নির্বাচন বর্জনের আহ্বান চরমোনাই পীরের

রাষ্ট্রপতিকে অবিলম্বে বিদ্যমান জাতীয় সংসদ ভেঙে দিয়ে নির্বাচন বন্ধ করার আহ্বান জানিয়েছেন ইসলামী আন্দোলনের আমির ও চরমোনাই পীর মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করীম। একইসঙ্গে তিনি দেশের  জনগণকে সর্বাত্মকভাবে নির্বাচন বর্জনের আহ্বান জানান।

বৃহস্পতিবার (৪ জানুয়ারি) দুপুরে পুরাতন পল্টনে দলীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ আহ্বান জানান।

রাষ্ট্রের অভিভাবক হিসেবে রাষ্ট্রপতির কাছে অনুরোধ জানিয়ে চরমোনাই পীর বলেছেন, সংবিধান অনুযায়ী অবিলম্বে বিদ্যমান কলঙ্কিত জাতীয় সংসদ ভেঙে দিয়ে দেশবিরোধী প্রহসনের নির্বাচন বন্ধ করুন। সকল রাজনৈতিক পক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে জাতীয় সরকার গঠনের রূপরেখা ঘোষণা দিন। নয়তো সম্ভাব্য বিপর্যয়ের দায় থেকে আপনিও রক্ষা পাবেন না।

সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়ে মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করীম বলেন, আপনাদের যদি ন্যূনতম দেশপ্রেম থাকে তাহলে দ্রুত পদত্যাগ করুন। প্রহসনের নির্বাচন বন্ধ করুন, কারাবন্দি রাজনৈতিক নেতাকর্মীদের মুক্তি দিন। জনগণের ভোটাধিকার, রাজনৈতিক অধিকার, সাংবিধানিক অধিকার ও মৌলিক অধিকার ফিরিয়ে দিন। রাজনৈতিক কারণে সকল প্রকার জুলুম এবং হয়রানি বন্ধ করুন। দেশকে ধ্বংসের হাত থেকে রক্ষা করুন।

তিনি বলেন, আমরা যদি গণহারে ভোট বর্জন করি তাহলে এই জালেম লুটেরারা বাধাগ্রস্ত হবে। আমরা ভোট বর্জন করলে জাতি, দেশের অর্থনীতি রক্ষা পাবে। আপনি ভোট বর্জন করলে মানবতা রক্ষার পথ উন্মোচিত হবে। জালেমদের বিদায় অবশ্যই হবে। আমরা যদি জালেমের বিরুদ্ধে সবাই ঐক্যবদ্ধ এবং সুদৃঢ় থাকতে পারি, তাহলে অচিরেই জনগণের বিজয় হবেই হবে, ইনশাআল্লাহ।

পীর সাহেব চরমোনাই বলেন, আমরা এই জাতিকে রক্ষা করতে চাই, দেশকে বাচাতে চাই, দেশের অর্থনীতিকে বাচাতে চাই, লুটতরাজের অবসান চাই। আমরা একদলীয় কর্তৃত্ববাদী শাসনের অবসান চাই, রাজনীতিতে গুনগত পরিবর্তন চাই, দেশের মানুষের অধিকার ফেরত পেতে চাই। সেজন্য আমাদের ধারাবাহিক আন্দোলন সংগ্রাম চলবে।

সংবাদ সম্মেলনে বিদ্যমান রাজনৈতিক সংকট উত্তরণে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমির ৫ দফা দাবি তুলে ধরেন।

১. ৭ জানুয়ারি নির্বাচন বন্ধ করা।

২. বিদ্যমান জাতীয় সংসদ ভেঙে দেওয়া।

৩. নিবন্ধিত এবং আন্দোলনরত রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করে, জাতীয় সরকার গঠন করা।

৪. বর্তমান নির্বাচন কমিশন ভেঙে দিতে হবে এবং জাতীয় সরকারের অধীনে নতুন নির্বাচন কমিশন দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনের পূণঃতফসিল ঘোষণা করবে।

৫. রাজনৈতিক কারণে বিরোধীদলের কারাবন্দি সকল নেতাকর্মীর মুক্তি দিতে হবে।

সংবাদ সম্মেলনের উপস্থিত ছিলেন দলের মহাসচিব মাওলানা ইউনুছ আহমাদ, প্রেসিডিয়াম সদস্য প্রিন্সিপাল মাওলানা সৈয়দ মোসাদ্দেক বিল্লাহ আল-মাদানী, অধ্যাপক আশরাফ আলী আকন, খন্দকার গোলাম মাওলা ও অধ্যাপক মাহবুবুর রহমান, যুগ্ম মহাসচিব মুহাম্মদ আমিনুল ইসলাম ও আশরাফুল আলম, সহকারি মহাসচিব মাওলানা শেখ ফজলে বারী মাসউদ, মাওলানা মুহাম্মদ ইমতিয়াজ আলম, আফতাব উদ্দিন, কেএম আতিকুর রহমান, মাওলানা আহমদ আবদুল কাইয়ূম প্রমুখ।