বৈঠকে থাকা একাধিক নেতা বলেন, ‘দলের সম্পাদকমণ্ডলী মনে করে, গাজীপুর ও খুলনা সিটি নির্বাচনে আওয়ামী লীগ হেরে গেলে দলীয় নেতাকর্মীরা মনোবল হারিয়ে ফেলবেন। তারা মনোবল হারিয়ে ফেলে এর প্রভাব পড়তে আগামী জাতীয় নির্বাচনে। এ কারণে দলীয় প্রার্থীর জয়ের লক্ষ্যে যার যার অবস্থান থেকে স্থানীয় নেতাদের সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
সভায় বলা হয়েছে, গতবার গাজীপুর সিটি নির্বাচন দেখভালের জন্যে উত্তরায় যে নির্বাচনি কার্যালয় করা হয়েছিল, সেখানেই ক্ষতি হয়েছে। তাই এবার গাজীপুর ও খুলনা সিটি নির্বাচনে বাইরে থেকে কাউকে না পাঠানোর সিদ্ধান্তও নেওয়া হয়েছে। ওই দুই সিটির যেসব নেতা ঢাকায় থাকেন, কেবল তাদেরই নির্বাচনি প্রচারণায় পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে আওয়ামী লীগের সম্পাদকমণ্ডলীর সভায়।
সম্পাদকমণ্ডলীর সভায় উপস্থিত ছিলেন এমন একজন নেতা জানান, গাজীপুর থেকে অভিযোগ এসেছে, সেখানে মহানগর আওয়ামী লীগ সভাপতি আজমতউল্লাহ খান দলীয় প্রার্থীর বিরুদ্ধে কাজ করছেন। এ অভিযোগের ভিত্তিতে আজমতউল্লাহ খানকে ফোন করে সতর্ক করে দেন দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। তিনি আজমতউল্লাহ খানকে তার ভূমিকার বিষয়ে দলীয় সভাপতি শেখ হাসিনাকে জানাবেন বলেও সতর্ক করে দেন। মোবাইল ফোনে ওবায়দুল কাদের বলেন, সিটি নির্বাচনে দলীয় প্রার্থী পরাজিত হলে শেখ হাসিনার সরকারের অর্জন ধ্বংস হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এ কারণে বড় অর্জনের জন্য ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে।
এদিকে, গাজীপুর নির্বাচনের বিষয়ে ২৯ এপ্রিল রবিবার ধানমন্ডির রাজনৈতিক কার্যালয়ে গাজীপুরের নেতাদের সঙ্গে বৈঠকের দিন নির্ধারণ করা হয়েছে। গাজীপুর নির্বাচনে দলীয় প্রার্থী জাহাঙ্গীর আলমের কিছু ভুল রয়েছে বলেও বৈঠকে বলেন ওবায়দুল কাদের। তবে সবাই মিলে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করলে ত্রুটিগুলো সংশোধন করা সম্ভব বলেও মনে করেন দলের সাধারণ সম্পাদক।
বৈঠকে দলের সাংগঠনিক সম্পাদক আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন বলেন, ‘দলের একেকজন নেতা একেকজনের সমালোচনা করেন।’ এ ধরনের সমালোচনা বন্ধ করার প্রস্তাব তোলেন তিনি। তবে বিষয়টি নিয়ে অন্যরা কথা না বলায় আলোচনা বেশিদূর এগোয়নি বলেও জানা গেছে।
সভায় ওবায়দুল কাদেরের নেতৃত্বে ভারত সফর ফলপ্রসূ হয়েছে উল্লেখ করে সম্পাদকমণ্ডলীর সভাকে অভিনন্দন জানানোর প্রস্তাব করা হয়। সাংগঠনিক সম্পাদক খালিদ মাহমুদ চৌধুরী প্রস্তাবটি উত্থাপন করলে অন্য সাংগঠনিক সম্পাদক আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন তা সমর্থন করেন।
ওবায়দুল কাদেরের সতর্কতামূলক মোবাইল ফোনের কথা স্বীকার করে আজমতউল্লাহ খান বলেন, ‘দলে কোনও কোন্দল নেই।’