ক্ষমতা হাতছাড়া হওয়ার ভয়েই গ্রেফতার অভিযান: রিজভী

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, সেপ্টেম্বর থেকে বিএনপি নেতাকর্মীদের নামে মিথ্যা মামলা দিয়ে গ্রেফতার অভিযান চালানো হচ্ছে।  তিনি বলেন, ‘তাদের (আওয়ামী লীগ) প্রহসনের মাত্রা এতটাই বেড়ে গেলো যে, লাশের বিরুদ্ধে মামলা দেওয়া শুরু করলো। বিএনপির যে ছেলেটা দু’বছর আগে মারা গেছে তার নামেও মামলা দেওয়া শুরু করলো।’ তাদের এত ভয়, এত উৎকণ্ঠা যে, বিএনপির যে লোকটি মারা গেছে সেও যদি জীবন্ত হয়ে ওঠে, তাহলে আওয়ামী লীগের ভোট যদি হাতছাড়া হয়ে যায়!’

মঙ্গলবার (১৪ সেপ্টেম্বর) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি-ডিআরইউতে ‘পাওয়ার অব ইউথ’ আয়োজিত ‘খালেদা জিয়ার ১৪তম কারামুক্তি দিবস’ উপলক্ষে  আলোচনা সভা  ও দোয়া মাহফিলে তিনি এসব কথা বলেন।

রিজভী বলেন, ‘মন্ত্রিপরিষদ প্রধানমন্ত্রীর কাছে নির্দেশনা চান নির্বাচন কমিশন গঠনের জন্য। অথচ নির্বাচন কমিশন গঠনে অথরিটি হলো রাষ্ট্রপতির ওপরে সংবিধান অনুযায়ী। কিন্তু প্রধানমন্ত্রীর প্রথম চয়েজ তো নুরুল হুদা। যে ব্যক্তিটি বাংলাদেশের ইতিহাসের সবচাইতে অপরিচ্ছন্ন নির্বাচন করেছে, সে হচ্ছে প্রধানমন্ত্রীর অত্যন্ত প্রিয়জন।’

রুহুল কবির রিজভী বলেন, বিভিন্ন রকমের জালিয়াতির অভিযোগ রয়েছে বর্তমান নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে। উনিতো (সিইসি) প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা অনুযায়ী যে যে প্রার্থীকে ঘোষণা করতে বলা হয়, সেসব প্রার্থীকে ঘোষণা করেন। নির্বাচন কমিশনের মেয়াদ শেষ হওয়ার পর যদি নতুন নির্বাচন কমিশনার ঘোষণার নির্দেশ দেওয়া হয়, আর প্রধানমন্ত্রী যদি এই নুরুল হুদাকে পছন্দ করেন, তাহলে নির্বাচন কমিশনে যে ধ্বংসস্তূপ গড়ে উঠেছে, তা আরও ধ্বংসস্তূপে পরিণত হবে।’ 

‘করোনা নিয়ে কে কী সমালোচনা করলো, আমি তার পরোয়া করি না’, স্বাস্থ্যমন্ত্রীর এই বক্তব্য উল্লেখ্য করে বিএনপির এই সিনিয়র নেতা বলেন, ‘স্বাস্থ্যমন্ত্রী পরোয়া করবে কেন তার তো ভোটের দরকার হয় না, তার তো নির্বাচনের দরকার হয় না। তিনি কীভাবে মন্ত্রী হয়েছেন তা জনগণ জানে। তাদের তো শুধু প্রধানমন্ত্রী ভালো থাকলেই সবকিছু ঠিক থাকবে। স্বাস্থ্যমন্ত্রী থাকা অবস্থায় ২৭ হাজার লোক মারা গেছে। করোনায় মারা যাওয়া এই ২৭ হাজার লোক স্বাস্থমন্ত্রীর উপহার।’

স্বাস্থ্যমন্ত্রীকে  উদ্দেশ করে রিজভী বলেন, ‘আপনার মাঝে যদি কর্তব্যবোধ ও দায়িত্বশীলতা থাকতো, তাহলে আপনি এই কথাগুলো বলতেন না। স্বাস্থ্যমন্ত্রীর আমলে  শুধু জাল-জালিয়াতি আর চুরি হয়েছে।  উনার সব ক্ষমতা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাতে। জনগণ আক্রান্ত হয়েছে তাতে তার কিছু আসে যায় না।’

প্রধানমন্ত্রীকে উদ্দেশ করে সাবেক এই ছাত্রনেতা বলেন,  ‘বাংলাদেশকে ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করেছেন আপনি। আপনি ফ্লাইওভার দেখান, ব্রিজ দেখান— এগুলোতো বিভিন্ন স্বৈরাচার, ফ্যাসিস্ট সরকার দেখায়, তাতে কি জনগণ উপকৃত হয়?  ফ্যাসিস্ট রাষ্ট্রের সরকারেরা ফ্লাইওভার করে, দেশের উন্নয়ন করে, কিন্তু তারা ধ্বংস করে দেয় স্বাস্থ্য ব্যবস্থা ও  শিক্ষা। এগুলোর উন্নয়ন কখনও তারা করে না।’