নিষেধাজ্ঞা দেয় যুক্তরাষ্ট্র, ভয় দেখায় মির্জা ফখরুল: ওবায়দুল কাদের

মার্কিন ভিসানীতির বিষয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, নিষেধাজ্ঞা দেয় যুক্তরাষ্ট্র, কী আশ্চর্য কথা— তাদের নিষেধাজ্ঞার ভয় আমাদের দেখায় মির্জা ফখরুল। আমেরিকা মনে হয় তাকে এজেন্ট নিয়োগ দিয়েছেন। ভয় দেখানোর এজেন্সি দিয়েছে মির্জা ফখরুলকে।

মঙ্গলবার (২৬ সেপ্টেম্বর) কেরানীগঞ্জের জিনজিরা পুরোনো বাস স্ট্যান্ডে এক 'শান্তি ও উন্নয়ন সমাবেশে' এসব কথা বলেন তিনি। 'বিএনপি দেশজুড়ে সন্ত্রাস-নৈরাজ্যের ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদে' এ কর্মসূচি পালন করে ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগ।

বাংলাদেশ কোনও দেশের নিষেধাজ্ঞা মানে না দাবি করে ওবায়দুল কাদের বলেন, বাংলাদেশ চলবে সংবিধান অনুযায়ী। একাত্তরে আমাদের হারাতে পারেনি, আজও নিষেধাজ্ঞা দিয়ে শেখ হাসিনাকে থামানো যাবে না। আমরা কারও নিষেধাজ্ঞা পরোয়া করি না।

আমেরিকার নিষেধাজ্ঞা কেউ শোনে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ভেনেজুয়েলা, গ্যাবন, সুদানে দেশটির নিষেধাজ্ঞার কথা বলেন। কিন্তু দেশগুলোও সেটি শোনেনি, এমনকি জাতিসংঘের নিষেধাজ্ঞাও অনেক দেশ শুনে না।

বিএনপির জনসভায় দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের কান্না প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘বক্তৃতা করতে দাঁড়ালেই মির্জা ফখরুলের চোখে কেবল কান্না। কান্নায় কান্নায় বুক ভেসে যায়। কত মানুষকে কাঁদিয়েছেন আপনারা। কত মায়ের বুক খালি করেছেন, মানুষকে কাঁদিয়েছেন। এখন নিজেরা কাঁদে।’

তিনি বলেন, ‘আরও কান্না আছে, কাঁদতে কাঁদতে বাংলাদেশ কান্নার দরিয়া হয়ে যাবে, তবুও আপনাদের ক্ষমা নেই। পিতৃহত্যা, মাতৃহত্যার প্রতিশোধ আমরা নেবো। বঙ্গবন্ধু, জাতীয় চার নেতাকে হত্যা করেছে, খুনিদের বিচার করেন নাই। আপনাদের ক্ষমা নেই। বাংলাদেশের মানুষ বিএনপিকে ক্ষমা করবে না। ‘

বিএনপির ঢাকা দখলের হুঁশিয়ারির জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, ঢাকা শহর নাকি দখল করবে। আমরা প্রস্তুত আছি, ঢাকা শহর কারা দখল করে? আমরাও প্রস্তুত আছি কারা দখল করবে দেখা যাবে। ঢাকা দখল করবে লাল-সবুজের পতাকা। লাল-সবুজের পতাকা হাতে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বিজয়ের মিছিল এই অক্টোবর থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত বাংলাদেশে চলবে।

নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্য করে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, ক্যাপ্টেন আসতেছে। তিনি যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটনে আছেন। জাতিসংঘের অধিবেশন শেষ করে ক্যাপ্টেন আসছেন। তৈয়ার হয়ে যান ট্রেনিং নিয়ে। জোরদার খেলা হবে।

আওয়ামী লীগের কোনও কর্মীদের কারও বাড়িতে, কারও গায়ে আঘাত করলে এবার পাল্টা আঘাত করা হবে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘কোন অবস্থাতেই এবার ছাড় দেওয়া হবে না।’

খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে বিএনপির আলটিমেটাম প্রসঙ্গে ওবায়দুল কাদের বলেন, তারা আমাদের ৪৮ ঘণ্টার আলটিমেটাম দিয়েছে। কিন্তু খালেদা জিয়ার জন্য ৪৮ মিনিটও আপনারা (বিএনপি) দাঁড়াতে পারেনি। সেই খালেদা জিয়া শেখ হাসিনার দয়া ও মহানুভবতায় বাসায় চিকিৎসা নিচ্ছেন। হায়াত-মউত আল্লাহর হাতে। আইনের বিষয়ে স্বরাষ্ট্র ও আইনমন্ত্রী বলেছেন। আমি বলতে চাই খালেদা জিয়ার অসুস্থতা নিয়ে যতটা কথা বলেছে, তার চেয়েও বেশি রাজনীতি করেছে। সেটাই তাদের উদ্দেশ্য।

বিএনপি-জামায়াত নির্বাচনকে বানচাল করার জন্য ষড়যন্ত্র করছে বলে দাবি করে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য কামরুল ইসলাম বলেন, এর সঙ্গে কারা? একাত্তরের পরাজিত শক্তি। যারা সপ্তম নৌবহর শক্তি পাঠিয়েছিল তারা তাদের সঙ্গে। জাতির পিতার খুনিদের সহযোগিতা করেছিল, সমর্থন করেছিল সেই শক্তি এখন একাত্ম হয়ে বাংলাদেশে একটা অশান্ত পরিবেশ সৃষ্টি করতে চাচ্ছে এবং নির্বাচন বানচাল করতে চাচ্ছে।

বিএনপিকে উদ্দেশ্য করে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ বলেন, খালেদা জিয়ার চিকিৎসা নিয়ে আপনারা নাটক করছেন। যদি মনে করেন উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে বিদেশে নিতে হবে। তাহলে আইনি প্রক্রিয়া যাচ্ছেন না কেন? তা না করে নাটকবাজী আপনারা করতেছেন। যদি খালেদা জিয়ার কিছু হয় তার দায়দায়িত্ব বিএনপির শীর্ষ নেতাদের বহন করতে হবে। অন্য কারও নয়।

ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বেনজির আহমেদের সভাপতিত্বে সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন দলটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম, বিদ্যুৎ জ্বালানি ও খনিজসম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী এনামুর রহমান, ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক পনিরুজ্জামান তরুণ প্রমুখ।