স্থায়ী জামিন পাননি খালেদা জিয়া

আদালতে খালেদা জিয়া (ছবি: নাসিরুল ইসলাম)

জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার স্থায়ী জামিনের আবেদন নাকচ করে দিয়েছেন আদালত। এই মামলায় খালেদা জিয়াকে এক সপ্তাহের জামিন মঞ্জুর করে আগামী ১৬ নভেম্বর আত্মপক্ষ সমর্থনে বক্তব্য দেওয়ার তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (৯ নভেম্বর) দুপুরে ঢাকার বকশীবাজারে অবস্থিত বিশেষ আদালতের বিচারক মো. আখতারুজ্জামান এ আদেশ দিয়েছেন। এর আগে গত ১৯ অক্টোবর জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট ও জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলায় খালেদা জিয়াকে জামিন দেন আদালত। এই দুই মামলায় গত ১২ অক্টোবর খালেদা জিয়ার জামিন বাতিল করে তার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছিল। প্রায় তিন মাস লন্ডনে অবস্থানের পর দেশে ফিরে ১৯ অক্টোবর আদালতে আত্মসমর্পণ করেন বিএনপি নেত্রী।

আজ বৃহস্পতিবার আত্মপক্ষ সমর্থন করে অসমাপ্ত বক্তব্য শুরু করার আগে খালেদা জিয়ার স্থায়ী জামিনের আবেদন জানান আইনজীবী ব্যারিস্টার জমিরউদ্দিন সরকার। এসময় ব্যারিস্টার মওদুদসহ খালেদা জিয়ার অন্যান্য আইনজীবীরা আদালতকে বলেন, উনি জামিনের শর্ত ভঙ্গ করেননি। জামিন দিলেও উনি আদালতের শর্ত ভঙ্গ করবেন না।

এদিকে জামিনের বিরোধিতা করে দুদকের আইনজীবী মোশাররফ হোসেন কাজল বলেন, ‘উনি ৩৩ কার্যদিবস নষ্ট করেছেন। আদালতে হাজির হননি। স্থায়ী জামিন থাকা অবস্থায় আদালতকে না জানিয়ে দেশের বাইরে গেছেন।’    

এরপর বিচারক মো. আখতারুজ্জামান খালেদা জিয়ার আত্মপক্ষ সমর্থনের অসমাপ্ত বক্তব্য শুরু করতে বলেন। বক্তব্য শেষ হলে জামিনের বিষয় নিয়ে আলোচনা করা হবে বলেও জানান তিনি।  

বেলা ১১টা ৫৮ মিনিটে বক্তব্য শুরু করে আজানের বিরতিসহ ৩৪ মিনিট বক্তব্য রাখেন খালেদা জিয়া। তিনি বক্তব্য শেষ করেন ১টা ৩২ মিনিটে। খালেদা জিয়ার বক্তব্য শেষ হওয়ার পর এক সপ্তাহের জামিন মঞ্জুর করে আগামী ১৬ নভেম্বর আত্মপক্ষ সমর্থনের জন্য তার বক্তব্যের দিন নির্ধারণ করেন আদালত।  

এরপর আদালতের বাইরে ব্যারিস্টার মওদুদ আহমেদ বলেন, ‘এক সপ্তাহের জামিনের কথা আমি কখনও শুনিনি।’

এর আগে আদালতে শুনানির সময় দুদকের আইনজীবী মোশাররফ হোসেন কাজল আদালতকে জানান, এ ধরনের মামলায় স্থায়ী জামিনের সুযোগ নেই।  

উল্লেখ্য, জিয়া আরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় বৃহস্পতিবার আত্মপক্ষ সমর্থন করে বক্তব্য রেখেছেন খালেদা জিয়া। অন্যদিকে জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় দুই জনকে জেরা করা হয়েছে।

২০০৮ সালের ৩ জুলাই রমনা থানায় জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট এবং ২০১০ সালের ৮ আগস্ট তেজগাঁও থানায় জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট-সংক্রান্ত দুর্নীতি মামলা দায়ের করে দুদক। ২০১৪ সালের ১৯ মার্চ ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৩ মামলা দুটির অভিযোগ গঠন করেন।

আদালত সূত্রে জানা গেছে, জিয়া অরফানেজ ট্রাস্টের ২ কোটি ১০ লাখ ৭১ হাজার ৬৪৩ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ এনে খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে ২০০৮ সালের ৩ জুলাই রমনা থানায় মামলা করে দুদক। এ মামলায় ২০০৯ সালের ৫ আগস্ট আদালতে অভিযোগপত্র দেওয়া হয়।

এছাড়া জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্টের নামে অবৈধভাবে তিন কোটি ১৫ লাখ ৪৩ হাজার টাকা লেনদেনের অভিযোগ এনে দুদক খালেদা জিয়াসহ চারজনের বিরুদ্ধে ২০১০ সালের ৮ আগস্ট তেজগাঁও থানায় মামলা করে। এ মামলায় ২০১২ সালের ১৬ জানুয়ারি অভিযোগপত্র দাখিল করে দুদক। আর ২০১৪ সালের ১৯ মার্চ ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৩ মামলা দুটির অভিযোগ গঠন করেন।

আরও পড়ুন- চতুর্থ দিনেও বক্তব্য শেষ করতে পারলেন না খালেদা