জোর জবরদস্তি করে কাউকে আইকন করা যায় না: রিজভী


বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব রুহল কবির রিজভী আহমেদ, ফাইল ছবিআওয়ামী সরকারের নীতির কারণেই শেখ মুজিবুর রহমানকে ‘ইনক্লুসিভ’ না করে তাকে জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন করা হচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী আহমেদ। তিনি বলেন, ‘আসলে হুকুমবাদ আর জোর জবরদস্তি করে কাউকে আইকন  করা যায় না।’
বুধবার (৪ মার্চ) রাজধানীর নয়া পল্টনে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
রিজভীর অভিযোগ,  ‘মুজিববর্ষ পালন নিয়ে চলছে তুঘলকি কাণ্ড। এটিকে তারা যেন নিশিরাতের নির্বাচনের সাফল্যের উৎসব হিসেবে মনে করছে। মুজিববর্ষ নিয়ে সারাদেশে চলছে চাঁদাবাজির মহোৎসব। ব্যবসায়ীদের দিন কাটছে চাঁদাবাজদের আতঙ্কে। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের যতই বলুন না কেন মুজিববর্ষের নামে চাঁদাবাজির দোকান দেওয়া যাবে না—কিন্তু এটি তার মুখের কথা। বাস্তবে এর কোনও প্রতিফলন নেই।’

তিনি বলেন, ‘ঢাকা সিটি করপোরেশন মুজিববর্ষ উপলক্ষে রাজধানীর বাড়ি রঙ ও সংস্কার করতে গণবিজ্ঞপ্তি দিয়েছে।  সাধারণ মানুষকে বাধ্য করা হচ্ছে এই বর্ষ পালনে।  প্রধানমন্ত্রী তার বাবার জন্মশতবর্ষ উদযাপনে কত হাজার কোটি টাকা খরচ করবেন তার কোনও হিসাব দিচ্ছেন না জনগণের কাছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘যেখানে দেশের তরুণ সমাজ বেকার, মানুষ অর্ধাহারে-অনাহারে দিনযাপন করছে সেখানে এভাবে অর্থ খরচের উৎসব নিয়ে জনগণ প্রশ্ন করছে। একদিকে হাজার হাজার কোটি টাকা লুটপাট, বিদেশে বেহিসাবি অর্থপাচার, ব্যাংকগুলো দেউলিয়া করে দেওয়া হয়েছে। অন্যদিকে ঋণের টাকায় চলছে সরকার। সেই সময়ে এই অর্থনাশের যজ্ঞ দেখে জনগণ শঙ্কিত ও হতাশ।’
বিএনপি নেতা বলেন, ‘দুই বছরের বেশি সময় ধরে কারারুদ্ধ খালেদা জিয়ার জামিনের প্রসঙ্গ আসলেই প্রধানমন্ত্রী থেকে শুরু করে মন্ত্রী-নেতারা বলেন, আদালতের ওপর নাকি তাদের হাত নেই। কী হাস্যকর কথা। তাহলে পিরোজপুরের আদালতে দিনেদুপুরে এটা কোনও হাতের কালো থাবা? বাস্তবে আইন এখন নিজস্ব গতিতে চলে না, চলে সরকারের গতিতে।’
মুজিববর্ষে নরেন্দ্র মোদির ঢাকা আগমন প্রসঙ্গে রিজভী বলেন, ‘রক্তগঙ্গা বয়ে যাওয়া ভারতের বর্তমান পরিস্থিতিতে বাংলাদেশের সরকার কেন দেশটির প্রধানমন্ত্রীকে বাংলাদেশে আনার জন্য এত উদগ্রীব? দেশের জনগণের মর্যাদাকে সমুন্নত রাখতে এই সরকারের উচিত ছিল ভারতে গণহত্যার প্রতিবাদ করা।’
তিনি বলেন, ‘জনরোষ টের পেয়ে নিশিরাতের সরকারের মন্ত্রীরা গৌরবময় মুক্তিযুদ্ধের দোহাই দিচ্ছেন। আমরা স্পষ্ট করেই বলতে চাই, মুক্তিযুদ্ধ আমাদের কারও কাছে মাথা বিকিয়ে দিতে নয়, আত্মমর্যাদাশীল হতে শিখিয়েছে। মাথা উঁচু করে চলতে শিখিয়েছে। নিঃসংকোচে দেশমাতৃকার মুক্তির জন্য জীবন উৎসর্গের প্রেরণা।’