আওয়ামী লীগ সরকার জনগণকে শত্রুপক্ষ মনে করে: মির্জা ফখরুল

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘গণবিরোধী আওয়ামী সরকার জনগণকেই শত্রুপক্ষ বলে মনে করে। এ কারণে জনগণের বিরুদ্ধে তাদের প্রতিহিংসা হিংস্রতায় রূপ ধারণ করে। ভারতে জ্বালানি তেলের দাম কমানো হয়েছে অথচ বাংলাদেশে দ্বিগুণ করা হয়েছে, যাতে ক্ষমতাসীনরা জনগণের টাকা লুটপাট করে আগের মতোই বিদেশে পাচার করতে পারে।’

শুক্রবার (৫ নভেম্বর) সন্ধ্যায় দলের কেন্দ্রীয় দফতর থেকে পাঠানো এক বিবৃতিতে বিএনপির মহাসচিব এসব কথা বলেন। জ্বালানির মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদ জানিয়ে এ বিবৃতি দেওয়া হয়।

ফখরুল বলেন, ‘এখন ভর্তুকি কমাতে জ্বালানির দাম বৃদ্ধি করা হয়েছে, এতে জনগণের পকেট কাটা থামবে না বরং আরও অত্যুগ্র মাত্রায় বৃদ্ধি পাবে।’

বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়, বর্তমান স্বৈরাচারী সরকার ক্ষমতাসীন হওয়ার পর থেকে জনস্বার্থকে তাচ্ছিল্য করে অত্যাবশ্যকীয় দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধিসহ দফায় দফায় বিদ্যুৎ, গ্যাস ও জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধি করে আসছে। গত পরশুদিন রাতে দেশে কেরোসিন ও ডিজেলের দাম শতকরা ২৩ ভাগ বৃদ্ধি করে ৬৫ টাকা থেকে ৮০ টাকা পুনঃনির্ধারণ করা হয়েছে। এর একদিন যেতে না যেতেই গতকাল বৃহস্পতিবার এলপি গ্যাসের দাম ৪.২৯ শতাংশ বৃদ্ধি করে ১২ কেজির মূল ১২৫৯ টাকা থেকে ১৩১৩ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। এলপি গ্যাসের মূল্য গত ৪ মাসে ৪৭.৩৬ শতাংশ বাড়ানো হলো। গত জুলাই মাসে এর মূল্য ছিল ৮৯১ টাকা। এই মূল্য বৃদ্ধি দেশের অর্থনীতিতে ‘চেইন রিঅ্যাকশন’ সৃষ্টি করবে।

বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘ডিজেল, কেরোসিন ও এলপি গ্যাসের মূল্য বাড়ায় জনজীবনে মূল্যস্ফীতির চাপ বৃদ্ধির পাশাপাশি সেচ, পরিবহনসহ সামগ্রিক ব্যয় অসহনীয়ভাবে বেড়ে যাবে। জনজীবনে দুর্গতির শেষ থাকবে না। জিনিসপত্রের দাম বৃদ্ধির পাশাপাশি অর্থনীতিতে নেতিবাচক প্রভাব পড়বে এবং মধ্যম ও নিম্ন আয়ের মানুষ ভয়ানক দুর্ভোগের মধ্যে পড়বে।’

এই দাম বৃদ্ধির দুর্বিষহ প্রভাব অর্থনীতির সব খাতে পড়বে উল্লেখ করে ফখরুল জানান, ‘ভোটারবিহীন সরকারের জনগণের কাছে জবাবদিহি করতে হয় না বলেই জনমতকে উপেক্ষা করে ডিজেল, কেরোসিন ও এলপি গ্যাসের মূল্য অস্বাভাবিক হারে বৃদ্ধি করা হয়েছে। এমনিতেই বর্তমানে চাল, ডাল, আটা, চিনি, ভোজ্য তেল ও রান্নার গ্যাসের দাম দ্বিগুণ বাড়ানোয় স্বল্প আয়ের মানুষের জীবন এখন ত্রাহি ত্রাহি অবস্থা। তারা সংসার চালাতে হিমশিম খাচ্ছেন। জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধিতে কৃষি ও শিল্পে নেতিবাচক প্রভাব পড়বে এবং নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসের দাম লাগামহীনভাবে বাড়বে।’

বিবৃতিতে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল বলেন, আওয়ামী সরকার ঐতিহ্যগতভাবে হিংসা ও কলহ চর্চা করে। এরা আইনের শাসনকে হত্যা করেছে। মানুষের ভোটাধিকার কেড়ে নিয়ে এরা অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের গ্যারান্টি তথা নির্দলীয় ও নিরপেক্ষ সরকারব্যবস্থা বাতিল করেছে। সেই কারণেই গণবিরোধী সিদ্ধান্ত নিতে তারা দ্বিধা করে না।

কেরোসিন, ডিজেলসহ জ্বালানি তেল ও এলপি গ্যাসের দাম অস্বাভাবিক হারে বাড়ানোর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে অবিলম্বে এগুলোর দাম বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের জোর দাবি জানান মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।