‘দেশবাসীকে ঘরে থাকার ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার আহ্বান জানিয়েছেন খালেদা জিয়া’

খালেদা জিয়ার সঙ্গে সাক্ষাতের পর বিএনপি নেতাদের সংবাদ সম্মেলন করোনাভাইরাস প্রতিরোধে ‘দেশবাসীকে ঘরে থাকার এবং বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার বিধি মেনে চলার’ আহ্বান জানিয়েছেন খালেদা জিয়া। ঈদের দিন সোমবার (২৫ মে) রাতে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্যদের সঙ্গে সাক্ষাতের পরে দলীয় প্রধানের এ আহ্বান সাংবাদিকদের জানান বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, ‘আপনাদের মাধ্যমে উনি (খালেদা জিয়া) দেশবাসীকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। সব স্বাস্থ্যবিধি মেনে করোনা মোকাবিলা করার জন্য দলের নেতাকর্মীদের প্রতি ম্যাডাম আহবান জানিয়েছেন।’
ফখরুল বলেন, ‘দেশবাসীর প্রতিও তিনি আহবান জানিয়েছেন, বাড়িতে থাকুন, একটু কষ্ট করুন। বাড়িতে থেকেই এই সংক্রমণ প্রতিরোধ করতে হবে—একথা তিনি বারবার বলেছেন। তিনি আহ্বান জানিয়েছেন, জনগণ যেন ঘরে থাকে এবং এই মহামারিকে প্রতিরোধ করার জন্য বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার যেসব বিধান দিয়েছে তা যেন তারা মেনে চলে।’

বিএনপির সূত্র জানায়, রাত সাড়ে ৭টা থেকে ৯টা পর্যন্ত গুলশানের বাসভবন ‘ফিরোজা’ র দোতলায় এই সাক্ষাৎ হয়। সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন, মওদুদ আহমদ, জমিরউদ্দিন সরকার, মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, আবদুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, সেলিমা রহমান ও ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু বিএনপির চেয়ারপারসনের সঙ্গে ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করেন।

ফখরুল বলেন,  ‘তিনি (খালেদা জিয়া) সন্তুষ্টিও প্রকাশ করেছেন যে, এত প্রতিকূল অবস্থার মধ্যেও বিএনপির নেতাকর্মীরা দুর্গত মানুষের পাশে দাঁড়ানোর চেষ্টা করেছেন। তিনি বারবার বলেছেন, এখন সাহস না হারিয়ে সবার দাঁড়াতে হবে।’

গত ২৫ মার্চ সরকারের নির্বাহী আদেশে ৬ মাসের সাজা স্থগিত করে মুক্ত হওয়ার পর স্থায়ী কমিটির সদস্যদের দলীয় প্রধানের সঙ্গে এটি প্রথম সাক্ষাৎ। তবে, জামিনে মুক্তির পর সেদিনই স্থায়ী কমিটির কয়েকজন সদস্য তার বাসভবনে গিয়ে সাক্ষাৎ করেছিলেন।

মির্জা ফখরুল বলেন, এই চরম একটা সংকটের সময়ে যখন সামাজিক দূরত্বকে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে তার মধ্যেও উনি (খালেদা জিয়া) আমাদের সময় দিয়েছিলেন। আমরা পুরোপুরি নিরাপদ দূরত্ব বজায় রেখে, আমাদের নেত্রীকে নিরাপদ রাখার জন্য স্পেশাল পিপিই পরে, হাতে গ্লাভস নিয়ে তার সঙ্গে দেখা করেছি।

খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি আগেও বলেছি উনার কোনও ইমপ্রুভমেন্ট হয়নি। এর মধ্যে যেটুকু হয়েছে আগে থেকে মানসিক অবস্থাটা তার অনেক ভালো হয়েছে, শারীরিক অবস্থার খুব বেশি পরিবর্তন হয়নি। এর আগে গত ১১ মে খালেদা জিয়ার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
উল্লেখ্য, ঈদের নামাজের পরে সকাল ১১টায় স্থায়ী কমিটির সদস্যদের নিয়ে মির্জা ফখরুল শেরে বাংলা নগরে দলের প্রতিষ্ঠাতা প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের কবর জিয়ারত করেন। ওই সময় ফখরুল অভিযোগ করেন, যদিও মাত্র ৬ মাসের জন্য তাকে সাজা স্থগিত করে মুক্তি দেওয়া হয়েছে। আমরা মনে করি যে, এটা তার প্রতি সম্পূর্ণ অবিচার করা হয়েছে, ন্যায়বিচার করা হয়নি। তাকে সম্পূর্ণভাবে মুক্তি দেওয়া উচিত ছিল এবং তার বিচারেও তার যে জামিন পাওয়া উচিত ছিল, সেই জামিনও বর্তমান ব্যবস্থায় তিনি পাননি।