আসলাম ও নিপুণের মুক্তি দাবি

বিএনপির ওপর জুলুম করা সরকারের দৈনন্দিন কর্মসূচি: মির্জা ফখরুল

বিএনপিসহ বিরোধী নেতাকর্মীদের ওপর জুলুম চালানোকে দৈনন্দিন কর্মসূচিতে পরিণত করেছে সরকার বলে মন্তব্য করেছেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, ‘গত ২৬ মার্চ ২০২১ থেকে এ পর্যন্ত বিএনপি এবং অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের প্রায় ২০০ নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। করোনাভাইরাসের এই ক্রান্তিকালে দেশের মানুষের ভালো-মন্দ তোয়াক্কা না করে কেবল নিজেদের ক্ষমতা পাকাপোক্ত করতেই সরকার বিএনপিসহ বিরোধী নেতাকর্মীদের ওপর জুলুম চালানোকে দৈনন্দিন কর্মসূচিতে পরিণত করেছে।’

শুক্রবার (১১ জুন) রাজধানীর গুলশানে চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত এক সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি মহাসচিব এসব কথা বলেন। বিএনপি নেতা আসলাম চৌধুরী ও নিপুণ রায় চৌধুরীকে মুক্তি দেওয়ার দাবিতে এ সংবাদ সম্মেলন করা হয়। এতে নিপুণ রায়ের বাবা অ্যাডভোকেট নিতাই রায় চৌধুরী, শ্বশুর গয়েশ্বর চন্দ্র রায়সহ অনেকে উপস্থিত ছিলেন।

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য, নারী ও শিশু অধিকার ফোরামের সদস্য সচিব নিপুণ রায় চৌধুরীকে গত ২৮ মার্চ মিথ্যা ও বানোয়াট অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়। গত ১৩ এপ্রিল পুরনো একটি মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে তার কারাবাস অন্যায়ভাবে দীর্ঘায়িত করা হয়েছে। আবারও তাকে নতুন মিথ্যা মামলা দিয়ে রিমান্ডে নিয়ে নির্যাতন করা হচ্ছে, যা মানবাধিকার লঙ্ঘনের শামিল।’

বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব লায়ন আসলাম চৌধুরী প্রসঙ্গে ফখরুল বলেন, ‘তাকে ৫ বছর যাবৎ মিথ্যা ও রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত মামলায় গ্রেফতার করে কারা অন্তরীণ রাখা হয়েছে। যখনই তিনি আদালত থেকে জামিন লাভ করেন তখনই নতুন নতুন পুরনো বানোয়াট মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে কারাবাস দীর্ঘায়িত করা হচ্ছে।’

ফখরুল দাবি করেন, চট্টগ্রাম, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, জয়পুরহাট, কিশোরগঞ্জ, ময়মনসিংহ, নওগাঁসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে বিএনপি এবং অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের প্রতিদিনই গ্রেফতার, কারা অন্তরীণ করা হচ্ছে এবং এই প্রক্রিয়া চলমান রাখা হয়েছে।

বিএনপি মহাসচিবের অভিযোগ, লকডাউনের এই সুযোগে সরকার যেন ক্র্যাকডাউন চালাচ্ছে।

তিনি বলেন, ‘ভয়াবহ লকডাউনের মধ্যেও গ্রাম-শহর, পাড়া-মহল্লায় বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীদের গ্রেফতার করতে অভিযান চালাচ্ছে সরকার। সরকারের ভয়াবহ দুঃশাসনের বিরুদ্ধে কেউ যাতে মুখ খুলতে না পারে সেজন্যই রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীসহ সাধারণ মানুষের ওপর নির্যাতন চালানোকে লক্ষ্য হিসেবে ধরে নিয়েছে সরকার।’

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘হেফাজতে ইসলাম বা তাদের কোনও কর্মসূচির সঙ্গে বিএনপি এবং অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের কোনও সম্পর্ক না থাকলেও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত হেফাজত সংশ্লিষ্ট মামলাতেও বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীদের নাম জড়িয়ে তাদের গ্রেফতার ও হয়রানি করা হচ্ছে।’

বিএনপি মহাসচিব অবিলম্বে নিপুণ রায় চৌধুরী, আসলাম চৌধুরীসহ দেশব্যাপী গ্রেফতারকৃত বিএনপি এবং অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের মুক্তি ও মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের আহ্বান জানান।