‘পরের নির্বাচন বয়কট করলে বিএনপি আর থাকবে না’

জনপ্রশাসনমন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলামপরবর্তী জাতীয় সংসদ নির্বাচন বয়কট করলে রাজনৈতিক দল হিসেবে বিএনপি আর থাকবে না বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও জনপ্রশাসনমন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম। তিনি বলেছেন, রাজনীতিক মাঠে পরাজিত হয়ে কে কী বললো তা নিয়ে সময় নষ্ট না করে আগামী নির্বাচন নিয়ে ভাবুন। কারণ অনেক রাজনীতিক দলের ফালাফালি দেখেছি।
সোমবার বিকেলে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার ধানমন্ডির রাজনৈতিক কার্যালয়ে সম্পাদকমণ্ডলীর সভা শেষে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন আশরাফ।
জনপ্রশাসনমন্ত্রী আরও বলেন, ভুল সিদ্ধান্তের কারণে এখন তাদের কেউ মনে রাখে না। দেশের ইতিহাস, বঙ্গবন্ধু নিয়ে অহেতুক মন্তব্য বন্ধ না করলে বিএনপি ইতিহাসের আস্তাকুঁড়ে নিক্ষিপ হবে।
প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার বক্তব্য প্রসঙ্গে আশরাফ আরও বলেন, ‘এটা তিনি সেমিনারে বলেছেন। এটা কোনও রায় নয়। আমাদের সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের সাংবিধানিক বোর্ড আছে। ওনারাও কোনও রায় দেননি। সুপ্রিম কোর্টে একক ব্যক্তির কোনও রায় হয় না। অন্য কোনও বিচারকও এ বিষয়ের স্বপক্ষে কোনও বক্তব্য দেননি। আর এটাতো আদালতের কোনও বিচারের বিষয় নয়।’

আগামী ২৮ মার্চ আওয়ামী লীগের জাতীয় সম্মেলন উপলক্ষে তিনি বলেন, আমাদের প্রতিটি সম্মেলনে দেশের গুরুত্বপূর্ণ অনেক সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ঐতিহাসিক ৬ দফা, বাংলাদেশ স্বাধীন করার প্রত্যয় তার মধ্যে সেরা সিদ্ধান্ত। এবারের সম্মেলনেও গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিয়ে আওয়ামী লীগ ইতিহাস সৃষ্টি করবে। আর আওয়ামী লীগ যে সিদ্ধান্ত নেয় তার বাস্তবায়ন না করে ঘরে ফেরে না।

সম্মেলন প্রস্তুতি সম্পর্কে দলটির সাধারণ সম্পাদক বলেন, আমাদের ৭৭টি সাংগঠনিক কাউন্সিলের মধ্যে ইতোমধ্যেই ৬৯টির সম্মেলন সম্পন্ন হয়েছে। বাকিগুলোতে সম্মেলনের তারিখ দেওয়া হয়েছে। সময়মতো সব শাখার সম্মেলন করে আমরা এবারের টার্গেট পূরণ করতে পারবো বলে আশা রাখি। তাহলে নতুন রেকর্ড হবে। এবারের সম্মেলন আমরা উৎসবমুখরভাবে জাতীয় অনুষ্ঠানের ন্যায় পালন করতে চাই।

এবারের সম্মেলনে দলীয় গঠনতন্ত্রের কোনও পরিবর্তন হবে কিনা এমন প্রশ্নের উত্তরে আশরাফ বলেন, জাতীয় কাউন্সিলে এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত হলে গঠণতন্ত্র পরিবর্তন হতে পারে। তাহলে দলীয় সদস্যপদের সংখ্যা বাড়তে পারে। সম্মেলনের আগে নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না।

খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা এবং সমন জারি হওয়া প্রসঙ্গে এই রাজনীতিক বলেন, তিনি (খালেদা জিয়া) কখনোই মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে ছিলেন না, কোনওদিনই থাকবেনও না। দেশের স্বীকৃত ইতিহাস নিয়ে বিএনপির যে নেতিবাচক মনোভাব তা থেকে দলটি এক ইঞ্চিও সরবে না বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

বিএনপির কাউন্সিলের সমালোচনা করে আশরাফ বলেন, বিএনপির ঢাকায় বসে বিভিন্ন জেলা-উপজেলার কমিটি ঘোষণা করে। পত্রপত্রিকায় হঠাৎ দেখা যায়, অমুক নেতা হয়েছেন। এটা আবার ফলাও করে ছাপানো হয়। কিন্তু আওয়ামী লীগ ছোটখাটো কমিটিও নির্বাচন ও সম্মেলন করে ঘোষণা করে।

এর আগে সৈয়দ আশরাফের সভাপতিত্বে দলটির সম্পাদক মণ্ডলীর বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এতে উপস্থিত ছিলেন দলটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ, জাহাঙ্গীর কবির নানক, সাংগঠনিক সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাসিম, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ, কৃষি বিষয়ক সম্পাদক ড. আবদুর রাজ্জাক, শ্রমবিষয়ক সম্পাদক হাবিবুর রহমান সিরাজ প্রমুখ।

/পিএইচসি/এএইচ/