ফোন করে নেতাদের খোঁজ নিচ্ছেন খালেদা জিয়া

করোনাভাইরাসে আক্রান্ত নেতাদের শারীরিক অবস্থার খোঁজখবর রাখছেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। নিজেই ফোন করে অসুস্থ নেতাদের চিকিৎসার আপডেট নিচ্ছেন। শর্তসাপেক্ষে মুক্তিতে থাকায় গুলশানের ভাড়া বাড়ি ফিরোজা থেকেই যোগাযোগ রাখছেন খালেদা জিয়া। দলের একাধিক সিনিয়র নেতা বাংলা ট্রিবিউনকে এ তথ্য জানিয়েছেন। 

বিএনপির চেয়ারপারসনের মিডিয়া উইং সদস্য শায়রুল কবির খান বাংলা ট্রিবিউনকে জানান, সিনিয়র নেতাদের মধ্যে কোভিডে আক্রান্ত রয়েছেন বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, সেলিমা রহমান, ভাইস চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট আহমেদ আজম খান, ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য গাজী মাজহারুল আনোয়ার, খন্দকার আব্দুল মুক্তাদির, ডা. ফরহাদ হালিম ডোনার, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী, ড্যাবের সাবেক সভাপতি ডা. এ কে এম আজিজুল হক, স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন মিডিয়া কমিটির সদস্য সাংবাদিক আতিকুর রহমান রুমন, অ্যাডভোকেট ফারজানা শারমিন পুতুল প্রমুখ।

দলের সিনিয়র একাধিক নেতা জানান, অসুস্থ নেতাদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখা হচ্ছে বিএনপির শীর্ষ পর্যায় থেকে। খালেদা জিয়া ইতোমধ্যে কয়েকজন সিনিয়র নেতাকে নিজেই ফোন করে খোঁজ নিয়েছেন। এ ছাড়া, দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান, মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরও নিয়মিত আপডেট রাখছেন।

এ বিষয়ে খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত চিকিৎসক টিমের অন্যতম সদস্য ভাইস চেয়ারম্যান ডা. অধ্যাপক এ জেড এম জাহিদ হোসেন বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘করোনা আক্রান্ত হয়েছি ১২ দিন হলো। আমার পরিবারের আরও দুই সদস্য, সহকারী, গাড়িচালকও আক্রান্ত। আমার শারীরিক অবস্থা ভালো। ইতোমধ্যে ম্যাডাম খোঁজ নিতে ফোন করেছেন। তিনি সিনিয়র নেতাদেরও খোঁজ নিচ্ছেন।’

খালেদা জিয়ার ঘনিষ্ঠ এক নেতা জানান, বিএনপি চেয়ারপারসন বাসায় সুস্থ আছেন। নিয়মিত নাতি-নাতনিদের সঙ্গে ভিডিও কলে কথা বলছেন।

শায়রুল কবির খান জানান, অসুস্থ নেতাদের মধ্যে অনেকের শারীরিক অবস্থা এখন উন্নতির দিকে। খন্দকার মোশাররফ হোসেনের উন্নতি হয়েছে। রুহুল কবির রিজভী আহমেদের অবস্থাও উন্নতির দিকে। তার জ্বর নেই। কাশি কমলেও এখনও আইসিইউতেই আছেন। কারণ অক্সিজেন লাগছে।

বিএনপির মহাসচিব জানিয়েছেন, সারা দেশে বিএনপির পাঁচ হাজার নেতাকর্মী করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। ইতোমধ্যে সারা দেশে করোনায় দলের চার শতাধিক নেতাকর্মী মারা গেছেন বলেও জানান তিনি।

 

‘কোভিড নয়, নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা করাচ্ছেন খালেদা জিয়া’

শনিবার (১০ এপ্রিল) সন্ধ্যায় রাজনৈতিক মহলে খালেদা জিয়ার কোভিড টেস্ট করানো হয়েছে, এমন তথ্য প্রচার হলে বিএনপির চেয়ারপারসনের মিডিয়া উইং সদস্য শায়রুল কবির খান তা নাকচ করে বলেন, ‘কোভিড নয়, এটি ছিল নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা।’

পরে বিষয়টি সম্পর্কে খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত চিকিৎসক ডা. অধ্যাপক এ জেড এম জাহিদ হোসেন বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘কোভিড সংক্রমণের পর থেকে ম্যাডামের আশেপাশে যারা থাকছেন ও তার সহকারীদের নিয়মিত কোভিড টেস্ট করানো হচ্ছে। এখনও ম্যাডামের টেস্ট করানোর কোনও কারণ দেখিনি।’

প্রসঙ্গত, ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতির মামলায় পাঁচ বছরের সাজায় কারাদণ্ড হয় খালেদা জিয়ার। ২০২০ সালের ২৫ মার্চ নির্বাহী আদেশে তার মুক্তি হয় ছয় মাসের। পরে ওই বছরের সেপ্টেম্বরে মুক্তির সময় আরও ছয় মাস বাড়ায় সরকার। এ বছরের মার্চে তৃতীয়বারের মতো ছয় মাসের মেয়াদ বাড়ানো হয়।

আরও পড়ুন:

করোনার ভ্যাকসিন নিতে ইতিবাচক খালেদা জিয়া

খালেদা জিয়ার সঙ্গে বিএনপির তিন নেতার সাক্ষাৎ