ভোট কম পড়ার কারণ খুঁজতে বললেন নাসিম

মোহাম্মদ নাসিম

জনগণের ভোটবিমুখতার কারণ খোঁজার কথা বলেছেন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মোহাম্মদ নাসিম। সরকার ও নিজের দল আওয়ামী লীগকে সতর্ক করে সিনিয়র এই সংসদ সদস্য বলেন, ‘কী কারণে ভোটাররা ক্ষুব্ধ হলো? উপলব্ধি করতে হবে, আমরা কেন ভোটবান্ধব থেকে সরে যাচ্ছি? মনে রাখতে হবে, ভোটার ছাড়া আমাদের উপায় নেই। ভোটবিহীন বাংলাদেশ হতে পারে না। সরকার ও দলকে উপলব্ধি করতে হবে কী কারণে ঢাকায় এ ধরনের ঘটনা ঘটলো। কেন কম ভোট পড়লো?’

বুধবার (১২ ফেব্রুয়ারি) রাষ্ট্রপতির ভাষণে আনা ধন্যবাদ প্রস্তাবের ওপর আলোচনায় অংশ নিয়ে তিনি এসব কথা বলেন। সড়ক পরিবহন আইন পুরোপুরি কার্যকর না হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন মোহাম্মদ নাসিম। কেন আইনটি কার্যকর হচ্ছে না, তাও জানতে চান তিনি।

নাসিম বলেন, ‘সড়ক দুর্ঘটনা মারাত্মক একটি সমস্যা। সড়কে মৃত্যুর মিছিল আমরা দেখতে চাই না। অনেক আইন-নীতিমালা হয়েছে, কিন্তু বাস্তবায়ন হচ্ছে না কেন? কাদের কারণে আমরা আইন প্রয়োগ করতে পারছি না? কোন ফ্রাংকেনস্টাইনের কারণে সড়ক আইনটি বাস্তবায়ন হচ্ছে না? কেন আমরা চরমদণ্ড বাস্তবায়ন করতে পারছি না?’

তিনি বলেন, ‘উন্নয়নের সঙ্গে অনেক অসঙ্গতি থাকে। আমরা সরকারি দল। তারপরও সরকারের যে অসঙ্গতিগুলো আছে, তা তুলে ধরতে হবে। সংসদ সদস্য হিসেবে আমাদের দায়িত্ব হলো জনগণের সমস্যা তুলে ধরা। কেন ঋণখেলাপি কলঙ্ক আমরা বয়ে বেড়াচ্ছি। এটা নিয়ে যেন কারও অভিযোগ আমাদের শুনতে না হয়।’

ধর্ষক ও নারী নির্যাতনের দ্রুত বিচারের দাবি তুলে সাবেক মন্ত্রী নাসিম বলেন, ‘নারী-শিশু নির্যাতন বন্ধে প্রধানমন্ত্রী অনেক কঠোর পদক্ষেপ নিয়েছেন। তারপরও নারী-শিশু নির্যাতন বেড়েই চলছে। এটা কোনোভাবেই ঠেকানো যাচ্ছে না। প্রলম্বিত-বিলম্বিত বিচার কোনোদিনই মানুষকে স্বস্তি দিতে পারে না। অন্য কোনোভাবে বিচারটি দ্রুত করা যায় কিনা সেটা দেখতে হবে। আইন সংশোধন করে সংক্ষিপ্ত বিচারের মাধ্যমে ধর্ষক-নির্যাতনকারীদের কঠোর শাস্তির ব্যবস্থার বিষয়টি বিবেচনা করতে হবে।’

ঢাকার নতুন মেয়রদের উদ্দেশ করে তিনি বলেন, ‘ঢাকা শহরকে পরিচ্ছন্ন শহর হিসেবে দেখতে চাই। মশা ও ডেঙ্গুমুক্ত শহর চাই। মেয়র সাহেবরা যা বলেছেন নতুন মেয়াদে তার প্রতিটি কথা পালন করতে হবে। নাহলে মানুষ আমাদের থেকে দূরে সরে যাবে।’

সংসদে বিএনপির সংসদ সদস্যদের বক্তব্যের জের ধরে তিনি বলেন, ‘এই সংসদে বিএনপির বন্ধুরা আছেন। তারা ভালো ভালো কথা বলেন। তাদের বক্তব্যে আমরা মাঝেমধ্যে বিস্মিত হই, প্রশ্ন জাগে তারা বিএনপি করেন নাকি অন্য দল করেন? এদের সঙ্গে বিএনপির আসল নেতৃত্বের কোনও সম্পর্ক আছে কিনা সন্দেহ হয়। এখানে তাদের বক্তব্য শুনে মনে হয় আওয়ামী লীগের প্রতিনিধি হয়ে কথা বলছেন। এখানকার বক্তব্য স্বস্তিদায়ক, আর বাইরে গেলে অন্য চেহারা। এরা আওয়ামী লীগের এজেন্ট হিসেবে কাজ করছে কিনা সেই সন্দেহ হয়।’

বিএনপিকে উদ্দেশ করে তিনি আরও বলেন, ‘ক্ষমতার লোভে জনগণের ওপর নির্যাতন চালিয়েছেন। বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়া এখন পাপের ফল ভোগ করছেন। ভুল করেছেন তা স্বীকার করুন। ব্যর্থ নেতৃত্বকে অস্বীকার করুন। আগামী ১০টি বছর চুপ করে থাকুন। নিশ্চিন্তে থাকুন, শান্তিতে থাকুন। আমাদের সহযোগিতা করুন। দেশ পরিচালনার জন্য শেখ হাসিনাকে সহযোগিতা করুন।’

ড. কামাল হোসেনের সমালোচনা করে তিনি বলেন, ‘সরকারকে লাথি মারবেন? এটা কোনও ভাষা হলো? তার নিজের পায়ের তো সমস্যা। নিজে তো উঠতে পারেন না। আমার চেয়েও তার পায়ের অবস্থা খারাপ। আগে পা ঠিক করেন, তারপর লাথি মারার ব্যবস্থা করিয়েন।’