এখনও আ. লীগের কর্মকাণ্ড ধানমন্ডিতেই, কেন্দ্রীয় কার্যালয়মুখী হন না নেতারা

 

আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয় ও ধানমন্ডির কার্যালয়উদ্বোধনের পর তিন সপ্তাহের বেশি সময় পার হলেও এখনও ২৩ বঙ্গবন্ধু এভিনিউস্থ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়মুখী হন না কেন্দ্রীয় নেতারা। পরন্তু অফিস স্টাফরাও থাকেন না এই কার্যালয়ে। কেবল মাঝেমাঝে কিছু দর্শনার্থীর দেখা মেলে এখানে। অথচ সকাল-সন্ধ্যা কেন্দ্রীয় নেতাদের দাফতরিক ও দলীয় কাজ চলে ধানমন্ডিতে অবস্থিত আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার রাজনৈতিক কার্যালয়ে। দলের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরসহ প্রায় সব কেন্দ্রীয় নেতাই এই অফিসে যাতায়াত করেন। নেতাদের পাশাপাশি  নেতাকর্মীদের  যাতায়াতও এই কার্যালয় ঘিরেই।  

 

বঙ্গবন্ধু এভিনিউস্থ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়

গত ২৩ জুন দলের প্রতিষ্ঠা বার্ষিকীর দিন উদ্বোধন করা হয় বঙ্গবন্ধু এভিনিউস্থ কেন্দ্রীয় কার্যালয়টি। এরপর তিন সপ্তাহ পার হয়ে গেলেও কেন্দ্রীয় নেতাদের পদচারণায় মুখরিত হয়ে ওঠেনি এই কার্যালয়। এখানে দলীয় সভা করার মতো বড় মিলনায়তন থাকলেও নতুন ভবন উদ্বোধনের পর আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন ১৪ দলীয় জোট কিংবা দলের সম্পাদকমণ্ডলীর সভা, যৌথসভার অধিকাংশই হয়েছে ধানমন্ডির ছোট বাড়িটিতে। শুধু তাই নয়, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নিজেও গত রবিবার (১৫ জুলাই) সংবাদ সম্মেলন করেছেন ধানমন্ডি কার্যালয়ের ছোট মিলনায়তনে। তবে দলটির কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদ ও উপদেষ্টা পরিষদের একটি যৌথসভা বঙ্গবন্ধু এভিনিউ কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত হয়েছে। দলীয় সভাপতি শেখ হাসিনা ওই সভার সভাপতিত্ব করেন। এছাড়া গত ৭ জুলাই দলের সাধারণ সম্পাদক দলের সহযোগী সংগঠনগুলো সঙ্গে আরও একটি যৌথসভা করেন। এদিকে, মঙ্গলবার (১৭ জুলাই) একটি যৌথসভা অনুষ্ঠিত হবে ধানমন্ডি কার্যালয়ে।

 

আওয়ামী লীগ সভাপতির ধানমন্ডির রাজনৈতিক কার্যালয়

এখনও দলের নেতাদের কেন্দ্রীয় কার্যালয়মুখী না হওয়ার কারণ জানতে চাইল আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতারা জানান, এর দু’টি কারণ। নতুন ভবনটিতে কোন কোন নেতা বসবেন, তা এখনও নির্ধারণ করে দেননি দলীয় সভাপতি শেখ হাসিনা। দ্বিতীয় কারণ হতে পারে, ধানমন্ডিতে যাওয়া-আসা করার ফলে নেতারা ধানমন্ডিমুখী হয়ে পড়েছেন।

বঙ্গবন্ধু এভিনিউ কার্যালয়ের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা আবুল কালাম ও মোক্তার হোসেন বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘এই কার্যালয়ে এখনও নেতারা আসেন না। তবে দর্শনার্থীরা দলীয় কার্যালয়ে দেখতে ভিড় করেন। নেতাদের ভিড় এখানে নেই।’

কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের ভেতরে প্রবেশ করতে চাইলে নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা ওই দুই জন বলেন, ‘ভেতরে গিয়ে কী করবেন, কেউ নেই। কেউ আসে না।’

আওয়ামী লীগ সভাপতির ধানমন্ডিস্থ রাজনৈতকি কার্যালয়ের ভেতরে নেতাকর্মীরা

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রহমান বাংলা ট্রিবিউনক বলেন, ‘এখনও নির্ধারণ করা হয়নি বঙ্গবন্ধু এভিনিউর কার্যালয় আমরা কী করবো। এছাড়া সবে উদ্বোধন করা হলো। জমে উঠতে কিছুটা সময় লাগবে।’

দলের প্রচার সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ  বলেন, ‘কেন্দ্রীয় কার্যালয় সচল না হওয়ার অন্যতম কারণ হলো, সেখানে কারা যাবেন, কোথায় বসবেন, এসব কিছুই নির্ধারণ করা হয়নি। এছাড়া, দীর্ঘদিন থেকে ধানমন্ডিতে কার্যক্রম পরিচালিত হওয়াসহ বিভিন্ন কারণে নেতাকর্মীরা অভ্যস্ত হয়ে পড়েছেন। ফলে নেতাকর্মীরা ধানমন্ডির কার্যালয়ে এখনও যাওয়া-আসা করেন। এ কারণেই কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে যাওয়া-আসা শুরু করেননি।’

ছবি: সাজ্জাদ হোসেন