‘আশা করবো আদালত তার স্বাধীনতা রক্ষা করবেন’

মানববন্ধনে মির্জা ফখরুলবিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘আমরা আশা করবো, আদালত তার স্বাধীনতা রক্ষা করবেন। সত্যিকার অর্থে খালেদা জিয়ার এই মামলার যে রায় হওয়া উচিত সেই রায় দেবেন। তাকে আটকে রাখার কোনও বিধান নেই। আপনারা তাকে বেআইনিভাবে আটকে রেখেছেন।’

রবিবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে শ্রমিক দল আয়োজিত মানববন্ধনে তিনি এসব কথা বলেন।

২০০৮ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতা আসার পর থেকে মানুষের বিরুদ্ধে যে অত্যাচার চালিয়ে যাচ্ছেন তার বিরুদ্ধে খালেদা জিয়া সোচ্চার হয়েছেন বলেও উল্লেখ করেন বিএনপির মহাসচিব। তিনি বলেন, ‘তাই আজকে চক্রান্ত করে মিথ্যা মামলা দিয়ে কারাগারে আটকে রাখা হয়েছে খালেদা জিয়াকে। আমাদের সংবিধান অনুযায়ী জামিন তার প্রাপ্য হক। সেই অধিকার থেকে তাকে বঞ্চিত করা হচ্ছে। এই ধরনের মামলা সাবেক মন্ত্রী মোফাজ্জাল হোসেন মায়া, মহিউদ্দিন চৌধুরীসহ সবাই জামিনে আছেন।’

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমরা সুপ্রিম কোর্ট, হাইকোর্টে বিশ্বাস করি। বিশ্বাস করি বলেই বারবার যাই। কিন্তু দুর্ভাগ্য এই ফ্যাসিস সরকার আদালতেও নিয়ন্ত্রণ করে। খালেদা জিয়া সর্বোচ্চ আদালতেও ন্যায় বিচার পাননি। এতে করে বাংলাদেশের সব গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠান ভেঙে তছনছ হয়ে গেছে। কোথাও কোনও ন্যায় বিচার নেই।’

তিনি  বলেন, নতুন নির্বাচনই দেশের রাজনৈতিক সংকট সমাধানের একমাত্র পথ। আমাদেরকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। আমাদের অধিকার আমাদেরকে আদায় করে নিতে হবে। কেউ দিয়ে যাবে না।

আওয়ামী লীগ দেশ চালাতে পারে না বলে মন্তব্য করেছেন তিনি বলেন, ‘ওপরের দিক থেকে দেখলে মনে হবে আমরা খুব ভালো আছি। উন্নয়নের লরি বয়ে যাচ্ছে। কিন্তু দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির জন্য হয়রান হয়ে গেছে নিম্ন-মধ্যবিত্তরা।  চাল,লবণসহ এমন কোনও নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিস নেই  যার দাম বাড়ছে না। বিনিয়োগ কমে যাচ্ছে, গার্মেন্ট ফ্যাক্টরিগুলো বন্ধ হয়ে যাচ্ছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘আপনারা অনেক ব্যয়ে উৎসব করে মুবিজবর্ষ পালন করছেন, খুব ভালো কথা। কিন্তু গণতন্ত্রের মাতাকে কারাগারে আটকে রেখেছন। সামনে স্বাধীনতার ৫০ বছর পূর্তি পালন করবেন। আর ৫০ লাখের ওপরে আমাদের নেতাকর্মীদের নামে মামলা রয়েছে।’

নিখোঁজ থেকে ফিরে আসা র‍্যাব সদস্যের প্রসঙ্গ টেনে বিএনপির মহাসচিব বলেন, তিনি আগে সেনাবাহিনীর অফিসার ছিলেন। অন্যায়ভাবে তাকে সাজা দেওয়া হয়েছিল। পরবর্তীতে তাকে জোর করে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়। দেড় বছর পরে তিনি ফিরে এসেছেন, কিন্তু কথা বলছেন না। কিছুদিন আগে একজন ৭ মাস পরে ফিরে এসেছেন। তিনিও কথা বলছেন না। এখনও একজন জেনারেল ও মীর কাসেমের ছেলে নিখোঁজ আছেন। এই রকম অনেক মানুষ এখনও নিখোঁজ আছেন। আওয়ামী লীগ নিজেদের ক্ষমতাকে চিরস্থায়ী করতে মানুষ গুমের আশ্রয় নিয়েছে।

শ্রমিক দলের সভাপতি আনোয়ার হোসেইনের সভাপতিত্বে আরও বক্তব্য দেন বিএনপির যুগ্ম-মহাসচিব মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, শ্রমিক দলের কার্যকরী সভাপতি সালাহউদ্দিন সরকার, বিএনপির সহ-শ্রম বিষয়ক সম্পাদক হুমায়ুন কবীর প্রমুখ।