সমাবেশ হবেই, কোনও দ্বিধা নেই: মির্জা ফখরুল

পুলিশের অনুমিত পাওয়া নিয়ে টানাপোড়েনের মধ্যেই ১০ ডিসেম্বর ঢাকায় সমাবেশ ‘হবেই’ উল্লেখ করেছেন  মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি এই ব্যাপারে দ্বিধা-দ্বন্দ্বে না থাকার জন্য দলের নেতা-কর্মীদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘১০ ডিসেম্বর নিয়ে কোনও দ্বিধা রাখবেন না মনে। ১০ ডিসেম্বর অবশ্যই ঢাকায় সমাবেশ হবে।’

মঙ্গলবার (৬ ডিসেম্বর) গুলশানের একটি হোটেলে আয়োজিত এক গোলটেবিল আলোচনায় বিএনপি মহাসচিব এই আহ্বান জানান। বিএনপির উদ্যোগে গুলশানে হোটেল লেক শোরে ‘ভায়োলেন্স অ্যান্ড পলিটিকস অব ব্লেমিং’ শীর্ষক এই গোলটেবিল আলোচনা হয়। এতে কি-নোট পাঠ করেন ডা. সাখাওয়াত হোসেন সায়ন্থ।

অনুষ্ঠানে বর্তমান সরকারের আমলে সন্ত্রাসের বিভিন্ন ঘটনার ওপর একটি তথ্য চিত্র প্রদর্শন করা হয়। এতে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, অস্ট্রেলিয়া, রাশিয়া, ইরান এবং ইউরোপীয় ইউনিয়ন, জাতিসংঘের কূটনীতিকরা উপস্থিত ছিলেন। তবে তারা কেউ বক্তব্য দেননি।

বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘এই সমাবেশ থেকে নতুন স্বপ্ন দেখবে মানুষ, এই সমাবেশ থেকে মানুষ নতুন কর্মসূচি নিয়ে মাঠে আরও তীব্রভাবে নামবে এবং আমাদের ওপর দানব যারা চেপে বসে আছে, তাদের পরাজিত করে জনগণের সরকার যেন প্রতিষ্ঠিত হয়, সেই কাজ তারা করবে।’

‘আমরা খুব পরিষ্কার করে বলেছি যে আমরা এই সরকারের পতন চাই, আমরা সংসদ বিলুপ্ত চাই, আমরা তত্ত্বাবধায়ক সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর চাই, আমরা নতুন একটি নির্বাচন কমিশনের মধ্য দিয়ে একটা অবাধ, সুষ্ঠু, গ্রহণযোগ্য নির্বাচন চাই, যা জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে সবাই গ্রহণ করবে, সেই নির্বাচন আমরা চাই,’ বলেন মির্জা ফখরুল।

সমাবেশ বন্ধ করতে বাস সংগ্রহ করা হয়েছে মন্তব্য করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘জনগণ যখন স্বতঃস্ফূর্তভাবে তাদের দাবি নিয়ে মাঠে নামছে, এটা বন্ধ করার জন্য সরকার আবার হীন চক্রান্ত শুরু করেছে। ইতোমধ্যে পত্রপত্রিকায় দেখেছি, বিভিন্নভাবে খবরও পেয়েছি যে প্রায় ২০০ বাস নাকি রেডি করা হয়েছে পুড়িয়ে দেওয়ার জন্য। এটা অসমর্থিত কিছু সূত্র থেকে পাওয়া খবর।’

তিনি বলেন, ‘আমরা শুনেছি ইতোমধ্যে কিছু কিছু লোককে, ইতিমধ্যে কিছু আলামতও আমরা পেয়েছি যে ছাত্রলীগ, যুবলীগকে প্রতিটি ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে, থানায় থানায় নামিয়ে দিয়ে সেখানে প্রতিরোধ করবে। আমরা তখন থেকে এ ব্যাপারে সচেতন হয়েছি, সজাগ হয়েছি। যে কারণে আজ এই সেমিনারটি অনুষ্ঠান করা হয়েছে। আমাদের সুধী সমাজকে, সুশীল সমাজকে, রাজনৈতিক দলগুলো এবং কূটনৈতিক মিশনের সদস্যদের জানাতে চাই যে সরকার আবার সেই পুরোনো খেলা, সেই উদোর পিণ্ডি বুধোর ঘাড়ে চাপানোর জন্য আবার কাজ শুরু করেছে।’

বিএনপি মহাসচিবের সভাপতিত্বে ও দলের সাংগঠনিক সম্পাদক শামা ওবায়েদ এবং আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিষয়ক কমিটির সদস্য ফারজানা শারমিন পুতুলের যৌথ সঞ্চালনায় এই গোলটেবিল আলোচনায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন, আবদুল মঈন খান, ভাইস চেয়ারম্যান হাফিজ উদ্দিন আহমেদ, শাহজাহান ওমর, জয়নাল আবেদীন, জাতীয় পার্টির (কাজী জাফর) মোস্তফা জামাল হায়দার, গণফোরামের অধ্যাপক আবু সাইয়িদ, অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী, নাগরিক ঐক্যের মাহমুদুর রহমান মান্না, গণসংহতি আন্দোলনের জোনায়েদ সাকি, কল্যাণ পার্টির সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম, শিক্ষাবিদ অধ্যাপক মাহবুব উল্লাহ, অধ্যাপক দিলারা চৌধুরী, অধ্যাপক আফম ইউসুফ হায়দার, অধ্যাপক তাজমেরী এস ইসলাম এবং সাবেক রাষ্ট্রদূত সিরাজুল ইসলাম বক্তব্য দেন।

গোলটেবিলের এই আলোচনায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, সেলিমা রহমান, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, ভাইস চেয়ারম্যান হাফিজ উদ্দিন আহমেদ, আবদুল্লাহ আল নোমান, আলতাফ হোসেন চৌধুরী, বরকত উল্লাহ বুলু, আবদুল আউয়াল মিন্টু, মীর নাসির, নিতাই রায় চৌধুরী, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য মনিরুল হক চৌধুরী, আবদুস সালাম, জয়নাল আবেদীন ফারুক, আবদুল কাইয়ুম, ইসমাইল জবিউল্লাহ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।