশবাসীকে আহ্বান জানান সেতুমন্ত্রী।

বঙ্গবন্ধুকে পাঁচ বার হত্যাচেষ্টার ঘটনাবলি উল্লেখ করেন নূহ-উল-আলম লেনিন। তিনি বলেন, ‘আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলাসহ নানাভাবে তাকে হত্যা চেষ্টা করা হয়। এরপরে পাকিস্তানি দুই জন নাগরিক দিয়ে হত্যাচেষ্টা চালানো হয়। সবশেষ দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্রে তাকে হত্যা করে পাকিস্তানি ভাবধারায় দেশকে ফিরিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করা হয়, যার মাস্টারমাইন্ড ছিলেন জিয়াউর রহমান।’

জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেন, ‘শেখ হাসিনা ১৯৮১ সালে যদি দেশে ফিরে না আসতেন, তাহলে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসতো না। তাহলে কোনোদিন ১৫ আগস্ট হত্যাকাণ্ডের বিচার হতো না।’

আবদুর রহমান বলেন, ‘সেদিন আমাদের জাতির জনকের হত্যাকাণ্ডের মধ্য দিয়ে আমাদের চেতনাকে হত্যা করা হয়। পাকিস্তানি ভাবধারার রাজনীতির প্রচেষ্টা করা হয়েছিল ৭৫ এর হত্যাকাণ্ডের মধ্য দিয়ে।’

শিক্ষামন্ত্রী ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ডা. দীপু মনি এমপি বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু পরিবার হত্যাকাণ্ডের পরে পুরো জাতিকে পাকিস্তানি ভাবধারায় নেওয়ার চেষ্টায় লিপ্ত ছিলেন জিয়াউর রহমান। ৭৫ পরবর্তী বাংলাদেশ ছিল অন্ধকার। পুরোটা দেশ পাকিস্তানের আদলে সাজাতে চেয়েছিলেন জিয়া।’