যুক্তরাষ্ট্রে র‌্যাব কর্তাদের নিষিদ্ধ হওয়ার ঘটনায় প্রধানমন্ত্রী দায়ী: রিজভী

আইনশৃঙ্খলা বাহিনী র‌্যাবের কয়েকজন কর্মকর্তার যুক্তরাষ্ট্রে নিষিদ্ধ হওয়ার ঘটনায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে দায়ী করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। শনিবার (১১ ডিসেম্বর) জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে এক মানববন্ধনে তিনি এমন মন্তব্য করেন।

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রে একটি গণতন্ত্র সম্মেলন হলো, কিন্তু বাংলাদেশকে ডাকা হয়নি। এবার বাংলাদেশের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ছয় কর্মকর্তার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হলো। লেখাপড়ার ক্ষেত্রে তাদের সন্তানদেরও নিষিদ্ধ করা হয়েছে। শুধু তাই নয়, যুক্তরাষ্ট্রের অর্থ মন্ত্রণালয় ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, আমেরিকায় তাদের অর্থ থাকলে সেগুলো বাজেয়াপ্ত হবে। এর জন্য দায়ী কে? এর জন্য দায়ী আপনি প্রধানমন্ত্রী।’

রুহুল কবির রিজভীর মন্তব্য, ‘র‌্যাব ও এর কর্মকর্তাদের কেন নিষিদ্ধ করেছে যুক্তরাষ্ট্র? কারণ তারা চোখ বন্ধ করে নেই। বাংলাদেশে কী হচ্ছে তারা সবাই দেখছে। ইলিয়াস আলী, চৌধুরী আলমসহ যা‌রা গুম হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রে কি জানে না কেন গুম হয়েছে? কে গুম করেছে? আপনারা (আওয়ামী লীগ) ম‌নে ক‌রে‌ছেন চোখ বন্ধ করলে প্রলয় বন্ধ হয়ে যাবে? কিন্তু চোখ বন্ধ করলে প্রলয় বন্ধ হয় না, সেটা এখন শুরু হয়েছে।’

তথ্যমন্ত্রীর বক্তব্যের প্রসঙ্গ টেনে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী যে শিক্ষা দিচ্ছে, বিএনপি নেতাকর্মীরা তার উল্টোটা শিক্ষা নেবে তাহলে তারা হবে মানবিক, গণতান্ত্রিক এবং তারা জনগণের পক্ষে থাকবে। স্বাধীনতার পক্ষে থাকবে, সার্বভৌমত্বের পক্ষে থাকবে। আর প্রধানমন্ত্রীর শিক্ষা নিলে আমাদের ক্রসফায়ার দেওয়া শিখতে হবে। সন্ত্রাসী হতে হবে। কী করে বৈঠা দিয়ে লাশের ওপর নাচতে হয় সেটা শিখতে হবে। খুন, গুম করা শিখতে হবে। একটার বদলে দশটি লাশ ফেলতে হবে, এটা প্রধানমন্ত্রী বলেননি? তাহলে সত্যিকার অর্থে প্রধানমন্ত্রীর শিক্ষা নিলে আমাদের তো তাই করতে হবে। বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় সন্ত্রাসী হতে হবে। তার বিপরীত শিক্ষা নিলে বলবে কোনও লাশ নয়। এ দেশের প্রতিটি রাজনৈতিক দলের রাজনৈতিক, মিছিল করা ও কথা বলার অধিকার আছে।’

রুহুল কবির রিজভীর দাবি, ‘খালেদা জিয়ার বিদেশে চিকিৎসার জন্য ইউরোপিয়ান পার্লামেন্টসহ বিদেশের অনেক সংসদ সদস্য আবেদন করে চিঠি দিয়েছে। অস্ট্রেলিয়ান পার্লামেন্টের এম‌পি পার্লামেন্টে এ বিষয়ে কথা বলেছেন। তাতেও প্রধানমন্ত্রীর টনক নড়ে না। তিনি ৪০১ ধারা দেখাযন। তাতেও কোনোভাবে খালেদা জিয়াকে বিদেশে সুচিকিৎসা আটকানোর কোনো কথা নেই। খালেদা জিয়াকে কোনও আইনের মাধ্যমে আটকানো যাবে না। তাকে আটকানোর একমাত্র পথ হচ্ছে পাষাণ বটবৃক্ষ প্রধানমন্ত্রী, অন্য কেউ নয়।’

ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশন অফ বাংলাদেশ (ড্যাব) মানববন্ধটির আয়োজন করে। খালেদা জিয়াকে বিদেশে সুচিকিৎসা ও স্থায়ী মুক্তি এবং জিয়াউর রহমানের পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে কুরুচিপূর্ণ বক্তব্যের প্রতিবাদে আয়োজিত এই কর্মসূচিতে আরও ছিলেন, বিএনপি’র স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান, ভাইস চেয়ারম্যান শওকত মাহমুদ, গণশিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক অধ্যক্ষ সেলিম ভূঁইয়া, ডিইউজের সভাপতি কাদের গণি চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলাম।