আওয়ামী লীগ ১৮ কোটি মানুষের বিপরীতে অবস্থান নিয়েছে: সাইফুল হক

আওয়ামী লীগ ১৮ কোটি মানুষের আকাঙ্ক্ষার বিপরীতে অবস্থান নিয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক। 

শুক্রবার (২৮ জুলাই) মৎস্য ভবনের সামনে অবৈধ সরকারের পদত্যাগ, অন্তর্বর্তী সরকারের অধীনে নির্বাচন, সংবিধান সংস্কার করে গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার একদফা দাবিতে গণতন্ত্র মঞ্চ আয়োজিত সমাবেশে এসব কথা বলেন তিনি। 

সমাবেশে সাইফুল হক বলেন, আওয়ামী লীগ ১৮ কোটি মানুষের আকাঙ্ক্ষার বিপরীতে অবস্থান নিয়েছে। শ্রমিকের পেটে তারা লাথি মেরেছে। আওয়ামী লীগ এতদিন বলতো তারা শ্রমিকবান্ধব, কৃষিবান্ধব সরকার। কিন্তু কিছু দিন আগে প্রধানমন্ত্রী ঘোষণা দিয়েছেন তিনি ব্যবসায়ীবান্ধব সরকার। প্রধানমন্ত্রী কালো টাকার ব্যবসায়ীদের কাছে আত্মসমর্পণ করেছেন। মুক্তিযুদ্ধকে তারা একটা রাজনৈতিক পণ্যে পরিণত করেছে। মেয়াদ উত্তীর্ণ ওষুধ মানুষের শরীর নষ্ট করে, মেয়াদ উত্তীর্ণ সরকার দেশ নষ্ট করে।

প্রধানমন্ত্রীকে উদ্দেশ করে তিনি বলেন, শেখ হাসিনা কি আইয়ুব খান বা এরশাদের মতো বিদায় নিতে চান? এই সিদ্ধান্ত সরকারি দলকে নিতে হবে। এখনও রাস্তা খোলা আছে। কীভাবে পদত্যাগ করবেন এবং কীভাবে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার প্রতিষ্ঠা করবেন এই দুই প্রশ্নে সিদ্ধান্ত নেন। তাহলে বিরোধী দলগুলোর সঙ্গে আলোচনার রাস্তা খোলা থাকবে। যদি রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত না নিতে পারেন তবে তাদের বিদায় দেওয়া ছাড়া আর কোনও পথ থাকবে না।

এখন দিন পালটে গেছে মন্তব্য করে নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, দিন পালটে গেছে। আগে বাস, ট্রেন, লঞ্চ বন্ধ করে দিতো। এবার একটা ঘোড়াও বন্ধ করতে পারেনি। সময় সবসময় একরকম থাকে না। আগে মানুষ দেখা হলে জিজ্ঞেস করতো শেখ হাসিনা কবে যাবে? এখন জিজ্ঞেস করে, কত দূর?

তিনি আরও বলেন, আওয়ামী লীগের শান্তির সমাবেশে টেনেটুনে ৫০ হাজার মানুষ নেই। জনগণ তাদের প্রত্যাখ্যান করেছে। কিন্তু এই সত্য প্রধানমন্ত্রী মেনে নেবেন না।

জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জেএসডি সভাপতি আ স ম আব্দুর রব বলেন, সমাবেশে অংশ নেওয়া তো অপরাধ নয়। কিন্তু পাল্টা কর্মসূচি দিয়ে এই সরকার রাজপথ রক্তাক্ত করতে চায়। গণতন্ত্রের জন্য রক্ত দিতে হলে রক্ত দেবো।

তিনি আরও বলেন, শান্তি সমাবেশ করবেন ভালো কথা। শান্তি সমাবেশ অন্যদিন করেন না কেন? আমরা যে দিন কর্মসূচি করি সেদিনই কেন করেন? গণ্ডগোল করার জন্য? সাবধান। সন্ত্রাস করতে এলে জনগণ ছেড়ে দেবে না। সরকার চরম সংঘর্ষের দিকে সবাইকে ঠেলে দিতে চাচ্ছে।

সভাপতির বক্তব্যে গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি কর্মসূচি ঘোষণা করে বলেন, একদফা বাস্তবায়ন বাংলাদেশের জন্য গুরুত্বপূর্ণ এই কারণে যে এই একদফা বাস্তবায়িত হলেই আমরা সাম্য, মানবিক মর্যাদা, সামাজিক ন্যায়বিচারের বাংলাদেশ গড়তে পারবো।

তিনি বলেন, মানুষ আগামীকাল থেকে প্রতিরোধ করা শুরু করবে। আগামীকাল সকাল ১১টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত রাজধানীর সব প্রবেশমুখে অবস্থান কর্মসূচি করবে যুগপৎ আন্দোলনে থাকা সব দল। শান্তিপূর্ণ অবস্থান কর্মসূচিতে গুণ্ডা -পুলিশ দিয়ে বাধা দেওয়ার, হামলা করার চেষ্টা করবেন না। এরকম কিছু করলে গণপ্রতিরোধ গড়ে উঠবে।

আওয়ামী লীগকে উদ্দেশ করে তিনি বলেন, সরকার নাকি বিএনপির প্রেমে পড়ে গিয়েছে। বিএনপি যেদিন সমাবেশ করে তারাও সেদিন সমাবেশ দেয়। এটার মানে হচ্ছে পায়ে পাড়া দিয়ে আপনারা চলছেন। গুণ্ডা বাহিনী দিয়ে তারা শান্তি সমাবেশ করছে।

গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকির সভাপতিত্বে এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন ভাসানী অনুসারী পরিষদের আহ্বায়ক শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলু, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক হাসনাত কাইয়ুম, গণসংহতি আন্দোলনের নির্বাহী সমন্বয়কারী আবুল হাসান রুবেল, নাগরিক ঐক্যের সাধারণ সম্পাদক শহিদুল্লাহ কায়সার, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের সাধারণ সম্পাদক শহিদ উদ্দিন আহমেদ স্বপনসহ দলের অন্য নেতারা।