‘প্রধানমন্ত্রী আ. লীগের দরজা খুলে দিলে বিএনপির ঘর শূন্য হয়ে যাবে’

নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, এখন বিএনপি আছে লাশের রাজনীতি নিয়ে। তারা বাংলাদেশের রাজনীতি নিয়ে নেই। তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী চান না যে দলের মধ্যে কোনও অনুপ্রবেশ ঘটুক। তিনি রাজনৈতিক চরিত্র হনন করতে চান না। প্রধানমন্ত্রী আওয়ামী লীগের দরজা খুলে দিলে বিএনপির ঘর শূন্য হয়ে যাবে।’

সোমবার (৩০ আগস্ট) জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৬তম শাহাদাতবার্ষিকী এবং জাতীয় শোক দিবসের আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন। রাজধানীর বিএমএ অডিটরিয়ামে বিআইডব্লিউটিসি ওয়ার্কার্স ইউনিয়নের আয়োজনে এই আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।

নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘মির্জা ফখরুলরা জানে না—তারা ডানে, বামে, পেছনে কাউকেই পাবেন না, যদি প্রধানমন্ত্রী ইশারা দেন।’

খালিদ মাহমুদ বলেন, ‘আদর্শহীন, নীতিহীন একটি রাজনৈতিক দল জিয়াউর রহমান গঠন করেছিলেন খুনিদের নিয়ে, অপরাধীদের নিয়ে। বাংলার মানুষ এখন বুঝতে পেরেছে, খুনি অপরাধীদের সঙ্গে আমরা নেই। আমরা সত্য এবং সুন্দরের সঙ্গে আছি। সত্য এবং সুন্দর হচ্ছে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা এবং বঙ্গবন্ধু।’

তিনি বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ড পৃথিবীর ইতিহাসের পৈশাচিক হত্যাকাণ্ড। পৃথিবীর অনেক রাজনৈতিক নেতা নিহত হলেও সপরিবারে এভাবে নারী, পুরুষ, অন্তঃসত্ত্বা নারী, শিশু এত মানুষ এভাবে হত্যা করা হয়নি কোথাও। এ জঘন্য হত্যাকাণ্ডের মাস্টারমাইন্ড ছিল জিয়াউর রহমান। একটি হত্যাকাণ্ড কীভাবে দেশকে অন্ধকারে ঠেলে দিয়েছিল, আমরা দিনের পর দিন, বছরের পর বছর দেখেছি। একটি হত্যাকাণ্ডকে জায়েজ করার জন্য রাষ্ট্রীয় যন্ত্র ব্যবহার করে জিয়াউর রহমান কীভাবে অপপ্রচার চালিয়েছে! কীভাবে কলুষিত করার চেষ্টা করা হয়েছে। কীভাবে নোংরা কল্পকাহিনী সাজিয়ে বঙ্গবন্ধু পরিবারকে খাটো করার চেষ্টা করা হয়েছে। শুধু একটি অপরাধকে, একটি হত্যাকাণ্ডকে জায়েজ করার জন্য জিয়াউর রহমান এই কল্পকাহিনী বানিয়েছিল।’

প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘তারই ধারাবাহিকতা এরশাদ ও খালেদা জিয়া একইভাবে পালন করেছেন। আজকের বাস্তবতায় বঙ্গবন্ধু শুধু বাংলাদেশের বন্ধু নয়, বঙ্গবন্ধু বিশ্বের বন্ধু।’

তিনি বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও বঙ্গবন্ধুকে লালন করি বলেই আজকে দেশরত্ন শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে। বঙ্গবন্ধুর ঘাতকরা বারবার দেশ পরিচালনার দায়িত্ব নিয়েছে বলেই সোনার বাংলাদেশ বিনির্মাণ হয়নি। বঙ্গবন্ধুর সাড়ে তিন বছরের সমালোচনা করা হয়। অথচ ১৩৯টি আইন অধ্যাদেশ দিয়ে কীভাবে বাংলাদেশ পরিচালিত হবে, প্রতিটি বিষয়ে ফাউন্ডেশন (ভিত্তি) বঙ্গবন্ধু দিয়ে গেছেন। এই কথাগুলো বলা হয় না।’

খালিদ মাহমুদ বলেন, ‘‘স্বাধীনতার মাত্র এক বছরের মাথায় যুদ্ধবিধ্বস্ত বাংলাদেশে কীভাবে গোলযোগ করা হয়েছে। ‘সর্বহারা’ নামে বিদেশি বেনিয়াদের স্বার্থসিদ্ধির জন্য অস্ত্র হাতে তুলে নেওয়া হয়েছে। সাড়ে তিন বছরের একটি নতুন দেশকে অরাজকতা তৈরি করে ব্যর্থ করে দেওয়ার চেষ্টা হয়েছে। তারপরও এই দেশটিকে দারিদ্র্যপীড়িত দেশ থেকে স্বল্পোন্নত দেশে নিয়ে গেছেন বঙ্গবন্ধু।’’

নৌ-পর্যটনে বিআইডব্লিউটিসি’র সম্পৃক্ততা থাকবে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘ইতোমধ্যে আমরা দুটি ক্রুজ ভ্যাসেলের চুক্তিপত্র করেছি। এ দুটি ভেসেলে সব আন্তর্জাতিক সুবিধা থাকবে। আগামী দুই-তিন বছরের মধ্যেই এ জাহাজ দুটি পেয়ে গেলে বিদেশি পর্যটকরাও এখানে আগ্রহ দেখাবে। নদীমাতৃক বাংলাদেশের কথা চিন্তা করেই বিআইডব্লিউটিসিকে এগিয়ে যেতে হবে।’

বিআইডব্লিউটিসি ওয়ার্কার্স  ইউনিয়ন (সিবিএ)-এর সভাপতি ও জাতীয় শ্রমিক লীগের সহ-সভাপতি মো. মহসিন ভূইয়ার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে সংগঠনের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতারা বক্তব্য রাখেন।