‘আ.লীগের কারও বিরুদ্ধে অর্থ পাচারের অভিযোগ পাওয়া যায়নি’

ওবায়দুল কাদেরআওয়ামী লীগের কারও বিরুদ্ধে এখন পর্যন্ত অর্থ পাচারের অভিযোগ পাওয়া যায়নি, বলে দাবি করেছেন দলের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। শুক্রবার বিকালে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার রাজনৈতিক কার্যালয়ে সম্পাদকমণ্ডলীর বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ মন্তব্য করেন।
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আমাদের কারও বিরুদ্ধে এখন পর্যন্ত অর্থ পাচারের কোনও অভিযোগ পাইনি। সুনির্দিষ্ট অভিযোগ প্রমাণিত হলে প্রশাসনিক এবং সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেব। সুইস ব্যাংকে অর্থ পাচারের সঙ্গে রাজনৈতিক কোনও সম্পর্ক নেই। রাজনীতি করে কেউ এমন কাজ করলে তাদের বিরুদ্ধে আমাদের অবস্থান কঠোর এবং কোনও আপোস হবে না।’
অর্থ পাচারের রেকর্ড বিএনপির আছে উল্লেখ করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘তাদের নেতা তারেক রহমানের বিরুদ্ধে এফবিআই সাক্ষী দিয়ে গেছে। কোকোর টাকার কথা সিঙ্গাপুরে প্রমাণিত। তাদের মানি লন্ডারিং বিষয়টি সবার কাছে সুপরিচিত এবং আদালতে প্রমাণিত।’
অর্থ পাচারকারীদের খুঁজে বের করতে সরকার পদক্ষেপ নেবে কি না জানতে চাইলে সেতুমন্ত্রী বলেন, ‘স্বচ্ছতার প্রয়োজনে যা করার দরকার তা করতে আমরা রাজি আছি। বাংলাদেশ ব্যাংক বিষয়টি দেখবে। সুইস ব্যাংকে টাকা পাচার উদ্বেগজনক কথাটা অসত্য নয়। উদ্বেগজনক বলেই তো আমরা তদন্ত করতে বলেছি, এখানে আমরা স্বচ্ছতা চাই।’

হলি আর্টিজানে জঙ্গি হামলার ঘটনা প্রসঙ্গে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘হলি আর্টিজানের হামলার ঘটনার পর জঙ্গিবাদ নিরসনে বাংলাদেশ সরকার অনেক দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে, তবে আমরা তাতে সন্তুষ্ট নই। আমরা সন্তুষ্ট সেদিনই হবো যেদিন দেশের সর্বস্তরের মানুষকে জঙ্গিবাদ নিরসনের ক্ষেত্রে ঐক্যবদ্ধ করতে পারবো।’

জঙ্গিবাদ নিরসনের প্রশ্নে বিএনপির মতো রাজনৈতিক দলকে আহ্বান করা হবে কি না এমন প্রশ্নের জবাবে কাদের জানান, যারা জঙ্গিবাদকে পৃষ্ঠপোষকতা করে তাদের আহ্বান করে লাভ নেই।

এদিকে বৈঠকে দল ও সহযোগী সংগঠনের নেতাদের জাতীয় নির্বাচনে প্রার্থী বনে যাওয়ার বিষয়টি আলোচনা হয় বলে জানা গেছে। দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহাবুব উল আলম হানিফ প্রসঙ্গটি টেনে বলেন, ‘দলের অনেককে দেখা যাচ্ছে এলাকায় নিজেরে প্রার্থী ঘোষণা দিয়ে নানা ধরনের তৎপরতা চালাচ্ছেন। এতে করে তার সঙ্গে স্থানীয় সংসদ সদস্য বা সম্ভাব্য অন্য কোনও প্রার্থীর সঙ্গে ঠেলাঠেলি শুরু হচ্ছে। এতে দলে গ্রুপিং বৃদ্ধি পাচ্ছে।’

এসময় হানিফ দলের ত্রাণ ও সমাজ কল্যাণ সম্পাদক সুজিত রায় নন্দীর কথা তুলে ধরেন। সুজিত নন্দী প্রার্থী হওয়ার জন্য যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক দীপু মনির সঙ্গে ঠেলাঠেলি শুরু করছেন বলে উল্লেখ করেন। এ সময় বৈঠকে উপস্থিত সুজিত নন্দী বিষয়টির প্রতিবাদ করেন বলে একাধিক সূত্র বাংলা ট্রিবিউনকে নিশ্চিত করেছেন। তবে, বিষয়টিকে উদাহারণ হিসেবে তোলা হয়েছে জানিয়ে একপর্যায়ে হাসি-তামাশার মধ্য দিয়ে ওই আলোচনার সমাপ্তি হয়।

ওবায়দুল কাদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত বৈঠকে সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য মাহবুব-উল-আলম হানিফ, জাহাঙ্গীর কবির নানক, দীপু মনি, আবদুর রহমান, আহমদ হোসেন, বিএম মোজাম্মেল, আ ফ ম বাহাউদ্দীন নাছিম, এনামুল হক শামীম, মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, ফরিদুন্নাহার লাইলী, আফজাল হোসেন, হাবিবুর রহমান সিরাজ, শামসুন্নাহার চাঁপা, সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী, ইঞ্জিনিয়ার আবদুস সবুর, দেলোয়ার হোসেন ও বিপ্লব বড়ুয়া প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

/ইএইচএস/এমও/